ঢাকা     রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২ ১৪৩১

যে কারণে প্রমাণিত হয় না অধিকাংশ ‘মানিলন্ডারিং’ মামলা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ২০ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ২২:৩৯, ২০ অক্টোবর ২০২০
যে কারণে প্রমাণিত হয় না অধিকাংশ ‘মানিলন্ডারিং’ মামলা

হিসাব-নিকাশের গরমিল থাকার কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দায়ের করার মানিলন্ডারিং মামলা তদন্ত পর্যায়েই কম প্রমাণিত হচ্ছে। অনেক সময় প্রমাণিতই হয় না। এনবিআরের ‘মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ’ শীর্ষক এক বৈঠকে খোদ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এই বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।

এখন পর্যন্ত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মানিলন্ডারিং আইনে ৮২ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০টির তদন্ত চলছে। আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে মাত্র ৩ মামলার। সাতটি মামলা দায়ের করতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করে অনুমোদনের জন্য এনবিআরের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। একটি মামলার তদন্ত কার্যক্রম দুদক, সিআইডি, শুল্ক গায়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর যৌথভাবে তদন্ত চলমান রয়েছে। এছাড়া, জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা ২১ মামলা সিআইডি তদন্ত করছে।

মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান শেষে ১০ মামলা আলাদাভাবে দায়েরের অনুমতি চেয়ে এনবিআরে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বর্তমানে ১৫টি মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নতুন ২টি মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর প্রাথমিক তথ্য যাচাই-বাছাই করছে।

আরো পড়ুন:

এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘মানিলন্ডারিং বিষয়ে ৮২টি মামলা দায়ের করা হলেও এসব মামলা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। হিসাব-নিকাশের গরমিল থাকায় যেসব মামলা দায়ের করা হয়, সেগুলোতে পরবর্তী সময়ে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। এ কারণে তালিকা দীর্ঘ না করে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করে মামলা দায়েরের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।’

২০১৫ সালে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এনবিআর অনুসন্ধান ও তদন্ত করার ক্ষমতা পাওয়ার সময় থেকে বেশ কিছুদিন বাণিজ্যভিত্তিক মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে কাজ করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও ভ্যাট নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘মানিলন্ডারিং নিয়ে আমার কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ রয়েছে। এরই আলোকে বলতে পারি, মানিল্ডারিং নিয়ে ভালো কাজ করতে হলে এই সংক্রান্ত কাজে কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে এনবিআরে পৃথক একটি ইউনিট করা জরুরি। যার আওতায় প্রসিকিউশন বিভাগসহ বেশকিছু বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে।’

উল্লেখ‌্য, ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট সংশোধিত মানি লন্ডারিং আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়। এরপর ৫ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনটি সংশোধন হয়। যা পরবর্তী সময়ে সংসদে পাস করা হয়। এই আইনে দুদকের পাশাপাশি বেশ কিছু সংস্থাকে মানি লন্ডারিং সংশ্লিষ্ট অপরাধের তদন্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়।

/এনই/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়