জরায়ুর যক্ষ্মা গর্ভধারণে যেভাবে বাধা দেয়
দেহঘড়ি ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: সংগৃহীত
যক্ষ্মা নিয়ে রোগীর মনে খুব ভয় কাজ করে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে এই চিকিৎসা পাওয়া যায়। আমরা সাধারণত জানি যে, যক্ষ্মা হলে কাশি হয়, রোগী সারাক্ষণ কাশতে থাকেন। রোগীর ওজন কমে যায়, জ্বরে ভুগতে থাকেন। এইসব লক্ষণ ফুসফুসে যক্ষ্মার ক্ষেত্রে দেখা দেয়। কিন্তু নারীর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি জরায়ুর যক্ষ্মা বা প্রজননতন্ত্রে যক্ষ্মা। এই যক্ষ্মার কারণে নারী গর্ভধারণে অক্ষম হতে পারেন।
ডা. আকলিমা জাকারিয়া জিনান, কনসালটেন্ট গাইনোকলোজিস্ট, লাইফস্প্রিং বলেন, ‘‘জরায়ুতে যক্ষ্মার কারণে নারী গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে। কারণ হচ্ছে জরায়ুর দুইপাশে দুইটি টিউব থাকে। ওভারি এবং ডিম্বাশয়। স্বাভাবিকভাবে প্রতিমাসে এই ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম আসে। সেটি টিউবের মাধ্যমে জরায়ুতে প্রবেশ করে। যদি কোনো নারী জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকেন তার ক্ষেত্রে যক্ষা টিউবে প্রথমে আক্রমণ করে। ফলে টিউবের ভেতরে যে রাস্তা সেটি বন্ধ হয়ে যায়। দেখা যায় এই টিউব বন্ধের কারণে ডিমটা আসতে পারে না। ফলে নারী গর্ভধারণে ব্যর্থ হতে পারেন। এর পাশাপাশি জরায়ুর ইউটেরাসের ভেতরে যক্ষ্মার জীবাণু হতে পারে। ’’
আকলিমা জাকারিয়া জিনান আরও বলেন, ‘‘রোগীরা বলেন, পরীক্ষা নিরীক্ষা করে টিউবে সমস্যা পাওয়া গেছে। কেউ কেউ বলেন, তলপেটে ব্যথা অনুভব করেন। কেউ কেউ বলেন মাসিকের ব্লিডিং এলোমেলোভাবে হচ্ছে। অর্থাৎ হয়তো বেশি হচ্ছে অথবা কম হচ্ছে। এই সব লক্ষণ অন্য অনেক রোগের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে। জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলেও হতে পারে। কিন্তু এই সব সমস্যা দেখা দিলে জরায়ুর ভেতরে যে লাইনিং থাকে সেখান থেকে একটু মাংস নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। এ ছাড়া মাসিকের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জরায়ুতে যক্ষ্মা আছে কিনা পরীক্ষা করে নির্ণয় করা যেতে পারে। ’’— যোগ করেন ডা. আকলিমা।
যদি দেখা যায় যে, রোগী অনেকদিন পর্যন্ত বন্ধ্যাত্ব প্রতিকারের চিকিৎসা নিচ্ছেন, ডিম ফোটার ওষুধ খাচ্ছেন কিন্তু সন্তান হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জরায়ুতে যক্ষ্মা আছে কিনা সনাক্ত করে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। এই রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা প্রয়োজন।
ঢাকা/লিপি