লেভানদোভস্কির কাছে ‘খারাপ শিক্ষক’ ক্লপ
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা দুই ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু তাদের পাশাপাশি এখন আলোচনায় গত বছরের উয়েফা ও ফিফা বর্ষসেরা রবার্ট লেভানদোভস্কি। পোলিশ স্ট্রাইকারের এই পর্যায়ে আসতে বর্তমান লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের অবদান অনস্বীকার্য। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে জার্মান কোচের অধীনে খেলেছিলেন লেভানদোভস্কি। অথচ ক্লপকে একজন ‘খারাপ শিক্ষক’ হিসেবে দেখেন তিনি!
জিজ প্রুজকোভ ও লেখ পোজনানের হয়ে নিয়মিত গোল করে ক্লপের নজর কাড়েন লেভানদোভস্কি। ২০১০ সালে তাকে সিগনাল ইদুনা পার্কে পাড়ি জমান। সেখানে শুরুতে মতের বাইরে ১০ নম্বর জার্সি পান। ক্লপের অধীনে ট্রেনিংয়ে বেশ কঠিন সময় পার করেছেন লেভানদোভস্কি।
তৎকালীন ডর্টমুন্ড কোচের সঙ্গে মিলছিল না তার। প্রায় জিজ্ঞাসা করতেন, কী চান তার কাছে? শুরুটা মসৃণ না হলেও পোলিশ স্ট্রাইকার ঠিক জ্বলে ওঠেন। বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেওয়ার আগে জেতেন দ্বিতীয় বুন্দেসলিগা শিরোপা।
ক্লপের সঙ্গে শুরুতে সম্পর্ক তিক্ত হলেও আস্তে আস্তে তা গাঢ় হতে থাকে। প্লেয়ার্স ট্রিবিউনকে লেভানদোভস্কি বলেছেন, ‘ইয়ুর্গেন ক্লপ কেবল আমার বাবার মতো ছিলেন না। একজন কোচ হিসেবে তিনি আমার কাছে ছিলেন খারাপ শিক্ষকের মতো। ভালো অর্থেই কিন্তু আমি এটা বলছি।’
ব্যাখ্যা দিলেন তিনি, ‘আমাকে বলতে দিন। একটু চিন্তা করুন তো আপনার স্কুলের দিনগুলোর কথা। কোন শিক্ষক আপনাকে সবচেয়ে বেশি মনে রাখেন? তিনি কিন্তু নন, যিনি আপনার জন্য জীবন সহজ করে দেবেন এবং কোনও কিছু প্রত্যাশা করবেন না। না, না, না। আর খারাপ শিক্ষকটির কথা মনে করুন, যে সারাক্ষণ আপনাকে শাসানির মধ্যে রাখতো। যিনি আপনাকে চাপে রাখতেন এবং আপনার সেরাটা বের করে আনতে সবকিছু করতেন। ওই শিক্ষকই আপনাকে আরও ভালো করে গড়ে তোলে, ঠিক কি না? ইয়ুর্গেন ছিলেন তেমন।’
ক্লপের কোচিংয়ে মুগ্ধ লেভানদোভস্কি, ‘তিনি আপনাকে বি গ্রেডের ছাত্র হতে দেবেন না। ইয়ুর্গেন চান এ প্লাস ছাত্র। তার জন্য নয়, আপনার জন্যই এমনটা চান। আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন তিনি। যখন আমি ডর্টমুন্ডে যাই, খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু করতে চেয়েছিলাম: শক্তিশালী পাস, একবার স্পর্শ করা। ইয়ুর্গেন আমাকে শান্ত থাকতে বললেন, প্রয়োজনে দুইবার বলে স্পর্শ করতে হবে। এটা ছিল আমার প্রকৃতির বাইরে, কিন্তু দ্রুত আমি বেশি গোল পেতে শুরু করলাম। যখন আমি অভ্যস্ত হয়ে গেলাম, তখন তিনি আমাকে আবার গতি বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ দিলেন। একবার স্পর্শ করলাম, বাহ। গোল।’
ঢাকা/ফাহিম