ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নতুন আমের সন্ধান

মেহেদী হাসান শিয়াম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫১, ২৩ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১০:৫৫, ২৪ আগস্ট ২০২১

আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বারোমাসি আমের একটি নতুন জাতের দেখা মিলেছে। আম গাছের মালিক ওই জাতের আমটির নাম না জানলেও কৃষিবিদরা এর নাম ‘স্যান্ডি’ বলে জানিয়েছেন। উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের রোকনপুর গ্রামের আম চাষি নাজমুল হকের জমিতে এ জাতের আম পাওয়া গেছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, বছরের প্রতিদিনই এ জাতের গাছগুলোতে মুকুলের দেখা মেলে। বাজারে মৌসুমের সময় যে সমস্ত জাতের আম পাওয়া যায়, সেগুলো স্বাদের দিক থেকে অনন্য। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ে এ আমগুলো পাওয়া যায়। 

বারোমাসি আমের মধ্যে কাটিমন ও বারি-১১ আম অন্যতম। তবে বর্তমানে এ জাতের আম বারোমাসি হলেও সম্পূর্ণ আলাদা জাতের। কারণ, এর ফলন খুব বেশি। এ আমের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একসঙ্গে গাছে গুটি ও মুকুল ধরে। একেকটি থোকায় একাধিক আম থাকায় ফলন ধরে। ক্ষেত্র বিশেষে এ জাতের আমের থোকায় ৮-১০টি করেও আম দেখা যায়।  

আমচাষি নাজমুল হক রাইজিংবিডিকে জানান, প্রায় ১০ বছর আগে আমার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বিদেশি জাতের এ গাছের চারা পেয়েছিলাম। এ গাছগুলো থেকে আম ও চারা তৈরি করে বিক্রি করে যাচ্ছি। একটি চারা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করি। এখনো পর্যন্ত এই গাছগুলোর নাম আমার জানা নেই। তবে কৃষি অফিস এ আমের নাম দিয়েছে ‘স্যান্ডি’।

নাজমুল আরও জানান, গাছগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিদিনই মুকুল আসে। একটি থোকায় অনেক আম ধরে, আমের ভেতর আঁশ নেই, খেতেও খুব সুস্বাদু এবং মিষ্টি। এর একেকটির ওজন হয় ৫০০ থেকে ৬৫০ গ্রাম। আমের চামড়া খুব পাতলা হলেও সেটিও অনেক মিষ্টি। আম পরিপক্ক হয়ে হলুদ রঙ হলে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। আমগুলো পরিপক্ক হতে সাধরত দুই মাস সময় লাগে। ভোক্তাদের সুবিধার্থে বারোমাসি এ জাতের আম এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সীমা কর্মকার বলেন, কৃষক নাজমুল হকের বাগানে যে বৈশিষ্ট্যের আমগুলো দেখেছি, এর আগে আমি তা দেখিনি। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, একটা থোকায় লিচুর মতো অনেক আম ধরে। আর প্রতিদিনই মুকুল আসে। একটি মুকুল ভেঙে ফেললে সেটি আবার হয়। আম চাষির ভাষ্যমতে, আমরা ধারণা করছি ও বিভিন্ন বই-পুস্তক পড়ে জানতে পেরেছি, এটি ‘স্যান্ডি’ আমের জাতের মতো।

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে এসে আম চাষি নাজমুল হক পরীক্ষামূলকভাবে গাছের চারাটি রোপণ করে ভালো সাড়া পেয়েছেন। আমের ফলন ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে স্থানীয়ভাবে এ আমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্যান্ডি’। 

চাষিরা এ জাতের আম চাষ করলে ভালো ফলাফল পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ জাতের আম চাষে কেউ আগ্রহ প্রকাশ করলে চাষিদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

/মাহি/ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়