ঢাকা     সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৮ ১৪৩১

জাপার ভোট যুদ্ধ

অ‌নিশ্চয়তায় আ‌নিস চুন্নু বাবলা শে‌রিফাসহ জাপার হে‌ভিও‌য়েট প্রার্থীরা

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৭, ৫ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২২:২৯, ৫ জানুয়ারি ২০২৪
অ‌নিশ্চয়তায় আ‌নিস চুন্নু বাবলা শে‌রিফাসহ জাপার হে‌ভিও‌য়েট প্রার্থীরা

একদিন পরেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। ২৬ আসনে নৌকা প্রত্যাহার করিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিলেও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থীরা। নৌকার প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী ভোটের মাঠে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও শতভাগ জয় নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, জিএম কাদেরের স্ত্রী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরিফা কাদের, ফখরুল ইমাম, গোলাম কিবরিয়া টিপু, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সোলায়মান আলম শেঠ, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, জি এম কাদেরের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার, ভাগিনা আহসান আদেলুর রহমান, রানা মোহাম্মদ সোহেল, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহসহ অধিকাংশ প্রার্থী। 

সমঝোতার ২৬ আসনে তাদের নৌকা প্রার্থী ছাড়াই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টির এসব প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও জনপ্রিয়তা, নিজস্ব ভোট ব্যাংক, ব্যক্তি ইমেজসহ নানা কারণে ছিটকে পড়তে পারেন বলে স্থানীয় ভোটাররা জানিয়েছেন।  

তবে দলের কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী নাসরিন হাওলাদার, পীর ফজলুর রহমানসহ বেশ কিছু বর্তমান এমপি ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা, বিশেষ করে প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমদ মিলন, আলমগীর সিকদার লোটন, মোস্তফা আল মাহমুদ, দিদারুল কবির, আসমা আশরাফসহ তৃণমূলের প্রার্থীরা সমঝোতার ২৬ আসনের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করে নৌকা প্রতীকের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। তাদের মধ্যেও দলের অনেক হেভিওয়েট এবং সংসদ সদস্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

জানা গেছে, বেশ কিছু আসনে লাঙলের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন খোদ জাতীয় পার্টি থেকে বহিস্কৃত বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সমঝোতার ২৬ আসনের বাইরে গিয়ে দলটির বেশ কিছু শীর্ষ পর্যায়ের নেতা নিজস্ব শক্তি নিয়ে নির্বাচন করছেন। তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন নৌকা প্রার্থীর। এদের অনেকে নৌকার সঙ্গে লড়াই করে জিতে আসতে পারলেও  অনেকে হেরে যাবেন বলে আশঙ্কা করছে দলটি। এ অবস্থায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কয়টি আসনে বিজয়ী হতে পারে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, ঢাকা সিটিতে ২৬ সমঝোতার আসনে মাত্র একটি আসন পায় জাতীয় পার্টি। সেটি হলো ঢাকা-১৮ আসন। জিএম কাদের স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে মনোনয়ন দেন এই আসনে। রংপুর-৩ এরশাদপুত্র সাদের আসন এবং স্ত্রী শেরিফা কাদেরের বিনিময়ে ২৬ আসনে সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অভিযোগে দলের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে রয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের। শেরিফাকে সমঝোতার আসনে অন্তর্ভূক্ত করলেও দলের প্রভাবশালী তিন কো-চেয়ারম্যান যথাক্রমে ঢাকা-৬ আসনে কাজী ফিরোজ রশীদ, ঢাকা-১ আসনে সালমা ইসলাম, ঢাকা-৪ আসনে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। দলের তিন হেভিওয়েট প্রার্থী বাদ দিয়ে স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে ২৬ সমঝোতার আসনে প্রার্থী করলেও শেষ পর্যন্ত তিনি জিতবেন কিনা নিশ্চয়তা নেই। 

আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিব হাসান সরে গেলেও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. খসরু চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের আরেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় লাঙলের জেতাটা সহজ নয়। এই আসনে একেবারে নতুন প্রার্থী হওয়ায় দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে ভোটের প্রচারেও পিছিয়ে তিনি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভাগ হয়ে কাজ করছেন। নৌকার কর্মী সমর্থকদের কাছে টানতে না পারলে শেরিফা কাদেরের জয়ী হওয়া অসম্ভব বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা। তবে গণসংযোগকালে শেরিফা কাদের বলেছেন, লাঙলের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিজয়ী হবেন।

