ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

লটকন বদলে দিয়েছে হাজারো চাষির ভাগ্য

গাজী হানিফ মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৪ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লটকন বদলে দিয়েছে হাজারো চাষির ভাগ্য

নরসিংদী প্রতিনিধি : একসময়ে জংলি ফল হিসেবে পরিচিতি লটকন এখন নরসিংদী জেলার হাজারো কৃষককে সোনালি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে ।

ফুল হয়না পাপড়িও ঝরেনা। সরাসরি গাছের কান্ড থেকে বের হয় লটকন। যার স্থানীয় নাম বুগি।

টক আর মিষ্টিতে ভরপুর নরসিংদীতে উৎপাদিত এ ফলটি দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন রফতানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। চাষিদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে এই ফল। আর অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে  লটকনের আবাদ।

প্রতি বছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। বর্তমানে নরসিংদীর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের লালমাটি এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মণ লটকন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

নরসিংদী জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, নরসিংদীর শিবপুর, বেলাবো ও রায়পুরা উপজেলার লাল রংয়ের মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান, তাই এখানে লটকনের ভাল ফলন হয়। আবার চাষিরাও লটকন আবাদে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। একারণে আবাদ গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে। বিগত বছরে এ জেলায় ৬২৫ হেক্টর জমিতে  লটকনের আবাদ হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৪২ হেক্টর। এ বছর কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের জরিপে লটকনের আবাদ বেড়েছে আরো ৭১৭ হেক্টর।

স্থানীয় লটকন চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে মাঠের পর মাঠ জুড়ে আবাদ হচ্ছে লটকনের।  পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও সুস্বাদু লটকনের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি মিলছে ন্যায্য দামও। ফলে খুশি এলাকার চাষিরা। এ জেলায় সবচে বেশি লটকনের বাগান রয়েছে শিবপুর উপজেলায় ।  বিভিন্ন পতিত জমিতেই এখন বাণিজ্যিকভাবে চলছে লটকনের আবাদ । অন্যদিকে এর বেচাকেনাকে ঘিরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মরজাল, চৈতন্য ও শিবপুরে গড়ে উঠেছে লটকনের বৃহৎ বাজার।

লটকন চাষিরা জানান, একটি পূর্ণবয়স্ক লটকন গাছে ৫ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। শিবপুর উপজেলার আজকেরতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, লটকন ফলের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাছের কান্ডে ফলে। কখনও কখনও এত বেশি ফল আসে যে গাছের ডাল পর্যন্ত দেখা যায় না।

একই উপজেলার লাখপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিন জানান, ফল বিক্রির ভাবনা ভাবতে হচ্ছে না তাদের। পাইকাররা বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তা ছাড়া শিবপুর ও মরজাল বাজারেও  প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ক্রেতারা আসছেন।

লালমনিরহাট থেকে মরজাল বাজারে আসা পাইকারি লটকন ব্যবসায়ী করম আলী জানান, এবার ফলন ভালো, আকারও বড়। গত বছর দুটি বাগান কিনলেও এবার ৫টি বাগান কেনার কথা ভাবছেন তিনি। দাম-দরে মিললে আগামী দু’একদিনের মধ্যেই কেনা শুরু করবেন।




রাইজিংবিডি/নরসিংদী/৪ জুলাই ২০১৭/গাজী হানিফ মাহমুদ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়