ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাচ্ছে ডিম

রায়হান হোসেন  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৭, ১১ আগস্ট ২০২৩  
ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাচ্ছে ডিম

বাজারে সরবরাহ কম থাকার অজুহাত তুলে বাড়ানো হয়েছে ডিমের দাম

নিম্ন আয়ের মানুষরা নিয়মিত মাছ-মাংস কিনে খেতে পারেন না। তাদের কাছে আমিষের সহজলভ্য উৎস ডিম। সেই ডিমও গরিব মানুষদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে সরবরাহ কম থাকার অজুহাত তুলে বাড়ানো হয়েছে ডিমের দাম। আগের সব রেকর্ড ভেঙে এখন প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি হালি ডিমের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজারগুলো থেকে কিনলে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। মুদি দোকানে দাম ১৭০ টাকা পর্যন্ত। একটি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রায় ১৫ টাকা।

রাজধানীর নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ নির্ধারণ না হওয়ায় ডিমের বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা করা যাচ্ছে না। 

খামারিরা বলছেন, মুরগির খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যয়সহ বর্তমানে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ ১১ টাকার বেশি। পাইকারি বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৪০ পয়সায়। তিন-চার দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর নিউ মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমারা যারা ব্যাচেলর, মেসে থাকি, তাদের জাতীয় খাবার হলো ডিম। আজ বাজারে এসে যে অবস্থা দেখছি, তাতে আমাদের ডিম কেনাও বন্ধ হয়ে যাবে। বাড়ি থেকে যে টাকা দেয়, তা দিয়ে এই বাজারে খাবার খাওয়া কষ্টকর। শুনছি, দেশে নাকি বর্তমানে প্রতিদিন বাণিজ্যিকভাবে ৪ কোটির মতো ডিম উৎপাদন হয়ে। এগুলো কোথায় যায়, সেটা একটা প্রশ্ন।

অন্যদিকে, মুদিবাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজও কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না।

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় এবং সোনালি বা কক মুরগির কেজি ৩২০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি বা তারও বেশি ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। রুই-কাতলার কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশের কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্র বলছে, দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি হালি (চার পিস) ফার্মের ডিমের দাম ৭.১৪ শতংশ বেড়েছে। গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রতি হালি ডিম ২৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বুধবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৬৫ টাকায়। পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকায়, যা তিন-চার দিন আগে ১৫০ টাকা ছিল। গত বছর এ সময়ে প্রতি ডজন ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বছরের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম ৪০ টাকা বেড়েছে।

/রফিক/ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়