৪ উইকেটের জয়ে উইন্ডিজকে বাংলাদেশের ধবলধোলাই
ক্রীড়া প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৭৮/১০ (৪৮.৪ ওভার)
বাংলাদেশ: ১৭৯/৬ (৪৮.৩ ওভার)
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।
ম্যাচ সেরা: তাইজুল ইসলাম।
সিরিজ সেরা: তামিম ইকবাল (১১৭ রান)
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে। প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডে আসতেই যেন ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ৬ উইকেট ও ৯ উইকেটে জিতে প্রথমে সিরিজ নিশ্চিত আর আজ ৪ উইকেটে জিতে উইন্ডিজকে ধবলধোলাই করলো বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৬তম ধবলধোলাই। আর ক্যারিবিয়ানদের তৃতীয়বারের মতো ধবলধোলাই করেছেন তামিম-সোহানরা। লক্ষ্য ছিল ১৭৯। ওয়ানডেতে মামুলি স্কোর। তবে গায়ানার পিচের যে আচরণ তা কঠিনই বটে। বাংলাদেশ জিতেছে ৯ বল হাতে রেখে। বড় ভূমিকা রেখেছেন নুরুল হাসান সোহান। মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে সপ্তম উইকেটের জুটিতে সিঙ্গেলস-ডাবলস নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। দুজনের জুটি থেকে আসে ৫৭ বলে ৩২ রান। সোহান ৩৮ বলে ৩২ ও মিরাজ ৩৫ বলে ১৬ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। সর্বোচ্চ ৫০ রান আসে লিটন দাসের ব্যাট থেকে। ওপেনার তামিম ইকবাল করেন ৩৪ রান। মাঝে মাহমুদউল্লাহ খেলেন ধীরগতির ইনিংস (৬১ বলে ২৬)। বাংলাদেশের ৬ উইকেটের মধ্যে একাই ৪টি নেন গুদাকেশ মোতি। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে তাইজুলের ঘূর্ণিতে কাবু হয়ে ১৭৮ রানে থামে উইন্ডিজ। উইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন পুরান। তাইজুল ২৮ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার।
৬১ বলে ২৬ রান করে আউট মাহমুদউল্লাহ, বাংলাদেশের দেড়শ
এক প্রান্ত আগলে রাখার দিকেই যেন মনোযোগ ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দেখে শুনে ধীরে সুস্থে খেলেছেন। দিয়েছেন একের পর এক ডট বল। ৩ বলে ২ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে ওঠেন সোহানকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। পুরানের বুদ্ধিদীপ্ত ডেলিভারিতে পরাস্ত মাহমুদউল্লাহ সাজঘরে ফেরেন স্ট্যাম্পিং হয়ে। ঝাঁপিয়ে পড়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। ১ চারে ৬১ বলে ২৬ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তার আউটের ওভারেই (৪০) বাংলাদেশ দেড়শ পার করে। ক্রিজে সোহানের সঙ্গী মিরাজ।
মোতির ঘূর্ণিতে এবার পরাস্ত মোসাদ্দেক, বেকায়দায় বাংলাদেশ
এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন মোসাদ্দেক হোসেন। এই নিয়ে গুদাকেশ মোতি বাংলাদেশের ৫ উইকেটের মধ্যে ৪টি-ই নিলেন। ১ চার ও ১ ছয়ে ২৫ বলে ১৪ রান করেন মোসাদ্দেক। ১১৬ রানে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে আছে। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গী নুরুল হাসান সোহান।
ফিফটি ছুঁয়ে লিটনের বিদায়, আফিফ গোল্ডেন ডাক
শেইফার্ডের করা ২৪তম ওভারের প্রথম বল। ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এগিয়ে এসে মিড অনে দারুণ বাউন্ডারি। পরের বলে পয়েন্টে ঠেলে সিঙ্গেল। লিটন ৬২ বলে দেখা পেলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি। চারের মার ছিল ৫টি ও ছয়ের মার ১টি। ফিফটির পর অবশ্য আর এগোতে পারেননি। মোতিকে সোজাসুজি খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন তার হাতেই। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ নেন মোতি। ৬৫ বলে ৫০ রান করে ফেরেন লিটন। লিটনের আউটের এক বল পরেই বোল্ড হয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন। সামনে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন আফিফ, কিন্তু বল টার্ন করে আহাত করে উইকেটে। ২ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি আফিফ। বাংলাদেশ শিবিরে হঠাৎ ছন্দপতন।
রিভিউতে লিটনের রক্ষা, ৩৪ রানে আউট তামিম
