স্পেস স্টেশনের কাচে আঘাত হানল আবর্জনা
মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : মহাকাশে জমা থাকা আবর্জনা নিয়ে বেশ চিন্তিত বিজ্ঞানীরা।
গত ৬০ বছরে বিভিন্ন কারণে মহাকাশে ধ্বংস করা হয়েছে স্যাটেলাইট ও মহাকাশযান। ধ্বংস হওয়া এসব মহাকাশযানের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরছে। এসব কণাকে বলা হয় মহাকাশের আবর্জনা। এর ফলে আমাদের এই পৃথিবীর কক্ষপথের চারপাশ ক্রমশ দূষিত হচ্ছে।
এই মহাকাশ আবর্জনাগুলো দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এগুলো বড় রকম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সম্প্রতি তার শিকার হলো আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন। পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা এই কৃত্রিম উপগ্রহে থাকে মানুষ, চলে গবেষণা। গুরুত্বপূর্ণ এই স্পেস স্টেশনটির জানালার কাচের জানালায় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে ক্ষুদ্র একটি আবর্জনার ধাক্কায়।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের কিউপোলা মডিউলের কাচের জানালায় আঘাত করেছে ছোট্ট একটি স্পেস জাঙ্ক বা আবর্জনা। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিল বানানো ওই মডিউলটি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে লাগানো হয়েছিল ২০১০ সালে। মূলত মহাকাশচারীদের অবসর রুম এটি। এর জানলা দিয়ে স্পষ্ট দেখা যায় পৃথিবীকে। এখানে অবসর সময় কাটান নভোচারীরা। এখান থেকে ছবি তুলে পাঠান পৃথিবীতে।
আবর্জনার আঘাতে কাচে ফাটলের ছবি তুলে পাঠিয়েছেন ব্রিটিশ মহাকাশচারী টিম পিক। তাতে স্পষ্ট দেখা গেছে, ৭ মিলিমিটার চওড়া ফাটল। তবে এই ধরনের ছোটখাটো বস্তু আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, স্পেস স্টেশনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত জায়গায় রয়েছে অতিরিক্ত শক্তপোক্ত আবরণ। তবে বড় কিছু এসে ধাক্কা মারলে বিপর্যয় অনিবার্য।
পাশাপাশি ধারণা করা হচ্ছে, এমন একদিন আসবে যখন এই আবর্জনার ফলে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে বস্তুর ঘনত্ব অনেক বেড়ে যাবে যাতে অনেক সংঘর্ষ ঘটবে এবং প্রতিটি সংঘর্ষের ফলে বিপুল পরিমাণ মহাকাশ আবর্জনার সৃষ্টি হবে। সৃষ্ট মহাকাশ আবর্জনাগুলোর কারণে আরো বেশি সংঘর্ষ ঘটবে যা ‘কেসলার ইফেক্ট’ নামে পরিচিত।
যার ফলস্বরুপ এক সময় প্রকৃতপক্ষে মহাকাশে যান পাঠানোই অসম্ভব হয়ে যাবে। কারণ মহাকাশ আবর্জনার কারণে তা যাত্রা করার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যাবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মে ২০১৬/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম