ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৯ ১৪৩১

ঝালকাঠিতে সুপারির ফলন ভালো, দামও বেশি

অলোক সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০২, ৪ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ০৯:০৮, ৪ নভেম্বর ২০২১
ঝালকাঠিতে সুপারির ফলন ভালো, দামও বেশি

বাঙালির অতিথি আপ্যায়নের জন্য পান একটি অপরিহার্য উপাদান। আর পান খেতে হলে সুপারি প্রয়োজন। ঝালকাঠিতে এবছর সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানকার চাহিদা পূরণ করে রংপুর-দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে সুপারি।

বিক্রির জন্য জেলার বিভিন্ন গ্রামে পৃথকভাবে সপ্তাহে দু'দিন করে বসে সুপারির হাট। এরমধ্যে রাজাপুর সদর ইউনিয়নের বাঘরী বাজার এবং সাতুরিয়া ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া বাজারে বসে সুপারির সবচেয়ে বড় হাট। এর বাইরেও চারাখালী, গালুয়া, বলারজোর বাজারে সুপারির পাইকারী বাজার বসে। এছাড়া কাঠালিয়া উপজেলার বিনাপানি এবং আমুয়া হাটে সুপারি বেশ আমদানি হয়।

দক্ষিণের জেলা ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও ফকিরহাট অঞ্চলে প্রচুর সুপারির ফলন হয়। এই অঞ্চলের সুপারি দিয়ে সারাবছর দেশের চাহিদা মেটে। সামান্য মূলধন নিয়ে সুপারির ব্যবসা করে এখানকার অসংখ্য অসহায় কর্মহীনের ভাগ্য বদল হয়েছে।

লেবুবুনিয়া হাটের সুপারী ব্যাবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শীত আসলে আমাদের বেচাবিক্রি ভালো হয়। এবার ফলন ভালো, দামও ভালো।

এই হাটের আরেক ব্যবসায়ী সালাম খান বলেন, রংপুর ও দিনাজপুরে রপ্তানি হয় আমাদের এখানকার সুপারি। আমাদের অঞ্চলের সুপারির সাইজ বড়, তাই চাহিদা বেশি। মাঝারি সাইজের কাঁচা সুপারি ৩৩০ টাকা করে কুড়ি বিক্রি হয়।

এ অঞ্চলের হাটগুলো ঘুরে জানা গেছে, সুপারি গণনার হিসাবটা একটু ভিন্ন। হাটে গিয়ে প্রথমে সুপারির দাম জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, ৩০০ টাকা কুড়ি। এতে অবাক হওয়ারই কথা।

কিন্তু সুপারি ক্রেতা আনিস হাওলাদার বলেন, সুপারি গণনার হিসেবটা অন্য রকম। এখানে ২১০টা সুপারিকে এক কুড়ি বলা হয়।

ঝালকাঠি স্টেশন সড়কের সুপারি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি আজকে ১০ হাজার পিস সুপারি কিনেছি। মাঝারি এবং বড় দুই সাইজের পিস প্রতি ১ টাকা ৪০ পয়সা হারে ১০ হাজার পিসের দাম পড়েছে ১৪ হাজার টাকা। এটি এখন সংরক্ষণ করে রাখবো, দাম যখন বাড়বে, তখন বিক্রি করবো।

রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের রমজান আলী জানান, কোনো প্রকার ব্যয় ছাড়াই সুপারিতে অধিক আয়ের সুযোগ রয়েছে। তিনি তার বসতভিটার ৭০টি সুপারি গাছ থেকে প্রতি বছর সুপারি বিক্রি করে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা আয় করছেন।

সুপারি ব্যবসায়ী নুর উদ্দিন জানান, তিনি অল্প পুঁজি নিয়ে কাঁচা-পাকা সুপারি কেনাবেচা করেন। হাট থেকে পাইকারী দরে সুপারি কিনে কাঁচা সুপারি খিলি পানের দোকানে বিক্রি করেন। আর পাকাগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে সেগুলো মজিয়ে ৫ মাস পর তুলে অধিক মূল্যে বিক্রি করে থাকেন।

লেবুবুনিয়া এলাকার সুপারি বিক্রেতা আমজেদ শিকদার জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সুপারির ব্যবসা করছেন।  মৌসুমের আগে সুপারির বাগান কিনে রাখেন। পরবর্তী সময়ে গাছে সুপারি ধরার পর তা বিভিন্ন স্থানের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন।

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, ঝালকাঠির রাজাপুর এবং কাঠালিয়া উপজেলায় সুপারির ফলন বেশি হয়। এই ফলটি উৎপাদনে গাছ মালিকদের পরিশ্রম করতে হয় না। বিক্রি করতেও ঝামেলা কম। তাই রাজাপুর ও কাঠালিয়া অঞ্চলে সুপারি ব্যবসায় জড়িত অধিকাংশ গৃহস্থ।

/মাহি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়