ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

কে হচ্ছেন ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদক

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫২, ২৪ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কে হচ্ছেন ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদক

আরিফ সাওন : আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর হতে যাচ্ছে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল। সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য তিন নারীসহ ১১০ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। জমা দিয়েছেন দুই নারীসহ ৭৬ জন।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়া সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিজেকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য যোগ্য মনে করেন। তবে সবাই তো নেতৃত্বে আসবেন না। এবার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন ভোটের মাধ্যমে। ফলাফলেই দেখা যাবে কে কে আসছেন ছাত্রদলের নেতৃত্বে।

কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে চলছে জল্পনা-কল্পনা ও প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ। মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ৭৬ জনের মধ্যে সভাপতি পদের দৌড়ে এগিয়ে আছেন আসাদুল আলম টিটু, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, আল মেহেদি তালুকদার ও মামুন খান। সাধারণ সম্পাদক পদে এগিয়ে আছেন- সাইফ মাহমুদ জুয়েল হাওলাদার, আমিনুর রহমান, ডালিয়া রহমান, মো. হাসান (তানজিল হাসান)।

ভোটের মাধ্যমে ছাত্রদলে নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়ায় কদর বেড়েছে ছাত্রদলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের। আগে তাদের সেভাবে মূল্যায়ন না করা হলেও ভোটের প্রত্যাশায় বেড়েছে তাদের কাছে মূল্যায়ন। নেতৃত্বে  আসার জন্য জেলায় জেলায় যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা।

তৃণমূলের অনেকে মনে করেন, ভোটের মাঠে টিকলে সভাপতি পদে মেহেদি তালুকদারের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবনের।

সভাপতি পদপ্রার্থী শ্রাবন সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। তিনি বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। ছাত্রদলের তৃণমূল থেকে উঠে আসা এ নেতার ১/১১ এর সময় থেকে সব কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। সভাপতি পদপ্রার্থীদের মধ্যে সর্বাধিক মামলা (১৬টি) রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে সাইফ মাহমুদ জুয়েল হাওলাদার সঙ্গে আমিনুর রহমানের। ডালিয়াও মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছেন।

জুয়েল স্লোগান মাস্টার হিসেবে পরিচিত। রাজপথে সক্রিয় থাকায় তার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে। আমিনুলও আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে।

কয়েকদিন আগে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনে না থাকায় সভাপতি পদে শ্রাবন ও সম্পাদক পদে মনোনয়ন জমা দেয়া জুয়েলের প্রতি হাইকমান্ডের সুনজর রয়েছে। ভোটারদের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা আরো বেড়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

আরো আলোচনায় রয়েছেন, আশরাফুল আলম ফকির লিঙ্কন, আরাফাত বিল্লাহ, সাজিদ হাসান বাবু, হাফিজুর রহমান, মো. ফজলুর রহমান, মো. জুয়েল মৃধা প্রমুখ।

জানা গেছে, একটি সিন্ডিকেট কাউন্সিল ভেস্তে দেয়ার বিষয়ে তৎপর আছে। তাই বিকল্প ব্যবস্থার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে দলীয় হাইকমান্ড। কোনো কারণে যদি ঝামেলা হয়, তাহলে অনলাইনে ভোট নিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করতে পারেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শ্রাবন বলেন, বিগত দিনে দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। দলের চেয়ারপারসন, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া অন্যায়ভাবে কারাগারে আছেন। তারুণ্যের অহঙ্কার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরকারের রোষাণলে দেশ থেকে অনেক দূরে লন্ডনে রয়েছেন।  তাই খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সবাইকে হাতে হাত রেখে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, রাজপথের আন্দোলন করতে হবে। এই আন্দোলনের জন্য একটি শক্তিশালী ছাত্রদল উপহার দিতে চাই।

মেহেদী বলেন, আমার জনপ্রিয়তা দেখে অনেকে ইর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। তবে এ ষড়যন্ত্র সফল হবে না।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী  জুয়েল বলেন, সংগঠনকে একেবারে তৃণমূল থেকে শক্তিশালী ও আন্দোলনমুখী করতে চাই। ছাত্রদলের আন্দোলনে দেশের ইতিহাস রচিত হয়েছে। আগামীতেও ছাত্রদলের আন্দোলন দিয়ে আমাদের মা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে প্রতিটি কর্মসূচি সফল করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই।

ডালিয়া বলেন, আমি দীর্ঘদিন রাজনীতির সাথে যুক্ত। ছাত্রদলের ইতিহাসে এই প্রথম সাধারণ সম্পাদক পদে কোনো নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। গণতন্ত্রের মুক্তি ও দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে সব সময় রাজপথে থাকায় সম্মানিত কাউন্সিলদের কাছে আমি নারীকর্মী নয়, তাদের সহযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। আমাদের অহংকার তারেক রহমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের যে ব্যবস্থা করেছেন, তাতে আমার জয়ের মধ্য দিয়ে আরেকটা নজির সৃষ্টি হতে পারে বলে আমি আশাবাদী। আমি নেতৃত্বে আসলে অনেকেই আমাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হবে। অনেক মেয়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে এগিয়ে আসবে। আগামীতে আমাদের দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে লাখো সহযোদ্ধা নিয়ে মাঠে থাকব, ইনশাল্লাহ।

১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুই পদে নেতা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। সারা দেশের ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ আগস্ট ২০১৯/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়