ঢাকা     শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৯ ১৪৩১

একই ‘ক্রাইম’ দুইবার কেন?

ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ১১ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ২১:৩৭, ১১ এপ্রিল ২০২২
একই ‘ক্রাইম’ দুইবার কেন?

‘বিদেশে এসে স্পিনারদের উইকেট দেওয়া বিরাট বড় একটা ক্রাইম’- ডারবান টেস্টে স্পিনারদের বিরুদ্ধে খাবি খাওয়ার পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক ঠিক এভাবেই বলেছেন। কিন্তু পোর্ট এলিজাবেথেও সেই স্পিন বিষেই নীল হয়েছে বাংলাদেশ। মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘অভিজ্ঞ’ ব্যাটিং লাইনআপ। দেশের ক্রিকেটে এত এত স্পিনারদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত খেলার পর বিদেশের মাটিতে স্পিনে এমন বেহাল দশা কেন?

বিদেশের মাটিতে স্পিনারদের উইকেট বিলিয়ে দেওয়া নিয়ে মুমিনুল বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, বিদেশে এসে আপনি স্পিনারদের উইকেট দিতে পারবেন না। এ কারণে দায়টা আমারই সবচেয়ে বেশি। ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদেশে এসে কোনোভাবেই স্পিনারদের উইকেট দেওয়া যাবে না।’

সংবাদমাধ্যমে এমন কথা বললেও আদতে নিজেদের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন আনেননি মুমিনুলরা। ডারবানে স্পিনে ভরাডুবির পর পোর্ট এলিজাবেথেও পুনরাবৃত্তি। দুই ইনিংসে ২০ উইকেটের মধ্যে ১৫ উইকেটই নিয়েছেন দুই স্পিনার কেশব মহারাজ ও সিমন হার্মার। ডারবানের মতো এখানেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়েছেন মহারাজ। দুই টেস্টের ৪০ উইকেটের মধ্যে ২৯ বারই এই দুই স্পিনারের কাছে ধরা খেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

আরো পড়ুন:

কী বলছেন মুমিনুল? উইকেটের ভিন্নতার সঙ্গে মুমিনুলের কাছে স্পিনের ধরনের পার্থক্যও ধরা পড়েছে। অর্থাৎ তাইজুল-মিরাজরা যেমন বোলিং করেন তেমন বোলিং করেন না মহারাজ-হার্মাররা।

অধিনায়ক বললেন, ‘আমাদের উইকেট আর এখানকার উইকেটের একটু ভিন্নতা আছে। উপমহাদেশে যারা বোলিং করে তারা সাইড স্পিন করে, যেটা আমাদের দেশে খুব কাজে দেয়। এটা আমাদের দেশে ও উপমহাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই সব সাইড স্পিন খুব একটা কাজে দেয় না। এখানে ওভার হেড স্পিন কার্যকর।’

সাইড স্পিন বলতে বোঝানো হয়েছে, আড়াআড়িভাবে বল ডেলিভারি করা, ঘোরানো। আর ওভারহেড মাথার ওপর দিয়ে বল ডেলিভারি করা, ঘোরানো।

মুমিনুলের কথা, ‘আমাদের বোলাররা হয়তো কন্ডিশনের জন্য সাইড স্পিন করে। এখানে এসে ওরা ওভারহেড স্পিন করবে (এত সহজ নয়)। ওভারহেড স্পিনের জন্য টেকনিক্যাল পরিবর্তন করতে হয়। তখন তার আগের টেকনিকে সমস্যা হতে পারে। আর ঘরোয়া ক্রিকেটের স্পিনার এবং আন্তর্জাতিক স্পিনারের মানে অনেক পার্থক্য আছে।’

আফ্রিকায় সফরের আগে বগুড়ায় ক্যাম্প করেছিল বাংলাদেশ। উদ্দেশ্য একটাই ভালো করা। এ ছাড়া ওয়ানডে দল যখন সিরিজে ব্যস্ত তখনো টেস্ট দল ব্যস্ত ছিল নিবিড় অনুশীলনে। এত আগে যাওয়ার পরও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি, উইকেট বুঝতে পারেননি মুমিনুলরা। পেস সহায়ক উইকেটে খেলার প্রস্তুতি নিয়ে ধারাশায়ী হতে হয়েছে স্পিনে।

মহারাজ-হার্মাররা এতটা দুর্দান্ত বোলিংও করেননি। মুমিনুল-মুশফিকরা উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার কারণে স্পিন আরো দুর্বোধ্য মনে হয়েছে। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী না খেলে কেউ আউট হয়েছেন সুইপ করতে গিয়ে, কেউ স্লগ খেলতে গিয়ে, আবার কেউ এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে। সবকিছু মিলিয়ে স্পিন খেলায় দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছেন তারা।  

এর আগে স্পিনে উইকেট দেওয়াকে অপরাধ বললেও এবার মুমিনুল বলছেন ভিন্ন কথা, ‘এটা তো আগে থেকেই সবাই জানে। উঁচু মানের স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে আমরা ভালো খেলি না। আমাদের দুয়েকজন ছাড়া আর কেউ স্পিন খুব ভালো খেলে না। স্পিন কোনদিক দিয়ে কীভাবে খেলতে হবে সেটা হয়তো আমরাও বুঝি না। এসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’

ঢাকা/রিয়াদ/ফাহিম


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়