ষোলোতম ওভারে আকিল হোসেনের করা তৃতীয় বল। ফুলার লেন্থের বল সুইপ করতে গিয়ে বল মিস করেন লিটন। বল লাগে পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। লিটন রিভউ নিলে রক্ষা পান আউট থেকে। লিটন বেঁচে গেলেও তামিম রক্ষা পাননি। মোতিকে ফাইন লেগে সুইপ করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন। দারুণ ক্যাচ নেন আকিল। ৪ চারে ৫২ বলে ৩৪ রান করেন তামিম। তার আউটে ভেঙে যায় ৬২ বলে ৫০ রানের জুটি। ফিফটির জুটির পরেই তামিম ফেরেন সাজঘরে। ক্রিজে লিটনের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।
শান্তর বিদায়ের পর তামিম-লিটনে বাংলাদেশের প্রতিরোধ
বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে সাবধানী। পাওয়ার প্লে থেকে আসে ১ উইকেটে ৩২ রান। দলীয় ২০ রানে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। এরপর ক্রিজে তামিমের সঙ্গী হন লিটন দাস। দুজনে খেলছেন সাবলীলভাবে, দেখেশুনে। সুযোগ পেলেই হাঁকাচ্ছেন বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারি। দুজনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১২.৫ ওভারে বাংলাদেশ দলীয় ফিফটি পার করে।
১৩ বলে ১ রান করে আউট শান্ত
১৩ বলে ১ রান করে আউট নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারালো ২০ রানে, সপ্তম ওভারে। শুরু থেকে শান্ত ছিলেন জড়সড়। প্রথম রানের দেখা পান ১১ বলে। আর দুই বলের মাথায় ফেরেন আউট হয়েই। আলঝারি জোসেফের আউটসাইড অফের বল খোঁচা দিয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ক্রিজে তামিম ইকবালের সঙ্গী লিটন দাস।
তাইজুলের প্রথম ফাইফারে ১৭৮ রানে অলআউট উইন্ডিজ
তাইজুলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দিন ১৭৮ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই সিরিজেও তাইজুলের খেলার কথা ছিল না। সাকিব আল হাসান না থাকায় তাকে টিম ম্যানেজম্যাট রেখে দেয়। কন্ডিশন বিবেচনায় সুযোগ পান শেষ ম্যাচে। ২৭ মাস পর সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করলেন। ১০ ওভারে ২৮ রান দিয়ে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নিলেন। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। পুরান-কার্টির জুটি ছাড়া (৬৭) বড় কোনো জুটি হয়নি। সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন অধিনায়ক পুরান। ৩৩ রান আসে মায়ার্সের বদলে সুযোগ পাওয়া কার্টির ব্যাট থেকে। এ ছাড়া বিশের ঘর কেউ পার হতে পারেননি। তাইজুল ছাড়া ২ উইকেট করে নেন নাসুম-মোস্তাফিজ। শেইফার্ডকে বোল্ড করে ইনিংসের ইতি টানেন নাসুম। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান আসে শেইফার্ডের ব্যাট থেকে। বোলাররা তাদের কাজ করেছেন এবার ব্যাটসম্যানদের পালা।
তামিমের ক্যাচ মিসে উইন্ডিজের অলআউটে বিলম্ব
মোস্তাফিজের আউটসাইড অফের বল সজোরে হাঁকিয়েছিলেন শেইফার্ড। বল উঠে যায় আকাশে। কাভার অঞ্চলে থাকা তামিম তালুবন্দি করতে পারেননি। ১২ রানে জীবন পান শেইফার্ড। উইন্ডিজের অলআউটেও আরও বিলম্ব হচ্ছে। লেজের এই দুই ব্যাটসম্যান ইতিমধ্যে ২৭ বলে ১৯ রান যোগ করেন।
মোতিকে ফেরালেন মোস্তাফিজ, অলআউটের পথে উইন্ডিজ
মোস্তাফিজের স্লোয়ার অফ সাইডে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন গুদাকেশ মোতি। ৬ বলে ২ রান করেন মোতি। এটি উইন্ডিজের নবম উইকেট। আর মাত্র ১টি উইকেট বাকি। ক্রিজে আছেন আলঝারি জোসেফ ও রোমারিও শেইফার্ড। এটি মোস্তাফিজের দ্বিতীয় উইকেট।
পুরানকে ফিরিয়ে ওয়ানডেতে তাইজুলের প্রথম ফাইফার
নিকোলাস পুরানকে বোল্ড করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেটের দেখা পেলেন তাইজুল ইসলাম। এর আগে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ছিল ১১ রানে ৪ উইকেট। ২৭ মাস পর দলে ফিরে ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে। ১০ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। এটি তার দশম ওয়ানডে। মোট উইকেট ১৭টি। সাদা পোশাকে নিয়মিত মুখ হলেও রঙিন পোশাকে তিনি অনিয়মিত। মূলত দলের দরকার হলে তাকে রাখা হয়।
ফিফটির পর বিস্ফোরক পুরান, মোসাদ্দেকের শিকার আকিল
৯৩ বলে ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি করেছিলেন নিকোলাস পুরান। এরপরই যেন খোলস ছেড়ে বের হন। দুই ছক্কায় ফিফটির পর ১৩ বলে যোগ করেন ২১ রান। পুরান ঝড়ের মাঝেই প্রথম উইকেটের দেখা পেলেন মোসাদ্দেক। বলের লাইন মিস করে খেলতে গিয়ে আকিল ১ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে।
২৭ মাস পর দলে ফিরেই তাইজুলের চার উইকেট
শরিফুলের পরিবর্তে একাদশে ফিরে তাইজুলের বাজিমাত। উইন্ডিজের ৬ উইকেটের মধ্যে তার একার শিকারই ৪টি! সবশেষ তিনি খেলেছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০২০ সালের মার্চে, করোনার আগে। তাইজুলের চতুর্থ শিকার কিমো পল। নুরুল হাসান সোহানের স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৬ রান।
গা ঝাড়া দেওয়ার আগেই রোভম্যানকে ফেরালেন তাইজুল
মেহেদি হাসান মিরাজকে লং অফে ছয় হাঁকিয়ে খোলস ছেড়ে বেরোনোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রোভম্যান পাওয়েল। কিন্তু দিনটি যে পাওয়েলের ছিল না। পরের ওভারের প্রথম বলেই তাইজুলের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে। উইকেট থেকে বেরিয়ে জায়গা করে খেলতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হন এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। ২৮ বলে ১৮ রান করেন তিনি। তাইজুলের এটি তৃতীয় উইকেট।
৩৪ ওভারে ৪ উইকেটে উইন্ডিজের ১০০
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। চতুর্থ উইকেটে পুরান-কার্টির জুটিতে ধাক্কা সামাল দিয়ে ওঠে। তবে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেনি দলটি। বাংলাদেশের বোলাররা আঁটসাঁট বোলিংয়ে চাপে রেখেছিলেন তাদের। ১০০ রান করতেই দলটির লাগে ৩৪ ওভার! ৪ উইকেট হারিয়ে এ রান করে তারা।
কার্টির উইকেট নিয়ে নাসুমের ব্রেক-থ্রু
নাসুমকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে তামিমের হাতে ধরা পড়লেন কার্টি। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর পর পুরান-কার্টি জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ধীরে ধীরে খেলে দুজনে ক্রিজে থিতু হন। জুটি পেরিয়ে যায় ফিফটি। এ সময় বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দিলেন নাসুম। তার স্ট্যাম্প বরাবর বল জায়গা করে মিড অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন মায়ার্সের বদলে সুযোগ পাওয়া কার্টি। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। তামিমের সহজ ক্যাচে পরিণত হয়ে ফেরেন সাজঘরে। নাসুম পেলেন প্রথম উইকেটের দেখা। ৬৬ বলে ৩৩ রান করেন কার্টি। জুটি থেকে আসে ১২৮ বলে ৬৭ রান। ক্রিজে পুরানের সঙ্গী রোভম্যান।
পুরান-কার্টির ফিফটির জুটিতে উইন্ডিজের প্রতিরোধ
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন পুরান-কার্টি। শুরুর ধাক্কা সামলে দুজনে প্রতিরোধ গড়েছেন। মায়ার্সের বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন কার্টি। দুজনে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবেই সেরেছেন। ধীরে ধীরে খেলে ক্রিজে থিতু হচ্ছেন। রানরেট বাড়ানোর চেষ্টা করছেন পর্যায়ক্রমে। ১৫.৫ বলে দঃলীয় সংগ্রহ ৫০ পূর্ণ করেন দুজনে। দুজনের জুটি ইতিমধ্যে ৫০ রান পেরিয়ে গেছে। ১০০ বলে হাঁফ সেঞ্চুরির জুটি পূর্ণ করেন দুজনে।
পাওয়ার প্লেতে ২০ রানে ৩ উইকেটে হারিয়ে চাপে উইন্ডিজ
টস হেরে ব্যাটিং করতে বিপাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে আসে মাত্র ২০ রান। অর্থ্যাৎ ওভার প্রতি মাত্র ২ রান করে নিয়েছে স্বাগতিকরা। উইকেট হারিয়েছে তিনটি। দুটি উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ও একটি উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। পুরান-কার্টি জুটি বেঁধে বিপর্যয় সামলে কাঠিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।
তাইজুল-মোস্তাফিজের আক্রমণে শুরুতেই বিপাকে উইন্ডিজ
