ঢাকা     রোববার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৪ ১৪৩১

‘মোবাইল ডেটা প্যাকেজ সীমিতকরণে প্রান্তিক মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০২, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩   আপডেট: ১৭:৪৮, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
‘মোবাইল ডেটা প্যাকেজ সীমিতকরণে প্রান্তিক মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহার বাধাগ্রস্ত করবে’

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল ডেটা প্যাকেজ সীমিতকরণের নতুন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- তা ‘গ্রাহক বান্ধব’ নয় বলে মনে করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি।

ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণকারী সংস্থাটি বলছে, দেশের ১১ কোটি ৮৮ লাখ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৬৯ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য তিন বা সাত দিনের প্যাকেজ নেন। এই ডেটা প্যাক বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। একই সঙ্গে ১৫ দিন মেয়াদের প্যাকেজও বন্ধ করাসহ প্যাকেজের ধরন ও প্রমোশনাল এসএমএসের সংখ্যা কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিটিআরসির নতুন সিদ্ধান্ত গ্রাহক বান্ধব নয়। এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সীমিত করবে এবং সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হবে।

বিটিআরসি কর্তৃক মোবাইল ইন্টারনেটের নতুন প্যাকেজ ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার বিবৃতি দিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান প্রমুখ। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মানুষ তাদের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের ডেটা প্যাক কিনেন। তাদের বড় অংশই কিনেন স্বল্প মেয়াদের প্যাকেজ এবং প্রান্তিক পর্যায়ে ছোট ছোট ডেটা প্যাকের চাহিদা বেশি। দেশে ও প্রবাসে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নিতে ৩ দিন মেয়াদের ডেটা প্যাকেজ অধিকাংশ গ্রাহকের পছন্দ। প্রান্তিক পর্যায়ের সাধারণ মানুষ, শ্রমজীবী, বেকার, শিক্ষার্থী এমনকি নিম্ন আয়ের মানুষরা মোবাইল ইন্টারনেটের বড় গ্রাহক। এ সব গ্রাহকদের চাহিদাও ভিন্ন ভিন্ন। দেশের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ গ্রাহক ছোট ছোট প্যাকেজগুলো সাশ্রয়ী ও কম টাকায় সামর্থ্য অনুযায়ী কিনতে পারেন।  

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিটিআরসি সীমিত ও প্রান্তিক মানুষের সামর্থ্যের কথা চিন্তা না করে ৩ দিনের প্যাকেজ বন্ধ করে কার স্বার্থ রক্ষা করছে? প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের ইন্টারনেট সুবিধা বন্ধ করতে কী এই আয়োজন কিনা? তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। কারণ সীমিত আয়ের এমনকি শিক্ষার্থী বেকার তরুণ-তরুণী ও শ্রমজীবীদের পক্ষে ২০০ বা ৩০০ টাকা দিয়ে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব নয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করেছেন। আগামীতে সরকার যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে যাচ্ছে, সেখানে দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে সরকার ডিজিটাল সেবার আওতায় আনতে বদ্ধ পরিকর। বিটিআরসির এই সিদ্ধান্ত সরকারের পরিকল্পনার শুধু প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না, এটা উল্টো পথে হাঁটার ইঙ্গিত বহন করছে। আর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের বিপুল পরিমাণ মানুষ সরকারের ডিজিটাল সেবা থেকে বঞ্চিত হবে।

সংগঠনটি মনে করে, বড় ডেটা প্যাকেজগুলো রেখে ছোট প্যাকেজগুলো বাতিল করা হলে বড় বড় কর্পোরেটগুলোর সুবিধা হবে একই সঙ্গে মোবাইল অপারেটররা লাভবান হতে পারেন। কিন্তু রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের কোনও অধিকার হরণ বা অধিকার ভোগ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা জনগণের করের টাকায় বেতন-ভাতা ভোগকারী কোনও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমীচীন নয়।’ তাই অবিলম্বে ব্রডব্যান্ডের মতো এক দেশ এক রেট, মোবাইল অপারেটরদের প্যাকেজের মূল্যের সামঞ্জস্যতা আনা, অব্যবহৃত ডাটা ফেরত পাওয়া ও যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সব শ্রেণীর গ্রাহকের মতামত নেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়