টেস্ট অবসর নিয়ে ‘অতি শিগগিরই’ কথা বলবেন মাহমুদউল্লাহ
আবারো অপেক্ষায় রাখলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ক্রিকেট থেকে তার অবসর নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে না আসায় তাকে সরাসরি প্রশ্নের সুযোগও ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টির আগে তাকে পাওয়া গেল।
সংবাদ সম্মেলনে প্রথম প্রশ্নই হলো তার টেস্ট অবসর নিয়ে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ মুখে কলুপ এঁটেছেন! আশা দেখিয়ে বলেন, ‘একটা ব্যাপার আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই, শুধুমাত্র এই সিরিজটি নিয়ে এখন আমার ভাবনা। এ বিষয়ে (অবসর) ইনশাল্লাহ আপনাদেরকে আমি অতি শিগগিরই বিস্তারিত জানাতে পারব।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্টর তৃতীয় দিনের সকালে মাহমুদউল্লাহ ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের জানান, এই টেস্টের পর সাদা জার্সি তুলে রাখবেন। সেদিনের ম্যাচ শেষে তার অবসরের সিদ্ধান্তের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানাননি তিনি। বিসিবি থেকেও আসেনি কোনো ঘোষণা।
ম্যাচের পঞ্চম দিন সকালে মাহমুদউল্লাহকে গার্ড অব অনার দেন সতীর্থরা। বিসিবি বলছে, এ আনুষ্ঠানিকতাও তাদেরকে না জানিয়ে হয়েছে।
ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে মাহমুদউল্লাহ দলে ফেরেন ১৬ মাস পর। ফিরেই ১৫০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেছেন। শেষটা রাঙালেও তার ক্যারিয়ার অনেকটাই বিবর্ণ। ৫০ ম্যাচে ৯৪ ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর রান ২৯১৪। ৩৩.৪৯ গড়ে ৫ সেঞ্চুরি ও ১৬ হাফসেঞ্চুরি আছে তার নামের পাশে। এছাড়া ৬৬ ইনিংসে বোলিং করে ৪৩ উইকেট নিয়েছেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে বলা হয়েছিল মাহমুদউল্লাহকে। বাদ দেওয়া হয়েছিল লাল বলের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে। ১৬ মাস পরে টেস্ট দলে আকস্মিকভাবে সুযোগ পান তিনি। জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য টেস্ট দলে তিনি ছিলেন না। কিন্তু সফরে যাওয়ার আগে দলের শীর্ষ দুই ব্যাটসম্যান ইনজুরিতে থাকায় তাদের সম্ভাব্য ব্যাকআপ হিসেবে তাকে নেওয়া হয়। দলে ফিরে একাদশে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেন।
প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে খাদের কিনারা থেকে উদ্ধার করে ১৫০ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন। এই সেঞ্চুরির পরই সতীর্থদের কাছে তিনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত জানান।
টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা এই ইনিংসে মিলেছে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার। দলও জিতেছে। নিজের ব্যক্তিগত অর্জনও হয়েছে। এর চাইতে বেশি কিছু মাহমুদউল্লাহ আর কী প্রত্যাশা করতে পারেন? সব মিলিয়ে মাহমুদউল্লাহ বেশ তৃপ্ত। তবে দল জেতায় এবং সবার মুখে হাসি থাকায় তার আনন্দ বেশি। সেদিন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তিনি বলেন, ‘সব সময় একজন টিমম্যান হয়ে দলে জন্য অবদান রাখতে পছন্দ করি। আমরা ম্যাচটা জিতেছি এবং দলের প্রত্যেকের মুখে হাসি দেখে ভালো লাগছে।’
সেদিন পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তাকে অবসর নিয়ে প্রশ্ন করা হয়নি। নিজ থেকেও কিছু বলেননি মাহমুদউল্লাহ। এমনকি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট দলের অধিনায়ক মমিনুল হকও একসময় মাহমুদউল্লাহর অবসর প্রসঙ্গে জানান, ‘নো কমেন্টস’।
ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম