ঢাকা     শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

ভার্চুয়াল জগতকে বাস্তবে রূপ দেবে ‘মেটাভার্স’

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৭ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ২০:৪৭, ৭ মার্চ ২০২৩
ভার্চুয়াল জগতকে বাস্তবে রূপ দেবে ‘মেটাভার্স’

মেটাভার্সের কারণে ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে বাস্তব জগতের মতো, যেখানে মানুষের যোগাযোগ হবে বহুমাত্রিক। মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো কিছু শুধু দেখায় যাবে না, তাতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলা যাবে। মেটাভার্স প্রযুক্তিকে আপাতত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর-এর কোনো সংস্করণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এটি আসলে তার চেয়েও অনেক বেশি। এই প্রযুক্তির ফলে অনলাইনের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবীর মতো।

সোমবার (৬ মার্চ) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পেশাজীবীদের সংগঠন সিটিও ফোরাম ও প্রযুক্তি সংবাদিকদের সংগঠন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড (টিএমজিবি) বাংলাদেশের সহযোগিতায় রাজধানীর কাওরান বাজারের ভিশন টাওয়ারে মেটাভার্সের উপর এক সেমিনারে এই কথাগুলো বলেছেন সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার।

সিটিও ফোরামের মহাসচিব আরফে এলাহী মানিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএসডি রির্সাচ অ্যাসোসিয়েট অ্যান্টনি ক্লেমন্স।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার। সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির কম্পিউটার সায়েন্সের ডিরেক্টর প্রফেসর ড. দীপ নন্দী ও আমেরিকা প্রবাসী শিক্ষাবিদ ও ই-লার্নিং বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল হুদা খান। আরও উপস্থিত ছিলেন টিএমজিবির সভাপতি মোহাম্মদ কাওসার উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বলেন, মেটাভার্সের জন্য নতুন কিছু লাগবে না, লাগবে শুধু মেধা। শিক্ষার্থীদের এই সেক্টরে আগ্রহী করে তুলতে হবে। দুনিয়া দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তিকে বাদ দেওয়া সুযোগ নেই। কানেক্টিভিটিতে দুর্বল থাকলে মেটাভার্সের যুগে ভালাে করার সুযোগ থাকবে না। তাই কানেক্টিভিটিতে সরকার কাজ করছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও  সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার বলেন, মেটাভার্স প্রযুক্তি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ইন্টারনেটের গতি আরও দ্রুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে ফাইভ-জি পুরোদমে বাজারে আসার পরেই, সব সমস্যার সমাধান ঘটবে। ১০ বছর আগে মেটাভার্স একটি ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে এটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আগামী এক/দুই বছর পরে দেখবেন যে আমরা মেটাভার্সের জগতে প্রবেশ করে ফেলবো।

সিটিও ফোরামের মহাসচিব আরফি এলাহী বলেন, মেটাভার্সকে থ্রি-ডি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড বলতে পারেন। স্ক্রিনে এখনকার বেশিরভাগ স্পেস হচ্ছে টু-ডি বা দ্বিমাত্রিক। কিন্তু মেটাভার্স জগতে আমাদের অভিজ্ঞতা হবে থ্রি-ডির মতো। টেলিফোনে কারো সঙ্গে কথা বললে মনে হবে সামনা-সামনি আলাপ করা হচ্ছে।

শিক্ষাবিদ ও ই-লার্নিং বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল হুদা খান বলেন, বিশ্বের সঙ্গে আমরা যদি মেটাভার্সে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে না পারি, তাহলে উন্নত প্রযুক্তিতে আমরা পেছনে পড়ে যাবাে। সরকারকে এই সেক্টরে এগিয়ে আসতে। মেটাভার্সের ফলে এডুকেশন সেক্টরে বিপুল পরিবর্তন আসবে। সবাই যেন মেটাভার্স ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

বক্তারা বলেন, মেটাভার্সের ব্যবহার পুরোদমে শুরু হয়ে গেলে বাংলাদেশেও ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এই প্রযুক্তির ফলে অনলাইনের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবী। বর্তমানে ভিআর বেশিভাগ ক্ষেত্রে অনলাইন গেমিং-এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু মেটাভার্সের ব্যবহার হবে সকল বিষয়ে- অফিসের কাজ থেকে শুরু করে খেলা, কনসার্ট, সিনেমা, এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার বেলাতেও।

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়