কাউনিয়ায় পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
আমিরুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম
এক কালে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সোনালী আঁশ পাটের গৌরবময় অতীত হারিয়ে গেলেও নতুন করে আবার পাটের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। চলতি মৌসুমে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। টানা কয়েক বছর ধরে বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় পাট চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। ফলে ব্যাপক হারে এবছরেও পাট চাষ করেছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। সবুজ পাতার সাথে দোল খাচ্ছে মাঠের পর মাঠ কৃষকের সোনালী স্বপ্ন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের চেয়ে পাটের বাম্পার ফলন ও ভালো দামের স্বপ্ন দেখছেন এ এলাকার প্রান্তিক চাষিরা।
উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের বল্লোভবিষু গ্রামের পাট চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, পাট অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এবছর আড়াই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবছর পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। আশা করছি এবছরও পাটের ভালো দাম পাবো।
একই ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবছর আড়াই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। তবে আশা করছি এবার পাটের ফলন ভালোই হবে।
একই ইউনিয়নের কৃষক ভুপাল চন্দ্র বলেন, সরকারের দেওয়া সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে পাট চাষ করেছি। পাটের বাম্পার ফলনও হয়েছে। আশা করছি, পাটের ন্যায্য মূল্য পাবো।
উপজেলার সদর বালাপাড়া ইউনিয়নের উত্তর হরিশ্বর গ্রামের পাট চাষি আব্দুল জব্বার বলেন, এবছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ভরা মৌসুমে পাটের বাজার মূল্য কম থাকে। এসময় ব্যবসায়ীরা কম দামে কিনে মজুত করে পরবর্তী সময়ে বেশি দামে বিক্রি করায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয় আমাদের মতো পাট চাষিদের।
উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান রাইজিংবিডিকে বলেন, কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণ ও বিনা মূল্যে সার বীজ বিতরণসহ নানাবিধ সহযোগিতা করা হয়েছে। তাই চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষক যাতে ন্যায্য মূল্য পায়, সে ব্যাপারে সরকারের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন বলেন, এবছর কাউনিয়া উপজেলায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ১ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে প্রায় ৮৯০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন প্রান্তিক চাষিরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছরও পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আশা করি, কৃষকরা তাদের উৎপাদিত স্বপ্নের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশবান্ধব পাটের মোড়কসহ বিভিন্ন কাজে পাট জাতীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়ালে পাটের চাহিদা যেমন বাড়বে, তেমনি লাভবান হবেন চাষিরা।
রংপুর/মাহি