১৬ বছরের নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার বিচার করতে হবে: এবি পার্টি
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ১৬ বছরে হাজার হাজার গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, নির্বিচার জুলুম-নির্যাতন ঘটেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করা হয়েছে। নির্লজ্জ দলীয়করণ করে প্রশাসনকে শোষণ ও দুর্নীতির আখড়া বানানো হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে তাদের পেশা ও ব্যবসা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয়-৭১ চত্বরে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও নির্যাতিত ছাত্র-জনতার স্মরণে গণজমায়েতে এসব কথা বলেন তিনি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জনগণ ভোট দিতে পারেনি বছরের পর বছর। নিজ গৃহ থেকে উচ্ছেদ হয়ে দেশান্তরী হতে হয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষকে। অন্যায়ভাবে নিজের ভিটা-বাড়ি হারিয়েছেন অগণিত মানুষ। এর প্রতিটি ঘটনার বিচার হতে হবে। জনগণ যেন বুঝতে পারে, অন্যায়-অত্যাচার করে কেউ শেষ পর্যন্ত পার পায় না, একদিন জনতার হাতে পাকড়াও হতে হয়।
এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে গণজমায়েতে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, বিএম নাজমুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন ও সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলিসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
মেজর মিনার বলেন, আমরা বছরের পর পর আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়েছি। দেশের ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। বিজয়ের আনন্দে শহিদ ও আহতদের ভুলে গেলে চলবে না। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে যারা জীবন দিয়েছে, তাদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালাতে হবে।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, আইন উপদেষ্টা মানবতাবিরোধী ট্রাইবুনালে হাসিনার বিচারের কথা বলেছেন। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই, এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আগে সেই বিতর্কের অবসান করুন। আইন সংশোধন করুন। অভিজ্ঞ প্রসিকিউশন টিম নিয়োগ দিন। মানসম্পন্ন বিচারক ও তদন্ত সংস্থা নিয়োগ দিয়ে বিচারের কার্যক্রম শুরু করুন। হাসিনার নিয়োগকৃত টিমের মাধ্যমে তার কোনো বিচার হতে পারে না।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, রাজা লক্ষ্মণ সেন রাজদরবার ফেলে পেছন দরজা দিয়ে পালিয়েছিল। নতুন করে সেই ইতিহাসই দেখালো শেখ হাসিনা। এখন তার সকল সহোযোগীই পলাতক। আজ সারা দেশের ছাত্র-জনতা জেগে রয়েছে। আমরা যে ইনসাফের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছি, সেই ইনসাফের শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের ন্যায্য বিচারের আওতায় আনা হবে। আমরা হাসিনার মতো অন্যায্য কোনো বিচার করব না। প্রত্যেককেই তার সঠিক প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
গণজমায়েতে উপস্থিত ছিলেন—এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, ব্যারিস্টার আব্বাস খান নোমান, যুব পার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, সহকারী সদস্য সচিব ড. শাহেদুল ইসলাম, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, আহমেদ বারকাজ নাসির, উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক, যুব পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব শাহিনুর আক্তার শীলা ও পল্টন থানার আহ্বায়ক মুন্সি আব্দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।
নঈমুদ্দীন/রফিক