ঢাকা     সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়ে ৪৩ হাজার কৃষকের মুখে হাসি 

কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২৪, ৮ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৭:৫৩, ৮ জানুয়ারি ২০২৩
প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়ে ৪৩ হাজার কৃষকের মুখে হাসি 

কুষ্টিয়া জেলার ছয় উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারি প্রণোদনার আওতায় ৪৩ হাজার কৃষককের মধ্যে বিভিন্ন ফসলের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। ফলে জেলায় বিভিন্ন ফসলের আবাদ করতে শুরু করেছেন কৃষকরা। বীজ ও সার কিনতে না হওয়ায় তাই হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

গতকাল শনিবার কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার সরকারি প্রণোদনার আওতায় ৪৩ হাজার ১৮৮ জন কৃষককের মধ্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে খরিপ-২ মৌসুমে মাসকলাই এর বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৬২৮ জন কৃষককে। গ্রীষ্মকালীন চাষের জন্য ১২০০ কৃষককে দেওয়া হয়েছে পেঁয়াজের বীজ। রবি মৌসুমে প্রনোদনার মধ্যে- গম বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার কৃষককে। 

এছাড়া সরিষার বীজ দেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৫০০ কৃষককে, পেঁয়াজের বীজ ৪১০, ভুট্টার বীজ ৪ হাজার ৫০০, সূর্যমুখী ফুলের বীজ ১ হাজার ৪০০, চিনা বাদামের বীজ ৯০০, মুগ ডালের বীজ ১ হাজার ৫০০, মসুর ডালের বীজ ১ হাজার ৭৫০ এবং খেসারী ডালের বীজ ৪০০ কৃষককে দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কৃষক ইয়ার আলী বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরিষার বীজ ও সার পেয়েছিলাম। এবার তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ভালো ফলন পেয়েছি।’

মিরপুর উপজেলার সদরপুর গ্রামের কৃষক মাসুম বলেন, ‘প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়েছি। এবছর আমি সরিষা চাষ করেছি। বিগত বছর আমি আমার জমিতে তামাকের চাষ করেছিলাম।’

একই উপজেলার আমলা ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামের কৃষক মারজুল হোসেন বলেন, ‘এবছর কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সূর্যমুখী ফুলের বীজ ও চাষের জন্য সার পেয়েছি। ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর ফুল চাষ করেছি। আশা করছি ফলন ভালো হবে।’

একই উপজেলার কিপাত আলী, আজিজুর রহমান, সামসুল আলম, মনিরুল ইসলাম, জাহিদুল হক, মহিবুল ইসলামের মতো অনেক কৃষক এবছর সরকারি প্রণোদনা প্রাপ্ত বীজ থেকে সরিষার আবাদ করেছেন।

মিরপুর, দৌলতপুর উপজেলার মতো কুষ্টিয়ার অন্য উপজেলার কৃষকরাও গম, সরিষা, সূর্যমুখী, ভুট্টা, পেয়াজ, চিনাবাদাম, মুগ, মসুর, খেসারীসহ বিভিন্ন রবি শস্যের আবাদ করছেন।

সদর উপজেলার কৃষক তৈয়ব আলী বলেন, ‘ধান কাটার পরে চাষ ছাড়াই জমিতে সরিষা বপন করা যায়। সরিষা ‍উৎপাদনে খরচ খুবই কম আর সময়ও কম লাগে। সরকারি সার ও বীজ পাওয়ায় আমাদের এলাকায় সরিষা চাষ বেশি হচ্ছে। সরকার আমাদের মতো সাধারণ কৃষকদের জন্য সদয় হয়েছেন।’ 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গৌতম কুমার শীল বলেন, ‘প্রণোদনায় কৃষকরা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। এবছর সরিষা ও ভুট্টার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রবি শস্যের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে ৪৩ হাজার কৃষক ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারি প্রণোদনায় কৃষকরা বিভিন্ন ফসলের বীজ ও সার পেয়েছেন। ইতোমধ্যে কৃষকরা এসব বীজ দিয়ে মাঠে চাষাবাদ করছেন। বিনামুল্যে এসব বীজ ও সার পাওয়ায় কৃষকরা বেশ উপকৃত হয়েছেন। আগামীতে এসব ফসলের আবাদ আরো বাড়বে।’

মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়