ঢাকা     শুক্রবার   ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৪ ১৪৩১

নেগেটিভ আসার পর ফের করোনা পজেটিভ কেন?

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১১, ১০ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
নেগেটিভ আসার পর ফের করোনা পজেটিভ কেন?

একবার আক্রান্ত হলে সেই ব্যক্তির আর পরবর্তী সময়ে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে না। ডেঙ্গুতে একজন মানুষের চার বার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু করোনায় একজন মানুষ কত বার আক্রান্ত হতে পারে?

বিশেষজ্ঞরা জানান, কোভিড-১৯ পজেটিভ আসার পরবর্তী সময়ে দুই বার পরপর নেগেটিভ এলে তাদের সুস্থ হিসেবে ধরা হয়। পুরোপুরি সুস্থ থাকলেও পরপর দুইবার নেগেটিভ না এলে তাকে করোনামুক্ত হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

করোনামুক্ত বিবেচিত হওয়ার পরও কারো কারো লক্ষণ উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। পরীক্ষা করলে তাদের কারো কারো পজেটিভও আসছে। কিন্তু কেন? তাহলে করোনা একজনের কয়বার হয় বা হতে পারে এমন প্রশ্ন অনেকের।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরপর দুই বার নেগেটিভ হওয়ার কয়েকদিন পর পজেটিভ আসার সংখ‌্যাটা নিতান্তই কম।

দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, আবার পজেটিভ এলেও তার থেকে অন্যদের সংক্রমিত হওয়ার নজির নেই। এমনকি মৃত্যুর শঙ্কাও নেই বললেই চলে। এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বার পজেটিভ আসা কারো মৃত্যু হয়নি।

দেশে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দেশে এমন তথ্য নেই। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে নেগেটিভ আসার পর পজেটিভ হওয়ার তথ্য শোনা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশেও নেগেটিভ আসার পর আবার পজেটিভ হওয়া তথ্য শোনা গেছে।

করোনায় দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার কোনো আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এএসএম আলমগীর বলেন, এটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেননা আক্রান্ত হওয়ার পর যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তা যদি প্রটেকশন না দেয়, তাহলে তো হতেই পারে। তবে সেটার সম্ভাবনা একেবারেই কম। আর যদি প্রটেকশন দেয়, তাহলে ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে তো আক্রান্ত হবে না।

তিনি বলেন, কোথাও কোথাও দেখা গেছে যে কেউ তো বলেন রি-ইনফেকশন হয়। কয়দিনে নেগেটিভ হয়ে গেলো। আবার কয়েকদনি পরে পজেটিভ। সেটা রিঅ্যাকটিভেশনও হতে পারে। রিইনফেসনের কথা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। এটা একে বারেই ক্ষীণ। অন্তত ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে।

নেগেটিভ হওয়ার পরে আবার পজেটিভ আসা নিয়ে দুই ধরনের মতামত আছে জানিয়ে এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, অনেকে বলছেন- এটা হয়তো রিঅ্যাকটভেশন হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন রিইনফেকশন।

‘তবে যখন ভাইরাস মরে যায় রিইনফেকশনের আশঙ্কা খুব কম। ভাইরাস যদি মরেও যায়, আর তার উপসর্গ যদি চলেও আসে, তাহলে তার মধ্যে ভাইরাসের আরেকটা শিখা থাকতে পারে। আরএনএ থাকলে তো পজেটিভ আসবেই।

এএসএম আলমগীর বলেন, ভাইরাস জীবিত না মৃত সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পেগনেন্টেশন অব ভাইরাসের দিকেও আগাতে হবে।

দ্বিতীয়বার পজেটিভ আসাদের কারো মারা যাওয়ার খরব শোনা যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, রিইনফেকশনে মৃত্যু নেই। রিঅ্যাকটিভেশন বা রিইনফেকশন যেটাই বলি, যেগুলো দেখা গেছে সেখান থেকে কিন্তু আরেক জন আক্রান্তও হয়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যারা করোনাভাইরাস মুক্ত ও শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, তারা যে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হবেন না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গবেষণায় এমন কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

তবে দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষণা সংস্থা কোরিয়ান সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, এ ভাইরাসের জীনগত বা জেনেটিক বিশ্লেষণে তেমন কোনো পরিবর্তন ধরা পড়েনি, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমের আড়ালে রয়ে যেতে সক্ষম।



ঢাকা/সাওন/এসএম

রাইজিংবিডি.কম


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়