ঢাকা-৬ আসনে দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরও সমঝোতার আসনে ঢুকতে না পেরে শেষ মুহূর্তে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা সমঝোতার বাইরে গিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকা প্রার্থী সানজিদা খানমের সঙ্গে টক্কর দিয়ে প্রচার চালিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন তিনি। টানা দুবারের সংসদ সদস্য  হিসেবে রাস্তাঘাট উন্নয়নের দাবি জানিয়ে প্রচারে বাড়তি সুযোগ নিয়েছেন বাবলা। তবে নবম সংসদের এমপি সানজিদা খানমও অলিগলি ছুটে বিরামহীন প্রচার চালিয়েছিনে। নৌকা প্রার্থী হিসেবে ভবিষ্যতে এলাকার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, জলাবদ্ধতা নিরসন, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেছেন। সমানতালে নির্বাচনি প্রচার প্রচারণা করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেনও। এ দুইজনের তুলনায় লাঙ্গলের প্রার্থীকে প্রচারে অনেকটা কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে, দিতে হচ্ছে বাড়তি মনোযোগ। তবে বাবলা আওয়ামী লীগের বিভক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে সুযোগ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।  মূলত ঢাকা-৪ আসনে সানজিদার নৌকার সঙ্গে বাবলার লাঙলের ভোটযুদ্ধ হবে।  জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী সানজিদা খানম বলেন, সবাই নৌকার নির্বাচন করছে। এখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। এলাকার উন্নয়ন, শান্তির জন্য ভোটাররাই নৌকাকে বিজয়ী করবে। 

তবে আওয়ামী লীগে বিভক্তি আর টানা দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকাকালে এলাকায় জনসম্পৃক্ততাকে কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করার স্বপ্নে বিভোর বাবলা বলেন, ‘হারি জিতি কখনও এলাকা ছাড়িনি। এখানকার মানুষই আমার আত্মার আত্মীয়। তাদের ভালোবাসাই আমার সব। সাধ্য মতো তাদের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে লাঙ্গল বিজয়ী হবে।’ 

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও  বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। গত দুবার মহাজোটের প্রার্থী হলেও এবার সমঝোতার আসন পাননি তিনি। ফলে নৌকার প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও দলের এক বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে তাকে। মূলত এই আসনে কায়সারের সঙ্গে খোকার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। দুবার সাংসদ থাকার সুবাদে নির্বাচনি এলাকায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি দূর করে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে ভোটে ফায়দা লুটতে চান তিনি।

খোকা বলেন, ভোটাররা আতঙ্কিত, কেন্দ্র দখলের মহোৎসব চলছে। প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারলে আমি বিজয়ী হবো।

জানা গেছে, ২৬ আসনে সমঝেতার আসনগুলোতে জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রংপুর-৩ আসনে নৌকা প্রার্থী প্রত্যাহার করায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এই আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীও নেই। দলের মেয়র মোস্তফাসহ অধিকাংশ নেতাকর্মী এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশ তার জন্য কাজ করছেন। ‘লাঙলের ঘাঁটি’খ্যাত এরশাদের নিজের আসন রংপুর-৩ জিতে আসা জিএম কাদেরের জন্য সহজ হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে নির্বাচন বর্জনের বিষয়ে স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়ে সরকারকে চাপে ফেলে নিজের ও স্ত্রী শেরিফার আসন দুটি নিশ্চিত করতে চান তিনি। তবে এ আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলে জিএম কাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী। 

সহজে জিতে আসার জন্য ভাতিজা সাদ এরশাদের থেকে আসনটি ছিনিয়ে নেন জিএম কাদের। সাদের অনুসারী নেতাকর্মীরা বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। তারা তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করছেন। সাদের আসনে জিএম কাদেরের নির্বাচন করা, তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী হওয়াসহ নানা বিষয় আনোয়ারা ইসলাম রানীকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। জাতীয় পার্টির বিরোধী শিবিরের ভোট ও আওয়ামী লীগের অপর অংশের ভোট টানতে পারলে জিএম কাদেরকে হারিয়ে চমক দেখাতে পারেন রানী।

