‘এটা আমার অহংকার’
১৯৭১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম) প্রথম ও একমাত্র বাঙালি ক্রিকেটার হিসেবে পাকিস্তান দলের হয়ে বেসরকারি টেস্ট খেলতে নামলেন রকিবুল হাসান। একজন ফটোগ্রাফার প্রথম খেয়াল করলেন ভিন্ন এক ব্যাপার। রকিবুল হাসানের ব্যাটে ‘জয় বাংলা’ স্টিকার লিখা।
খানিকপরই স্টেডিয়ামজুড়ে খবর ছড়িয়ে পড়লো— ‘জয় বাংলা’ স্টিকার নিয়ে পাকিস্তানের হয়ে খেলছেন একজন বাঙালি ছেলে। পাকিস্তানি প্রশাসনের কাছে সেই ঘটনা ছিল দেশদ্রোহীতার সামিল। যে কারণে পরবর্তীতে হুলিয়া জারি করেছিল পাকিস্তানি মিলিটারি। পরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হতেই রকিবুল ব্যাট ছেড়ে হাতে তুলে নেন অস্ত্র। দেখেছেন গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম।
মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসান স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে অনেক আগেই পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। সরকার ধাপে ধাপে নানাভাবে তাঁদেরকে আরও সম্মানিত করছে। শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে রকিবুল হাসান হাতে পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্মার্ট পরিচয়পত্র। সেই পরিচয় পত্রের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে রকিবুল হাসান লিখেছেন, ‘গর্ব হচ্ছে। আনন্দ হচ্ছে।’
পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রকিবুল হাসান নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি এই কারণে যে, আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পেরেছি। স্বীকৃতি তো অনেক আগে পেয়েছি। আমি গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা। আমার অবদান তো আন্তর্জাতিকভাবেও প্রকাশ পেয়েছে। দেশের এবং বাইরের পত্র-পত্রিকায় সেভাবেই প্রকাশ পেয়েছে।’
‘আজকের সেই স্বীকৃতি, যে কার্ড আমি পেয়েছি সেটার অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এটা তো আমার প্রাপ্য। এটা আমার অহংকার। এই পরিচপত্র দেখে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম বলতে পারবে, আমার দাদা-নানা, একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমি অনেক বড় বড় জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি। অনেক বড় পুরস্কারও আছে আমার। খেলোয়াড় হিসেবেও পুরস্কারও আছে। কিন্তু স্বাধীন একটি দেশের থেকে এরমকম সম্মান পাওয়া বিশাল কিছু।’
ইয়াসিন/আমিনুল