ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

কর জাল সম্প্রসারণে মাঠে নামছে এনবিআরের ১২০ টিম

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১২ অক্টোবর ২০২০  
কর জাল সম্প্রসারণে মাঠে নামছে এনবিআরের ১২০ টিম

নতুন নতুন ব্যক্তিদের আয়কর নেটের আওতায় আনতে মাঠে নামছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১২০ জরিপ টিম।

এই টিমের সদস্যরা বাড়ি কিংবা অফিসে গিয়ে করযোগ্য ব্যক্তিদের শনাক্ত ও টিআইএন নম্বর দেবেন। এ মাস থেকেই এ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।

সারা দেশে এনবিআরের প্রতিটি কর অঞ্চলে গঠিত হবে ১০ সদস্যের চারটি জরিপ দল। কর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ বিভাগ, আনসার এবং কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থী (কমপক্ষে একজন নারী) প্রতিনিধি রাখা হচ্ছে, যারা জরিপ দলকে সহায়তা করবে।

আরো পড়ুন:

অভ্যন্তরীণ জরিপের অংশ হিসাবে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সিটি করপোরেশন, রাজউক ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে সম্ভাব্য করদাতাদের তথ্য সংগ্রহ করবে। তারপর তাদের নামে টিআইএন ইস্যু করে কর আদায়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে এনবিআর।

সম্প্রতি এনবিআরের আয়কর শাখা থেকে মাঠ পর্যায়ের কর অফিসগুলোকে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। নির্দেশনায় বিদ্যমান জরিপ দলগুলো পুনর্গঠন এবং অক্টোবরে জরিপ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আয়কর বিভাগের একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, মাঠের কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশিকা বজায় রেখে সমীক্ষা চালিয়ে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এনবিআর অবশ্য তাদের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় জোর দিতে চায়। দেশে করোনভাইরাস শনাক্তের পর গত মার্চ থেকে সমীক্ষা স্থগিত রয়েছে। সাধারণত, রাজস্ব বোর্ড জরিপের মাধ্যমে নতুন করদাতাদের সন্ধানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে। তবে এ বছর সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ জাতীয় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়নি।

তিনি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে করদাতাদের আয়ের অনিশ্চয়তার পাশাপাশি আগামী দিনে প্রাদুর্ভাবের সম্ভাব্য প্রবণতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে আয়কর অঞ্চলগুলো রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বার্ষিক পারফরম্যান্স চুক্তি অনুসারে নতুন করদাতাদের সন্ধানের লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করবে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, নতুন নতুন করদাতাদের আয়কর জালের আওতায় আনতে করযোগ্য ব্যক্তিদের শনাক্ত ও টিআইএন নম্বর দিতে হবে। যারা সারা দেশে করদাতাদের বাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবে। জরিপ কাজের আওতায় সাধারণত ডোর-টু-ডোর করদাতার বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কর কর্মকর্তারা করযোগ্য আয় করেন অথচ কর দেন না কিংবা টিআইএন নম্বর নেই, তাদের শনাক্ত করতে হবে।  জুলাইয়ে করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর ডোর-টু-ডোর জরিপের কাজ স্থগিত করা হয়েছিল। ওই সিদ্ধান্তে ডোর-টু-ডোর জরিপ কাজ স্থগিত করার পাশাপাশি আগের বছরের জরিপের ফল বাস্তবায়নে জোর দেওয়া হয়েছিল।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এনবিআর প্রযুক্তিনির্ভর অভ্যন্তরীণ জরিপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে কর কর্মকর্তারা বিভিন্ন সরকারি সংস্থা এবং স্থানীয় সরকার সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং নতুন করদাতাদের শনাক্ত করার জন্য তথ্য বিশ্লেষণ করবেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরও মানুষের অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তাই এনবিআর এখন অভ্যন্তরীণ সমীক্ষার পাশাপাশি বাইরে জরিপ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মাঠের কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশিকা বজায় রেখে সমীক্ষা চালিয়ে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

এম এ রহমান/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়