একটি নক্ষত্রের জন্ম হলো
বিস্ময়কর, অসম্ভব, উল্কার মতো উজ্জ্বল ও ক্ষণস্থায়ী, অবিশ্বাস্য। নিজের মতো করে একটি বিশেষণ জুড়িয়ে দিতে পারেন। আসলে এম্মা র্যাডুকানু যা অর্জন করেছেন, তা এসব বিশেষণের কাছে ম্লান হয়ে যাবে। কোয়ালিফাইং শেষ হওয়ার দিন ধরে রেখে যুক্তরাজ্যে ফেরার টিকিট কেটে রেখেছিলেন। ১৭ দিন পর হাজার হাজার দর্শককে তাক লাগিয়ে তিনিই হাতে নিলেন ট্রফি।
শুধু কোয়ালিফাইং নয়, পুরো ইউএস ওপেনে দাপট দেখান র্যাডুকানু। ফাইনালে ওঠার পথে একটি সেটও হারেননি। তাকে পার করতে হয়েছে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন বেলিন্ডা বেনচিক ও ফর্মে থাকা মারিয়া সাক্কারির মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে। গত উইম্বলডন দিয়ে প্রথমবার গ্র্যান্ড স্লাম খেলেন, শেষ হয় চতুর্থ রাউন্ডে। মাসখানেকের ব্যবধানে নিউ ইয়র্কে ট্রফি জিতে গড়লেন অগণিত রেকর্ড।
৪৪ বছরের মধ্যে প্রথম ব্রিটিশ নারী হিসেবে গ্র্যান্ড স্লাম জিতলেন র্যাডুকানু। ১৯৭৭ সালে শেষবার ব্রিটিশ নারী হিসেবে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভার্জিনিয়া ওয়েড গ্যালারি থেকে স্বাক্ষী ছিলেন এই নক্ষত্রের উত্থানের দিনে। উন্মুক্ত যুগে প্রথম কোয়ালিফায়ার হিসেবেও স্লাম জিতেছেন ১৮ বছর বয়সী র্যাডুকানু। ২০০৪ সালে উইম্বলডন বিজয়ী মারিয়া শারাপোভার পর সর্বকনিষ্ঠ নারী গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়নও তিনি।
অবিশ্বাস্য এক ইতিহাস গড়ে ১৮ লাখ পাউন্ড প্রাইজমানি নিয়ে ঘরে ফিরছেন র্যাডুকানু। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ১৫০ নম্বর থেকে উঠে গেলেন ২৩ নম্বরেও। সঙ্গে পেলেন অগুণতি প্রশংসা আর স্তুতি। টেনিস কিংবদন্তি মার্টিনা নাভ্রাটিলোভা বলেছেন, ‘একটি নক্ষত্রের জন্ম হলো। এম্মা র্যাডুকানু ইতিহাস গড়ল এবং এটা তো তার কেবল শুরু।’
সাবেক ব্রিটিশ এক নম্বর গ্রেগ রুসেডস্কি বলেছেন, ‘সে বহু গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী হতে যাচ্ছে, বিশ্বের এক নম্বরও। ১৮ বছর বয়সী একজন এই ইভেন্ট জেতায় মনে হচ্ছে শান্তির বাতাস বইছে হৃদয়ে।’
ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অভিনন্দনও পেয়েছেন র্যাডুকানু, ‘তোমার সাফল্যের জন্য তোমাকে আমার অভিনন্দন জানাই। এত অল্প বয়সে এমন অর্জন অবিস্মরণীয়। এটা তোমার কঠোর শ্রম আর বিসর্জনের স্বাক্ষ্য দেয়।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই তোমার প্রতিপক্ষ লেইলা ফের্নান্দেজের বিপক্ষে তোমার অসাধারণ পারফরম্যান্স টেনিস খেলোয়াড়দের পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের টুইট, ‘কী চাঞ্চল্যকর ম্যাচ। এম্মা র্যাডুকানুকে অনেক অনেক অভিনন্দন। আমরা সবাই তোমাকে নিয়ে খুব গর্বিত।’
ঢাকা/ফাহিম