ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

প্রাণঘাতী আরেক ভাইরাস লাসসা

আফিফা খাতুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রাণঘাতী আরেক ভাইরাস লাসসা

আফিফা খাতুন : পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোয় প্রকোপ বিস্তারকারী এক ভাইরাসের নাম লাসসা।সবচেয়ে বেশি প্রকোপ দেখা যায় বেনিন, গিনি, লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন ও নাইজেরিয়ার কিছু অংশে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাময় কেন্দ্র (সিডিসি) বলছে, লাসসা জ্বরে পশ্চিম আফ্রিকায় প্রতিবছর ১-৩ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়। গড়ে বছরে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এ জ্বরে। নাইজেরিয়ায় চলতি বছরেই তীব্র রক্তপ্রদাহজনিত এ জ্বরে ভুগে মারা গেছে ১০১ জন। ভাইরাসটি সম্পর্কে যা জানা দরকার, তা নিয়েই এ প্রতিবেদন।

 

উৎপত্তি ও নামকরণ

যদিও ১৯৫০-এর দশকেই লাসসা ভাইরাসের কথা শোনা গিয়েছিল, তবে ১৯৬৯ সালের আগ পর্যন্ত ভাইরাসটির আক্রমণে লাসসা জ্বরের রোগী চিহ্নিত হয়নি। সে বছর নাইজেরিয়ায় লাসসা জ্বরের খবর পাওয়া যায়। দেশটির উত্তর-পূর্ব প্রদেশ বর্নোর একটি শহরে লাসসা রোগীর সন্ধান মেলে। ওই শহরের নাম লাসসা। শহরের নামেই ভাইরাসটির বা জ্বরের নাম রাখা হয় লাসসা। লাসসা হলো এক সূত্রক আরএনএ ভাইরাস, যা অ্যারেনাভিরিডি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত।

 

দায়ী ইঁদুর

মাস্তোমিস নাতালেন্সিস নামের ইঁদুর থেকে লাসসার উৎপত্তি। আক্রান্ত ইঁদুরের ছোঁয়ায় কেউ আক্রান্ত হবে না। তবে ওই ইঁদুরের মলমূত্র খাবারে মিশে গেলে, সেই খাবার খেয়ে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। প্রায় ৮০ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আক্রান্তদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনে একজন লাসসা জ্বরে ভুগতে পারে। এতে যকৃৎ (লিভার), প্লিহা ও বৃক্ক (কিডনি) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। সুপরিকল্পিত চলাফেরা করলে এর থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

 

লাসসার কোনো টিকা তৈরি করা সম্ভব হয়নি এখনো। ছবি : উইকিমিডিয়া কমনস

 

 

প্রতিকার

যেহেতু লাসসার কোনো টিকা নেই। তাই এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো সাবধানতা অবলম্বন। আক্রান্ত ইঁদুরকে কোনোভাবেই বাড়িতে প্রবেশ করতে না দেওয়া। আর যেহেতু বোঝার উপায় নেই কোন ইঁদুরটি আক্রান্ত, তাই মাস্তোমিস নাতালেন্সিস জাতের ইঁদুর মাত্রই এড়িয়ে চলতে হবে। কিন্তু পরিবেশ থেকে ইঁদুরকে পুরো নির্মূল করা সম্ভব নয়, ঠিকও নয়। ফলে খাবারদাবার নিরাপদে রাখতে হবে যেখানে ইঁদুর যেতে পারে না। ঘরদোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত কিংবা দেহের কোনো তরল পদার্থ কোনোভাবেই স্পর্শ করা যাবে না। কেননা, এসবে লাসসা জীবাণু থাকে যা ছোঁয়ামাত্র সংক্রমণযোগ্য।

 

আক্রান্ত দেশগুলো থেকে ঘুরে আসা পর্যটকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। পর্যটকের শরীরে লাসসার অস্তিত্ব ধরা পড়লে তাকে আলাদা রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই কেবল ভাইরাসটি পশ্চিম আফ্রিকা থেকে অনত্র ছড়িয়ে পড়তে পারবে না।

 

তথ্যসূত্র : ডব্লিউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা), উইকিপিডিয়া

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ফিরোজ/ এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