কিংয়ের পর এবার তাইজুলের শিকার হোপ। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন শাই হোপ। তাইজুলের স্লোয়ার ডেলিভারি কাভারে খেলতে চেয়েছিলেন হোপ। কিন্তু টার্নের কাছে পরাস্ত হতে হলো। কিন্তু হোপের পা দাগ থেকে বেরিয়ে যায়, খুবই সুক্ষ ছিল। ততক্ষণে সোহান উইকেট ভেঙে দেন। টিভি আম্পায়ারের সহায়তায় সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। তার ব্যাট থেকে মাত্র ২ রান আসে। পরের ওভারেই আক্রমণে মোস্তাফিজুর রহমান। সাজঘরে পাঠালেন সামারা ব্রুকসকে। মোস্তাফিজের অফ-মিডল স্ট্যাম্পের মাঝে যাওয়া বল ব্রুকসের ব্যাট মিস করে লাগে প্যাডে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন ব্রুকস। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। ৪ রান আসে ব্রুকসের ব্যাট থেকে। তাইজুল-মোস্তাফিজের আঘাতে ১৬ রান ৩ উইকেট হারিয়ে উইন্ডিজ।
তাইজুলের প্রথম বলেই বোল্ড ব্রেন্ডন কিং
ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ব্রেন্ডন কিংকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠালেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের ফ্লাইট ডেইভারি পিচে পড়েই টার্ন করে স্ট্যাম্পে আঘাত করে। কিং ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বল টার্ন করায় পরাস্ত হন। ৯ বলে ৮ রান করেন কিং। তাইজুল নিজের প্রথম ওভারে ৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।
এক পেসার নিয়ে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ। শনিবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গায়ানাতে উইন্ডিজের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামে তামিম ইকবালের দল। প্রথম ২ ম্যাচ জিতেই সিরিজ আগেই পকেটে নিয়েছিল সফরকারীরা। প্রথম ম্যাচে ৬ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষায় যায়নি টিম ম্যানেজম্যান্ট
সিরিজ জয়ের পর তামিম ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শেষ ম্যাচে বেঞ্চ বাজিয়ে দেখার। তবে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো তেমনটা ভাবছেন না। ম্যাচের আগেরদিন সাংবাদিকদের ইঙ্গিত দিয়েছেন তেমনি। শেষ পর্যন্ত তাই দেখা গেলো। কন্ডিশন বিবেচনায় একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষায় যায়নি টিম ম্যানেজম্যান্ট।
ডোমিঙ্গো বলেছিলেন, ‘উইকেট এবং কন্ডিশনের বিবেচনায় আমরা বাড়তি একজন স্পিনার নিয়ে খেলছি। এ অবস্থায় একজন বাড়তি পেসার নিয়ে খেলা কঠিন। তাদের জন্য এখানের উইকেটে কিছুই নেই। আপনি সব সময়ই চাইবেন, দলের সবাই যেন ম্যাচ খেলার সুযোগ পায়। কিন্তু আপনাকে কন্ডিশন বিবেচনা করে আদর্শ কম্বিনেশন দাঁড় করাতে হবে। তাই কাল (আজ) খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।’
বাংলাদেশ একাদশ
বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে এক পেসার ও তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে। পেসার শরিফুলের পরিবর্তে একাদশে স্পিনার তাইজুল ইসলাম। একমাত্র পেসার হিসেবে খেলছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।
টানা তিন ম্যাচে তামিমের টস জয়
টি-টোয়েন্টি সিরিজে তিন ম্যাচেই টস হেরেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেদিক থেকে তামিম ইকবাল সৌভাগ্যবান। তিন ওয়ানডের প্রত্যেকটিতেই টস জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশ ফিল্ডিং নিয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজও নামছে এক পরিবর্তন নিয়ে। মায়ার্সের পরিবর্তে একাদশে এসেছেন কার্টি।
শাই হোপ, ব্রেন্ডন কিং, নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), সামারা ব্রুকস, কিচে কার্টি, রোভম্যান পাওয়েল, আকিল হোসেন, কিমো পাওয়েল, রোমারিও শেইফার্ড, আলঝারি জোসেফ ও গুদাকেশ মতি।
বাংলাদেশের সামনে দুই সুযোগ
সিরিজের শেষ ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও বাংলাদেশের সামনে আছে হোয়াইটওয়াশসহ দুই সুযোগ। প্রথমত উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলে এটি হবে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ১৬তম। আর দ্বিতীয়ত জিততে পারলে মুখোমুখি দেখায় জয়ের সংখায় উইন্ডিজের সঙ্গে সমতা আনবে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ৪৩বার। ২১ বার জিতেছে উইন্ডিজ আর বাংলাদেশ ২০ বার। ২টি ম্যাচের ফল হয়নি। আজ জিতলেই দুই দলেরই হবে ২১। আর হারলে উইন্ডিজ আরও এক ম্যাচ এগিয়ে যাবে (২২)।
ঢাকা/রিয়াদ