২৬ আসনে সবচাইতে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন নারায়নগঞ্জ-৫ আসনের লাঙলের প্রার্থী সেলিম ওসমান। তার আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা যেমন নেই, তেমনি কোনো বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। ফলে ভোটের মাঠে তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। ভোটের মাঠে একক রাজা হিসেবে প্রচার-প্রচারণাও তেমন ছিল না তার। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে এই আসনে লাঙলের বিজয় নিশ্চিত বলে ধরে নিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা।

পটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি) আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার নির্বাচন করছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন নিজেকে প্রত্যাহার করায় ভোটের মাঠে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে স্বতন্ত্রপ্রার্থীও নেই। জেলা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাওলাদারের নির্বাচন করছেন। তবে তাকে ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন আফজাল হোসেনের সমর্থকেরা। তারা ডাব প্রতীকের নাসির উদ্দিন তালুকদারকে বিজয়ী করতে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের ভোট টানতে পারলে এ আসনে লাঙলের হাওলাদারই বিজয়ী হবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, মহান আল্লাহর রহমতে এলাকাবাসীর ভালোবাসায় ও ভোটে আমি নির্বাচিত হবো।

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর অবস্থান ভালো। জিতে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এখানে আওয়ামী লীগের নৌকা নেই, স্বতন্ত্র কোনো শক্তিশালী প্রার্থীও নেই। ভোটে আছেন স্বতন্ত্র (ঢেঁকি) আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার, স্বতন্ত্র (ট্রাক) জয়নাল আবেদীন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে ভোটে রয়েছেন। ফলে আবারও নির্বাচিত হতে পারেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ) থেকে লাঙ্গল নিয়ে লড়াই করা সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদও কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন হলেন স্বতন্ত্র (ঈগল) আশা মনি, ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) গোপাল চন্দ্র রায় ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের (কুলা) খলিলুর রহমান সরকার।

কুড়িগ্রাম-১ সাবেক সংসদ সদস্য একেএম মোস্তাফিজুর রহমানেরও অবস্থা ভালো। এখানেও স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। তবে ভোটের মাঠে আছেন তরীকত ফেডারেশনের কাজী মো. লতিফুল কবীর (ফুলের মালা), আব্দুল হাই (জাকের পার্টি), নূর মোহাম্মদ (এনপিপি) ও মনিরুজ্জামান খান ভাসানী (একতারা)। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এই এলাকায় একবারেই নেই নির্বাচনের আমেজ।

কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। ইতোমধ্যে নিজের পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ লিখে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। নৌকা প্রত্যাহার হলেও আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন মাঠে। তারা হলেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সিভিল সার্ভিস অফিসার ও বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহাম্মদ গোলাম কবির ভূঁইয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এডিসি মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক এবং নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাহফুজুল হক হায়দার। ফলে, এই আসনে তার অবস্থান অনেকটাই নড়বড়ে। আসনটি চুন্নুর কাছ থেকে পুনরুদ্ধারে শেষ মুহূর্তে একজনের পক্ষে একাট্টা হতে পারেন অন্যপ্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের তিন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিভক্তির সুযোগ নিয়ে জিতে আসতে মরিয়া মুজিবুল হক চুন্নু। সব মিলিয়ে জাপা মহাসচিব ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে স্থানীয় ভোটাররা জানিয়েছেন।

নৌকা প্রত্যাহার হওয়ায় চট্টগ্রাম-৫ আসনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী (কেটলি)। এ ছাড়াও আরেক ছাত্রনেতা নাছির হায়দার করিমও (ঈগল) আছেন মাঠে। এই এলাকায় আওয়ামী লীগের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়া ও কিছু অংশের সমর্থন থাকায় আনিসুল ইসলাম মাহমুদ কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন বলে স্থানীয় জাপা নেতাকর্মীরা মনে করলেও আওয়ামী লীগের দাবি, এবার কিছু নেতাকর্মী ছাড়া অধিকাংশই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে কাজ করছেন। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদের জিতে আসা কঠিন হবে।

ঢাকা-১ আসনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম এমপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের শক্ত প্রার্থী  সালমান এফ রহমানের সঙ্গে। দুজনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে জাতীয় পার্টির নিজস্ব ভোট ব্যাংক কম হওয়ায় সালমার বিরুদ্ধে নৌকা প্রার্থী সালমান এফ রহমান নির্বাচিত হতে পারেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  

