ঢাকা     বুধবার   ১৫ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

দিল্লিতে ‘দূষণের’ সঙ্গেও লড়তে হবে বাংলাদেশকে!

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৪, ২৭ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দিল্লিতে ‘দূষণের’ সঙ্গেও লড়তে হবে বাংলাদেশকে!

ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ু দূষণের বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’। ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে থাকার কথা ২০১৭ সালের ঘটনা।

সেবার দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নেমে বায়ু দূষণের কারণে কী সমস্যাতেই না পড়েছিল শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটরার। ফেস মাকস পরে খেলতে নেমেও অসুস্থবোধ করেছিলেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার।

সেই মাঠেই ৩ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। তার ওপর আজ থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্যামা পূজা তথা দীপাবলি (দিওয়ালী) উৎসব। পরবর্তী কয়েকদিন দিল্লি শহরে নিঃসন্দেহে প্রচুর মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানো হবে। সেটার প্রভাব পড়বে বায়ুর ওপর। সেক্ষেত্রে বেড়ে যাবে দিল্লির বায়ু দূষণের মাত্রা।

দিওয়ালীর সময় দিল্লির ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই)’ খুবই খারাপ থাকে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, ০-৫০ কে ধরা হয় ভালো। ৫১-১০০ কে ধরা হয় সন্তোষজনক। ১০১-২০০ পর্যন্ত ধরা হয় মডারেট হিসেবে। ২০১-৩০০ কে ধরা হয় খারাপ হিসেবে। আর ৩০১-৪০০ কে ধরা হয় খুবই খারাপ হিসেবে। যদি ৪০০ ছাড়িয়ে যায় তাহলে মারত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা থাকে।

সবশেষ গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বাতাসের কোয়ালিটি পরীক্ষায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাতাসের একিউআই ছিল ৩৫৭! যা খুবই খারাপ। দিওয়ালী পরবর্তী সময়ে এটা আরও বাড়তে পারে।

অবশ্য ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) ও দিল্লি জেলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (ডিডিসিএ) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বায়ু দূষণ এমন একটি বিষয় যেটার ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা আশা করছে, দিওয়ালীর প্রায় এক সপ্তাহ পরে যেহেতু ম্যাচটি হবে তখন হয়তো বায়ু দূষণের মাত্রাটা কম থাকবে। তার ওপর যেহেতু রাতে খেলা হবে তাতে সমস্যা না হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তারা। তারপরও বাংলাদেশকে তারা প্রয়োজনীয় মাকস নিয়ে যেতে বলবে। যাতে প্রয়োজন হলে তারা সেগুলো ব্যবহার করতে পারে।

 

 

এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের একজন কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেছেন, ‘দিল্লিতে দিওয়ালী পরবর্তী বায়ু দূষণের একটা সমস্যা আমাদের রয়েছে। তবে ম্যাচটি যেহেতু দিওয়ালীর প্রায় এক সপ্তাহ পরে, সেহেতু আমরা আশাবাদী যে খেলোয়াড়রা কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে না। তারপরও বাংলাদেশ দলকে ফেস মাকস নিয়ে আসতে বলা হবে। যাতে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে সেগুলো ব্যবহার করা যায়।’

কিন্তু ভারতে তো ভেন্যুর অভাব নেই! তারা কি অন্য ভেন্যুতে এই ম্যাচ আয়োজন করতে পারত না? অবশ্য বিসিসিআইয়ের রোটেশন পদ্ধতি অনুযায়ী বাংলাদেশের এই ম্যাচটি দিল্লিতেই নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ দল উত্তর থেকে শুরু করে পশ্চিম দিয়ে সিরিজ শেষ করে দেশে ফিরে আসবে। বাংলাদেশ দল ঢাকা থেকে সরাসরি দিল্লিতে যাবে। সেখানে খেলার পর নাগপুর, রাজকোট, ইন্দোর হয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলাকাতায় যাবে। সেখানে শেষ টেস্ট খেলে তারা দেশে ফিরে আসবে। বাংলাদেশ দলের ভ্রমণ জটিলতা এড়াতেই এভাবে সূচি নির্ধারণ করেছে বিসিসিআই।

দিল্লির দূষণের মাত্রা যাতে খুব বেশি না বাড়ে সে জন্য পার্শ্ববর্তী পাঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রদেশের কৃষকদের পরবর্তী তিন সপ্তাহ পাটখড়ি পোড়ানো থেকে বিরত থাকতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবেশ বিষয়ক সচিব সিকে মিশ্র বলেছেন, ‘আমরা পাঞ্জাব ও হরিয়ানাকে বলেছি পরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ কিছুদিন যাতে পাটখড়ি না পোড়ানো হয়। বিশেষ করে পরবর্তী তিন সপ্তাহ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২৬ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর।’

এখন দেখার বিষয় দিল্লিতে হতে যাওয়া প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের পাশাপাশি দূষণের সঙ্গে লড়াই করে কতটা সফল হয় বাংলাদেশ।


ঢাকা/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়