ঢাকা     বুধবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩২

‘সরকারের অবৈধ কাজের কুশীলবদের শা‌স্তি দি‌তে হ‌বে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২০ আগস্ট ২০২৪  
‘সরকারের অবৈধ কাজের কুশীলবদের শা‌স্তি দি‌তে হ‌বে’

‌সরকারের অবৈধ কাজের কুশীলবসহ জ‌ড়িত‌দের আইনের আওতায় এনে শা‌স্তির দা‌বি জা‌নিয়ে‌ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) পুরানা পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তি‌নি এ দা‌বি জানান।

‘স্বৈরাচারী সরকারের’ পতন-পরবর্তী দেশের চলমান পরিস্থিতি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম নি‌য়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আ‌য়োজন ক‌রে ইসলামী আন্দোলন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ব‌লেন, পতিত ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ৩টি ভুয়া জাতীয় নির্বাচন করেছে। এসব একতরফা, ভুয়া, পাতানো ও ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করেছে। যারা তাদের এসব অবৈধ ও প্রহসনের নির্বাচনে সহযোগিতা করে আ.লীগকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছে তারাও সমান অপরাধী। তিনটি অবৈধ ও প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনাকারী ৩টি নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা তাদের অবৈধ কাজের কুশীলব ছিল, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ অবৈধ নির্বাচনের সাহস না করে। পাশাপাশি আমরা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিদায়পূর্বক বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চাই।

অভ্যুত্থানে যেসব ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রিয়জন হারিয়েছেন তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতা ও সহমর্মিতা জানিয়ে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ব‌লেন, জাতির এই আন্দোলনে যারা যেভাবেই অংশ নিয়েছেন, তাদের অবদানের কথা কোনদিন ভুলবে না। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ধারাবাহিক ভূমিকা পালনকারী এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি এবং অর্থনীতি পুনর্গঠনে আমরা এই সরকারকে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করে যেতে চাই। এক্ষেত্রে সরকারকে দেশের শান্তিকামী জনগণ এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, সহকারী মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক মুফতি এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ইয়াকুব আলী, অ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, জিএম রহুল আমিন, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, হাফেজ মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান।

মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস গত ১৮ আগস্ট বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বলেছেন, পাঁচটি খাতে সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবেন। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম এই পাঁচটি ক্ষেত্রে আমূল এবং ব্যাপক সংস্কারের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরাও মনে করি, এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। কারণ, বিগত সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। এই সরকার এসব প্রতিষ্ঠানগুলো কতদিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করবে, তা নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন ব‌লেন তি‌নি।

ইসলামী আন্দোলনের আমীর ব‌লেন, সরকার তাদের সংস্কার কার্যক্রমের ধরণ ও প্রক্রিয়া কী হবে এবং কতদিনের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে, তা অতিদ্রুত প্রকাশ করবে এবং জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।

নঈমুদ্দীন/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়