ফেনী-৩ (সোনাগাজী ও দাগনভূঞা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাবেক সংসদ সদস্য রহিম উল্লাহ। নৌকা না থাকায় এই আসনে মাসুদ ভোটের মাঠে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। তারপরও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রহিম উল্লাহর পক্ষে কাজ করছেন। তারা মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে ঠেকাতে তৎপর। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির ফেনী জেলার আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন চৌধুরী রাশেদ।

আসন সমঝোতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) পেয়েছেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। তবে তিনি দ্বিমুখী চাপে রয়েছেন। তিনি জিএম কাদেরপন্থি এবং তার শ্বশুর সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল) ভোটের মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। তিনি রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন (কলার ছড়ি)। এখানে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির স্বতন্ত্রপ্রার্থী থাকায় কঠিন চাপে রয়েছেন রেজাউল। বরং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মৃধার পক্ষে কাজ করছেন। রেজাউলকে বহিরাগত প্রার্থী হিসেবে দাবি করে স্থানীয় জাপার নেতাকর্মীরাও তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে এখানে রেজাউলের বেরিয়ে আসা কঠিন হবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক রংপুরে শক্ত। রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও রংপুর সিটির একাংশ) আসন থেকে লাঙ্গল নিয়ে লড়ছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা এইচএম এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার। এখানে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন পার্টির সাবেক মহাসচিব ও বর্তমান সংসদ সদস্য রওশনপন্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান রাঙ্গা (ট্রাক)। এই আসনে ভোটের লড়াইয়ে আছেন গঙ্গাচড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান (কেটলি)। মন্ত্রী ও দীর্ঘদিন সাংসদ থাকার সুবাদে ভোটের মাঠে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন রাঙ্গা। আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় লোকজনও রাঙ্গার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে সমঝোতার প্রার্থী শাহরিয়ারের জেতা সহজ হবে না।

নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রানা মোহাম্মদ সোহেলের বিপরীতে রয়েছেন পাঁচজন শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী। জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য কাজী ফারুক কাদেরসহ (কেটলি) আছেন আওয়ামী লীগের চারজন। সমঝোতার আসন ভাগিয়ে নিলেও এবার ভোটে জয়ী হতে পারবেন কিনা নিশ্চয়তা নেই সোহেলের।

নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর ও কিশোরগঞ্জ) আসনেও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়বেন জিএম কাদেরের ভাগ্নে বর্তমান সংসদ সদস্য আদেলুর রহমান। তবে তার মাথাব্যথার কারণ হবেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন (ট্রাক)।

গাইবান্ধা-২ (গাইবান্ধা সদর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আব্দুর রশীদ সরকারকে লড়তে হবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে নির্বাচনে আসা আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্রপ্রার্থী (ট্রাক) শাহ সারোয়ার কবীরের সঙ্গে।

সাতক্ষীরা-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আশরাফুজ্জামানকে ভোটের মাঠে লড়তে হবে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদের (ঈগল) বিরুদ্ধে। আবার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনছান বাহার বুলবুলেরও (স্বতন্ত্র, কাঁচি) রয়েছে নিজস্ব ভোট।

পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মাশরেকুল আজমকে লড়তে হবে জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রুস্তম আলী ফরাজীর (ঈগল) বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও প্রত্যাহার করা মো. আশরাফুর রহমানের বড় ভাই মো. শামীম শাহনেওয়াজ (কলার ছড়ি) লড়ছেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে পড়তে হবে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। বরং সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন বর্তমান সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী।

ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামও আছেন ভীষণ চাপে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করা স্বতন্ত্রপ্রার্থী হওয়া মাহমুদ হাসানের বিরুদ্ধে কষতে হবে ভোটের অঙ্ক। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এই আসনে মাহমুদ হাসানের নিজস্ব ভোটব্যাংক থাকায় কোণঠাসা বর্তমান এই সংসদ সদস্য। জিতে আসা কঠিন হবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মানিকগঞ্জ-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেলও আছেন দ্বিমুখী চাপে। প্রথমবারের মতো সমঝোতার আসন পেয়ে নির্বাচন করলেও তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন মাহমুদ (ঈগল) লড়ছেন এই আসনে। বর্তমান সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কর্মী-সমর্থকরা হবেন এই এলাকার ভোটের ট্রাম্পকার্ড। সেক্ষেত্রে রুবেলকে সামলাতে হচ্ছে দ্বিমুখী চাপ। 

হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ ও বাহুবল) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরীর দুশ্চিন্তায়। তাকে লড়তে হবে স্বতন্ত্রপ্রার্থী সাবেক সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর (ঈগল) বিরুদ্ধে। এলাকায় তার পরিচিতি ও ভোটব্যাংক নিয়ে চিন্তিত থাকতে হবে লাঙ্গলকে। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মোহাম্মদ শাহেদ (ট্রাক) রয়েছেন নির্বাচনের লড়াইয়ে।

নির্ভার থাকতে পারছেন না বরিশাল-৩ (মুলাদি-বাবুগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আতিকুর রহমান (ট্রাক)।

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ্‌ বর্তমান সংসদ সদস্য। তার বিপক্ষে ভোটের মাঠে লড়ছেন বিএনপির সাবেক নেত্রী বিউটি বেগম (স্বতন্ত্র, ট্রাক)।

বর্তমান সংসদ সদস্য (কুড়িগ্রাম-২) পনির উদ্দিন আহমেদও আছেন চাপের মুখে। ফুলবাড়ী উপজেলার পরিচিত মুখ হামিদুল হক খন্দকার (ট্রাক) প্রস্তুতি নিচ্ছেন চ্যালেঞ্জ জানাতে।

বগুড়া-৩ (আদমদিঘী ও দুপচাঁচিয়া) আসনে নূরুল ইসলাম তালুকদার আছেন ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখে। আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অজয় কুমার সরকার (কাঁচি) আছেন শক্ত অবস্থানে। আবার সাইফুল্লাহ আল মেহেদীর (ট্রাক) আছে এলাকায় জনপ্রিয়তা।

ময়মনসিংহ-৫ আসনেও লড়াইয়ের মুখে রয়েছেন জাতীয় পার্টির সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি। তিনিও মহাসচিবের মতো ‘জাতীয় পার্টি মনোনীত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ প্রার্থী হিসেবে পোস্টার সাঁটিয়েছেন। এ আসনে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট বদর উদ্দিন আহমদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুলকে সমর্থন দিয়েছেন নৌকা পেয়েও প্রত্যাহার করা আবদুল হাই আকন্দ। ফলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে মুক্তি।

চট্টগ্রাম-৮ সমঝোতার আসনে নৌকা প্রার্থী প্রত্যাহার হওয়ায় আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান শিল্পপতি এম এ সালামের বিরুদ্ধে লড়ছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ। আওয়ামী লীগের আরেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। 

সমাঝোতার বাইরে জাপার সাংসদ নাসরিন জাহান রত্না বরিশাল-৬ থেকে লড়ছেন। তিনি দলের সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী। তাকে লড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী আবদুল হাফিজ মল্লিকের সঙ্গে। নৌকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচার প্রচারণায় ভোটের মাঠে সরব ছিলেন তিনি।
নৌকার বিবাদমান পক্ষগুলোকে কাছে টেনে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন রত্না। তবে টানা দুবার সংসদ সদস্য থাকার কারণে এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ী করবেন বলে জানিয়েছেন লাঙলের প্রার্থী নাসরিন হাওলাদার।

আড়াইহাজার আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুর বিরুদ্ধে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড আসনে নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের যুগ্ম মহাসচিব দিদারুল কবির দিদার নৌকা প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন। নৌকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চালিয়েছেন প্রচার প্রচারণা। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে দুজনই বিজয়ী হবেন বলে জানিয়েছেন।  

সারাদেশে একক নির্বাচনের কথা বলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে ২৬ আসনে সমঝোতা করে ২৮৩ আসনে প্রার্থী দিয়েছে বর্তমান সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি। দলটির হেভিওয়েট নেতা সংসদের বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ ছাড়া দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ প্রায় শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা নির্বাচনি লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন। তবে শেষ মুহূর্তে দলের প্রায় ২০জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। আরও বেশ কিছু নেতা আগেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

তিনশ আসনে একক নির্বাচন করে জিতে জাতীয় পার্টি সরকার গঠন করবে বলে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গত পাঁচ বছর ধরে বললেও এবারের নির্বাচনে বিরোধী দল হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। তাদের মধ্যে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী নিজেরা ‘মহাজোট প্রার্থী’ হিসেবে প্রচার চালিয়ে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত জিতবেন কিনা সেই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

তারা//


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়