ঢাকা     রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৯ ১৪৩১

ক্রীড়া সাংবাদিক: সুখ আর দুঃখের সাথে যাদের নিত্য বসবাস

আজাদ মজুমদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৮, ২ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১১:২৩, ২ জুলাই ২০২২
ক্রীড়া সাংবাদিক: সুখ আর দুঃখের সাথে যাদের নিত্য বসবাস

আজ বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবসে সকল সহকর্মী ক্রীড়া সাংবাদিককে অভিনন্দন। আমি ঠিক জানি না, সাংবাদিকতার আর কোনও শাখায় উদযাপন করার মতো এরকম একটি দিন আছে কিনা। কিন্তু যে ভালোবাসা, আগ্রহ আর উদ্দীপনা আপনারা এই পেশায় দেখিয়ে চলেছেন, সাংবাদিকতার মূলধারা হিসেবে বিবেচিত না হয়েও; বিশেষত আমাদের দেশে, তার জন্য আপনারা এমন একটি দিনের উপযুক্ত দাবিদার।   

অতি অসাধারণ এই পেশায় আমি প্রায় ২৫ বছর সম্পৃক্ত আছি এবং কর্মক্ষেত্রে প্রতিটি দিন এখনও উপভোগ করে চলেছি। আমি জানি, আপনাদের অনেকেও এটি একইভাবে উপভোগ করে চলেছেন। যদিও মন খারাপের অনেক উপাদান আশেপাশেই আছে। মাঝে মাঝে কাজটা ক্লান্তিকর মনে হতে পারে। বিশেষত যখন কোনও সাফল্যের গল্প লেখার অথবা বলার থাকে না। তবে জেনে রাখবেন, সব সুড়ঙ্গ শেষেই থাকে আলোর রেখা।   

আমি শুরু করেছি এমন এক সময়ে যখন খেলার মাঠে সাফল্য ছিল খুবই বিরল। ফুটবলে ভাটির টান, জাতীয় ক্রিকেট দলের পাঁচ বছর কোনও জয় নাই, অন্যান্য খেলায়ও সাফল্য যৎসামান্য। তবুও এই পেশায় থেকে গিয়েছি পেশা বদলানোর সহজ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও। নিশ্চিতভাবেই জানি, আপনাদের অনেকেরও প্রচুর সুযোগ ছিল। 

আরো পড়ুন:

ক্রীড়া সাংবাদিকতায় সফল হওয়া নির্ভর করছে, আপনি এটি কতটা উপভোগ করছেন। আপনাকে খেলাধুলার পোকা হতেই হবে এমন নয়। ফ্যানরা সাধারণত ভালো ক্রীড়া সাংবাদিক হয় না। কেননা, তারা যা দেখতে চায় তার চাইতে বেশি কিছু তারা দেখে না। তবে ক্রীড়া অনুরাগী হওয়াটা জরুরি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাব না কোম্পানি, এটা না জানলে এই পেশায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।  

আর্থিকভাবেও ক্রীড়া সাংবাদিকতা খুব বেশি প্রেরণাদায়ক নয়। এটা সত্য, এই পেশার সুবাদে কেউ কেউ আছেন বিশ্ব পরিব্রাজক। তবে বেশিরভাগেরই সময় কাটে ডেস্কে রান, উইকেট, পয়েন্ট আর গোলের হিসাব করে। কেউ কেউ দ্রুতই নিজেদের অফিসে অপাংক্তেয় হয়ে পড়েন। অন্য কোনও ডেস্কে যেতে না চাইলে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর অফিসও ছুড়ে ফেলে দেয়।  

ফ্রিল্যান্সিংয়ের একটা অপশন আছে বটে। তবে সেটা আমাদের দেশে নয়। আপনাদের তাই সবসময় অনিশ্চয়তাকে সঙ্গী করেই বাঁচতে হয়। তারপরও কেউ কেউ কখনও হাল ছেড়ে দেন না। আপনারা সেই সব কবিদের মতো, যারা যত বেশি ক্ষুধার্ত, তত বেশি ভালো। খেলাধুলায় সুখ-দুঃখ পাশাপাশি হাত ধরে হাঁটে। একদল যখন উৎসব করে আরেক দলের চোখে জল টলমল করে। আপনাদের বসবাস এই দুটোর সাথেই। এতে করে অনেক কষ্টের মাঝেও আপনারা আনন্দে বাঁচতে পারেন। আর কোনও পেশা এই সুযোগ দেয় না। অভিনন্দন আবারও।  
 

লেখক: ইংরেজি দৈনিক ‘নিউ এজ’-এর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক
 

ঢাকা/এনএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়