মঙ্গলের রহস্যময় দরজা ও আরো কিছু!
২০১৪ সালে রহস্যময় আলো দেখার দাবি উঠেছিল। তবে নাসার বিজ্ঞানীরা জানান, সূর্যকে প্রতিফলিত করা শিলার আভা
আমাদের সৌরজগতে পৃথিবী ছাড়া অন্য যে গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার ধারণা করা হয়, সেটি হলো মঙ্গল গ্রহ। প্রাচীনকাল থেকেই এই লাল গ্রহটি রহস্যের জন্ম দিয়ে আসছে।
অনেক গবেষক বলেন, মঙ্গল গ্রহে অনেক আগেই হয়তো সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। ভয়াবহ এক যুদ্ধে সেই সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেছে। কোনো কোনো গবেষকের মতে, হয়তো এই মঙ্গলগ্রহ থেকেই মানুষ এসে পৃথিবীতে জীবনের বিকাশ ঘটিয়েছে। সেসব ধারণা এখনো অপ্রমাণিত, তেমনি অপ্রমাণিত গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব আদৌ আছে বা ছিল কি না।
তবে কয়েক বছর আগে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক তথ্য বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। মঙ্গলের মাটির নিচে প্রথমবারের মতো পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সেই পানি বরফ আকারে আছে মাটির নিচে। গবেষকরা বলছেন, পানির অস্তিত্ব থাকা মানে মঙ্গলে ছোট বা ক্ষুদ্র আকারের প্রাণি থাকার সম্ভাবনা তৈরি হলো। তাই মঙ্গলের রহস্য উন্মোচনে বেশ কয়েক বছর ধরেই গবেষণা চালাচ্ছে নাসা।
এরই মাঝে বেশ কয়েকটি মহাকাশ যান গ্রহটিতে পাঠানো হয়েছে, যেগুলো মঙ্গলগ্রহের অদ্ভুত সব ছবি পাঠিয়ে চমকে দিচ্ছে। পুওর কিউরিসিটি, পারসিভারেন্স রোভার নামের দুটি মহাকাশ যান কয়েক বছরে অসংখ্য ছবি পাঠিয়েছে। সেগুলোর মাঝে এমন কিছু ছবি দেখা গেছে, যা দেখে গ্রহটিতে অ্যালিয়েন বা প্রাণির অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে ধারণা গাঢ় হয়েছে ইউএফও বিশেষজ্ঞদের মনে।
যেমন সম্প্রতি তেমনই একটি ছবি বিশ্বজুড়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। কিউরিসিটি মহাকাশ যান গ্রহটির মাউন্ট শার্পের একটি পাথরে একটি দরজার মতো অবয়ব দেখতে পেয়েছে, যা দেখতে দরজার মতো। সুন্দর করে পাথর কেটে যেন দরজা তৈরি করেছে কেউ! চলতি মাসের ৭ তারিখে ছবিটি প্রকাশের পর সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়। তবে নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি আসলে ১১ ইঞ্চি বাই ১৭ ইঞ্চি আয়তনের ছোট একটি অবয়ব, যা পেরিডোলিয়া বা এক ধরনের দৃষ্টি বিভ্রম তৈরি করেছে।
মঙ্গলে এ ধরনের দৃষ্টি বিভ্রমের ঘটনা নতুন নয়। মহাকাশযানের পাঠানো ছবি দেখে এ ধরনের অনেক দৃষ্টি বিভ্রম তৈরি হয়েছে বিশ্ববাসীর। ফেইস অন মার্সের কথা বলা উচিত আগে। ১৯৭৬ সালে ভাইকিং ওয়ান মহাকাশ যানের পাঠানো ছবিতে মঙ্গলের বুকে মানুষের চেহারার মতো একটি ছবি দেখে বিশ্ববাসী অবাক হয়ে যায়। পরে নাসার বিজ্ঞানীরা জানান এটি আসলে একটি পাহাড়ের উপরের অংশ, ধীরে ধীরে তার আকার পাল্টেছে।
২০০৭ সালে মহাকাশ যান রোভার স্পিরিট মঙ্গল থেকে একটি ছবি পাঠায় যা দেখতে বসে থাকা একটি নারীর মতো দেখাচ্ছিলো!
আরেকটি ছবিতে পাথরের উপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি কালো বর্ণের নারীর অবয়বও বিভ্রম তৈরি করে মানুষের মনে।
২০১৬ তে কিউরিসিটির পাঠানো একটি ছবি বেশ চমকে দিয়েছে সবাইকে। ছবিতে পাথরের মাঝে যেন একটি মাছের ফসিল দেখতে পেয়েছে বিশ্ববাসী! এছাড়া মঙ্গলে চামচ, বল, সাপের মতো নানা অবয়বও দেখা গেছে।
দু’ বছর আগে পার্সিভারেন্স রোভারের পাঠানো এক ছবিতে অ্যালিয়েনের মাথার খুলি দেখা গেছে দাবি করেছে অনেক ইউএফও গবেষক।
পাথরের উপর শুয়ে থাকা মানুষের মতো একটি অবয়বও দেখা গেছে এক ছবিতে!
ইউএফও গবেষকদের মতে, এতো সব ছবি এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে হয়তো মঙ্গলে আমাদের মতো প্রাণির অস্তিত্ব আছে, যাদের সঙ্গে শিগগিরই দেখা হতে চলেছে আমাদের। তবে নাসার বিজ্ঞানীরা ইউএফও বিশেষজ্ঞদের এমন দাবির সঙ্গে বরাবরই দ্বিমত পোষণ করে আসছে এবং এসব ছবিকে দৃষ্টি বিভ্রম বলে দাবি করেছে।
/ফিরোজ/