পরিত্যক্ত ইটভাটায় উচ্চমূল্যের ফলের বাগান করে হেলালের ভাগ্যবদল
অমরেশ দত্ত জয়, চাঁদপুর || রাইজিংবিডি.কম
চাঁদপুরের শাহাতলীতে পরিত্যক্ত ইটভাটায় দেশি-বিদেশি উচ্চমূল্যের ফলের পরীক্ষামূলক বাগান করে সাড়া ফেলেছেন হেলাল উদ্দিন। প্রায় তিন একর জমিতে পরিবেশ বান্ধব কংক্রিট ব্লক ও ফল উৎপাদন করে সফল হয়েছেন তিনি।
এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পরায় প্রতিদিনই হেলাল উদ্দিনের বাগান দেখতে ছুটে আসছেন নানা বয়সী মানুষ। আর এসব উৎসুক মানুষকে কিছুটা বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে এই উদ্যোক্তা ডাকাতিয়া নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে তুলেছেন ‘রিভার ভিউ ক্যাফে’ নামের একটি রেস্তোরাঁ।
হেলাল উদ্দিনের মিশ্র ফলের বাগানের নাম ফ্রুটস ভ্যালী এগ্রো ফার্ম। বিশ্বসেরা ৪৮ প্রজাতির আমসহ মোট ৩৭ প্রজাতির নানা জাতের ফলের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ হচ্ছে এখানে। বালি দিয়ে ভরাট করা সম্পূর্ণ এই স্থানে সারাবছর ফল পাওয়া যায় বলে এটি চাঁদপুরের আলোচিত স্থান। এখানে ক্যানসার প্রতিরোধক গাছের জাত গরুছোল চাষাবাদ হচ্ছে। এছাড়াও ৯ প্রজাতির এবাগাডো, ১১ প্রজাতির লংগন, ১৯ প্রজাতির কমলা-মাল্টা ও বিচিবিহীন ফলের চাষ হওয়ায় এটি সবার কাছে বিশেষ করে বাগান করতে আগ্রহীদের কাছে শিক্ষনীয় স্থান।
ফ্রুটস ভ্যালি এগ্রোর মালিক হেলাল উদ্দিন বলেন, শখের বসে গড়ে তোলা এই ফলের বাগানের কোনো কোনো আমের কেজি হাজার টাকা। এছাড়াও এসব গাছের চাড়ার মূল্যও ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। যা অত্যান্ত লাভজনক বলেই মনে করছি। আর এখানে যারা বাগান দেখতে আসেন তারাই মূলত ক্রেতা। ফল ও চারা বিক্রির আয় দিয়ে প্রায় ৩০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন উদ্যোক্তা যারা হতে চান তাদের আমি বলবো আপনারা কম দামি ফল চাষে না ঝুঁকে উচ্চমূল্যের বিশ্ব মানের ফলের চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠুন।
চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাছান বলেন, উচ্চমূল্যের কিং অব চাকাপাত, অষ্টিন, অষ্টিন গোল্ড, মায়া, কেরাবো, হেডেন, মিয়াজাকি, ব্লেক স্টোন, থ্রী টেষ্টের মতো বিশ্বসেরা আমের জাত চিনতে ও ভবিষ্যতে জীবনের কাজে শিক্ষার্থীদের এই বাগানে বেশি বেশি আসা উচিত। তাছাড়া আমাদের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঠপর্যায়ে এ সংক্রান্ত অনেক কিছু হাতে কলমে জানার আছে এখান থেকে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন রায় বলেন, বালির ওপর পরীক্ষামূলক এই ফলের বাগান গড়ার কারিগর হেলাল উদ্দিনের পাশে সবসময় পরামর্শ সহযোগিতা নিয়ে আছে কৃষি বিভাগ। আমরা চাই তার এমন অনুকরণীয় ফলের বাগান দেখে বেকার যুবকরা যেনো উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী হয়ে ওঠে।
মাসুদ