স্মৃতি মান্ধানার নান্দনিকতায় সপ্তমবারের মতো ট্রফি ভারতের ঘরে
সাইফুল ইসলাম রিয়াদ, সিলেট থেকে || রাইজিংবিডি.কম
সিলেটে বাংলাদেশের ম্যাচেও দর্শক সমারোহ খুব একটা ছিল না। বাংলাদেশ আগেই বাদ পড়ায় ভাটা পড়ে দর্শকদের আগ্রহে। তবে ফাইনালে সব ছাপিয়ে যায়। গ্যালারি ছিল লোকে লোকারণ্য। ব্যাটিংয়ে হতাশ করেছে শ্রীলঙ্কা। তবে হতাশ করেননি স্মৃতি মান্ধানা। তার নান্দনিক ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে নারী এশিয়া কাপে সপ্তমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার (১৫ অক্টেবর) দুপুর দেড়টায় মুখোমুখি হয় দুই দল। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ৬৫ রান করে শ্রীলঙ্কা। রান তাড়ায় নেমে মাত্র ৮.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে ভারত। রান তাড়ায় নেমে মাত্র ৩৬ রানে ম্যাচ জিতে যায় ভারত।
জয়ের পর ডাগআউট কিংবা ড্রেসিংরুমে ছিল না বাড়তি উচ্ছ্বাস। মনে হয় যেন সাধারণ কোনো ম্যাচ জিতেছে তারা। তবে গ্যালারির পাশে গিয়ে দর্শকদের অভিবাদন জানিয়েছে পুরো দল। দিয়েছে ভিক্টরি ল্যাপ। এরপর গ্যালারি পেছনে রেখে তোলে ছবি।
ব্যাটিংয়ে যখন লঙ্কানদের উইকেটের মিছিল তখনই জয়ের পথে একধাপ এগিয়ে যায় ভারত। এশিয়া কাপের ফাইনালে আগে ব্যাটিং করে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়ে শ্রীলঙ্কা। এর আগে ফাইনালে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড ছিল ভারতের। ২০১২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ভারত ৮১ রানে অলআউট হয়। ৮২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে সেবার পাকিস্তান ৬১ রানে অলআউট হয়, এবার তেমন কিছু ঘটতে দেয়নি ভারত।
ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান করে ভারত। তাও আসে মান্ধানার কাভারে হাঁকানো দারুণ চারে। পরের ওভারে এক ছয় এক চারে দেন ঝড়ের ইঙ্গিত। চতুর্থ ও পঞ্চম ওভারে শেফালি বর্মা (৫) ও জেমিমাহ রদ্রিগেজ (২) আউট হলেও সেটা বুঝতেই দেননি মান্ধানা। দারুণ দারুণ চার ছয়ে মাতিয়ে রাখেন এই ব্যাটার। হাঁটু গেড়ে দারুণ ছয়ে ভারতকে এনে দেন ট্রফি। মাত্র ২৫ বলে ৫১ রান করেন তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ১৮তম ফিফটি।
এর আগে দুই অঙ্কের ঘর পার করার আগে শ্রীলঙ্কার যখন ৪ উইকেট পড়ে যায় তখন প্রেসবক্সে আলোচনা চলছিল সর্বনিম্ন রানে হয়তো অলআউটের রেকর্ড গড়বে তারা। নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে সর্বনিম্ন রান করেই থেমেছে শ্রীলঙ্কা, তবে ভারত অলআউট করতে পারেনি তাদের।
দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে রেনুকা সিংকে দারুণ এক চারে ভালো কিছুর সম্ভাবনা দেখান লংকান অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। কিন্তু পরের ওভারেই তার অপ্রত্যাশিত রানআউটে যেন পতনের শুরু। ১২ বলে ৬ রান করেন চামারি। পরের ওভারে মাত্র ১ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। পাওয়ার প্লেতে আসে ৫ উইকেটে ১৬ রানে। স্কোরবোর্ড ওভার শেষের আগেই ২৫ রান হতে হতে আরও ২ উইকেট পড়ে যায়।
কিন্তু শেষ দিকে যেন লঙ্কান ব্যাটারদের হুঁশ হয়। এরপর ৪০ রানে মাত্র ২ উইকেট হারায় চারবারের ফাইনালিস্টরা। সর্বোচ্চ ১৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন ইনোকা রানাভিরা। ১৩ রান করে আউট হন ওশাদি। আর সবাই দুই অঙ্কের নিচে! ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রেনুকা। ২ উইকেট করে নেন রাজেশ্বরি ও স্নেহ রানা।
৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে রেনুকা সিং হন ম্যাচসেরা। আর ৯৪ রান ও ১৩ উইকেট নিয়ে দীপ্তি শর্মা হন সিরিজ সেরা।
ঢাকা/আমিনুল