দুই ভাইয়ের সমন্বিত খামারে ২০ জনের কর্মসংস্থান
জাহাঙ্গীর লিটন, লক্ষ্মীপুর || রাইজিংবিডি.কম
শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এমন পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং করোনাকালীন সময়ে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্ঠির লক্ষ্যে ১৩ একর জমির ওপর দুই ভাইয়ের উদ্যোগে একটি সমন্বিত খামার করা হয়েছে।
একই খামারে গবাদিপশু পালনের পাশাপাশি পুকুরে চলছে মাছ চাষ। খামারের আঙিনা ও পুকুরপাড়ে পেঁপে, লেবুসহ নানা জাতের ফল উৎপাদন হচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে এ ধরনের সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলে সফল হয়েছেন মো. বাছির ভূঁইয়া ও বায়েজীদ ভূঁইয়া নামে দুই ভাই।
উদ্যোক্তার ভাগ্য পরিবর্তনের পাশাপাশি কর্মহীন বেকার যুবকদের বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখছে ‘ডাইনেস্কো এগ্রো ফার্ম’ নামের এ খামার। লাভজনক হওয়ায় অল্প দিনের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। দুই ভাইয়ের সফলতায় এমন খামার গড়ে তুলতে উদ্যোগী হচ্ছেন পার্শ্ববর্তী যুবকরাও।
২০২০ সালে এ খামারে ২০টি গরু, ১৫টি ছাগল, ২টি পুকুর এবং বাকি অংশে ফলজ, বনজ ও কৃষি পেঁপে, লেবুসহ শাকসবজি চাষাবাদ শুরু করলেও বতর্মানে এর দ্বিগুণ রয়েছে। খামারের পুকুরে অ্যাকুরিয়াম মাছ, রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি খামারের জমিতে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ লাগানো হয়েছে। এ খামারে নিয়মিত ২০ জন শ্রমিক কাজ করে। এই দুইভাই সামাজিকভাবে সাফল্যের শিখরে আরোহণ করছেন। এক ভাইয়ের নাম বায়েজীদ ভূঁইয়া। তিনি জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এবং অন্যজন বাছির ভূঁইয়া। তিনি একজন ব্যাংক কর্মকর্তা।
খামারে নিয়োজিত শ্রমিকরা বলেন, ‘করোনায় বেকার হয়ে না খাওয়ার উপক্রম হয়েছে। জীবন কেটেছে দুঃখ-দুর্দশায়, অভাব-অনটনে। এলাকায় একটি সমন্বিত খামার গড়ে উঠায় বেকারত্ব দূর করে পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছি।’
খামারে উদ্বুদ্ধ হওয়া আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ডাইনেস্কো এগ্রো ফার্মের সফলতা দেখে আমি নিজেও ক্ষুদ্র পরিসরে খামার শুরু করেছি। এতে পার্শ্ববর্তী এলাকার বেকার যুবকরাও সমন্বিত খামার গড়ে তুলছেন। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে আরও সফলতা আসবে বলে আমরা মনে করি।’
বাছির ভূঁইয়া ও বায়েজীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘করোনাকালীন বেকারত্ব দূরীকরণে প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে নিজেরাই খামার গড়েছি। লাভ হওয়ায় এলাকার অন্য যুবকরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে ছোট-বড় খামার করছেন। ৩০ লাখ টাকা পুঁজিতে শুরু হওয়া এ খামার থেকে দ্বিগুণ লাভ হওয়ার আশা করছি। আমাদের দেখাদেখি আরও অনেকে এ ধরনের খামার করতে উদ্যোগী হয়েছেন। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছি।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘তাদের দুই ভাইয়ের বিশাল কর্মযজ্ঞ সত্যিই অনুকরণীয়। নিশ্চয়ই তাদের দেখে এলাকার বেকার যুবকরা উদ্বুদ্ধ হবেন।’
/মাহি/