ঢাকা     শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১৩ ১৪৩১

যে কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে ওয়াসার

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২০, ১৩ এপ্রিল ২০২১  
যে কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে ওয়াসার

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই রাজধানি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন রাস্তা খনন ও মেরামত কাজের চার্জ ৩০০ থেকে ৪০০ শতাংশ বাড়িয়েছে। এই কারণে ঢাকা ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ব্যয়ও। সংস্থাটি বলছে, এ কারণে দাতা সংস্থাগুলোর কাছে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি জানিয়ে স্থানীয় সরকার ও অর্থ বিভাগে চিঠি দিয়েছে ঢাকা ওয়াসা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত চার্জ বাড়ানোর কারণে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প (ডিডব্লিউএসএনআই)’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হতে পারে। একইসঙ্গে অতিরিক্ত ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।

ঢাকা শহরের জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিডব্লিউএসএনআই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি  টাইম-বাউন্ড প্রকল্প। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে দাতা সংস্থার কাছে ঢাকা ওয়াসার সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। ঢাকাবাসীকে সার্বক্ষণিক নির্ভরযোগ্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ডিস্ট্রিক্ট মিটারিং এরিয়া (ডিএমএ ) নির্মাণ চলছে।

আরো পড়ুন:

এতে বলা হয়েছে, ঢাকার ওয়াসার সেবার মান ও সক্ষমতা বাড়ানোও এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। এছাড়া, প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে যেসব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে, সেগুলো হলো, বর্তমান পানির অপচয় (এনআরডব্লিউ) ২৬ শতাংশ  থেকে নামিয়ে ১০ শতাংশের নিচে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জিওবি অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পের মূল কাজ পাইপলাইন স্থাপন হওয়ায় এর বাস্তব অগ্রগতি মূলত সড়ক খননের ওপর নির্ভরশীল।

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ডিপিপি ২০১৬ সালে তৎকালীন সড়ক খননের ক্ষতিপূরণ চার্জ বিবেচনা করে প্রণয়ন করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রায় ৩০০ শতাংশ থেকে ৪০০ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে উত্তর সিটি করপোরেশন  প্রায় ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ সড়ক খননের ক্ষতিপূরণ চার্জ বাড়িয়েছে। ফলে বর্ষাকালীন চার্জ ৫০ শতাংশ, সার্ভিস চার্জ ১৫ শতাংশ ও নিরাপত্তা জামানত চার্জ ১০০ শতাংশ ছাড়া শুধু সড়ক খননের অনুমতির জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৩৩০ কোটি টাকা। যা মূল ডিপিপিতে সংস্থান নেই। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেরি হচ্ছে। সড়ক খননের চার্জ বাড়ানোর বিষয়ে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি আছে কি না,তা জানে না ওয়াসা। 

সূত্র জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আওতাধীন সড়ক খননের চার্জ যুক্তিসঙ্গত করা এবং অনুমতি দেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার জন‌্য স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ঢাকা মহানগরীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সড়ক খননের ক্ষতিপূরণ ফি অভিন্ন হওয়া  উচিত।  

এছাড়া, গত ১৪ জানুয়ারি তারিখে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সব কাজের রেট সিডিউল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ‘ঢাকার  দুই  সিটির খনন চার্জ বাড়ানোর বিষয়টি স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নয়। সড়ক খনন ক্ষতিপূরণ চার্জ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ানোর ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে।’ এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

/হাসনাত/এনই/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়