ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালের সম্ভাবনা বেশি: জিকো
ভক্তরা ভালোবেসে ডাকেন ‘বাংলার বাজপাখি’। এর কারণও আছে। গোলবারের নিচে তিনি যেন লাল-সবুজের দুর্গ। জাতীয় দলে খেলছেন আস্থার সঙ্গে। অল্প সময়ে দেশসেরা গোলরক্ষক বনে যাওয়া আনিসুর রহমান জিকো বিশ্বকাপ নিয়ে রোমাঞ্চিত। অকপটে বলেছেন তার পছন্দের দল, প্রিয় ফুটবলারকে নিয়ে। কথোপকথনে ছিলেন সাইফুল ইসলাম রিয়াদ
রাইজিংবিডি: বিশ্বকাপ নিয়ে কতটা রোমাঞ্চিত?
জিকো: অনেক রোমাঞ্চিত। চার বছর পরপর এই বিশ্বকাপ আসে, অনেকগুলো দল লড়াই করে, রোমাঞ্চিত না হয়ে উপায় নেই! আমি তো মনে করি, পুরো দেশের মানুষ বিশ্বকাপ নিয়ে অধীর আগ্রহে থাকে। সবাই চায় প্রিয় দলের জয়। ফলে উত্তেজনা থাকেই। চাই বিশ্বকাপটা ভালোভাবে শেষ হোক।
রাইজিংবিডি: বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখা নিয়ে বিশেষ কোনো প্রস্তুতি আছে কি না?
জিকো: সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো যদি গ্রামে থাকতে পারতাম। গ্রামে বিশ্বকাপ ভিন্ন আমেজ নিয়ে আসে। সেখানে পক্ষে-বিপক্ষে বেশি উত্তেজনা বিরাজ করে। প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি নিত্যনৈমেত্তিক ব্যাপার। সব মিলিয়ে গ্রামে খেলা দেখা ভীষণ মজার! ক্লাবে থাকলে তেমন হয় না। সামনে স্বাধীনতা কাপ, তাই আমাদের ক্লাবেই থাকতে হবে। গ্রামের পরিবেশটা মিস করবো।
রাইজিংবিডি: পছন্দের টিম?
জিকো: ব্রাজিল।
রাইজিংবিডি: কীভাবে ব্রজিলের সমর্থক হলেন? শুরুটা শুনতে চাই।
জিকো: যখন ছোটবেলায় কিছুটা বুঝ হয়েছ সবার মুখে রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহোর নাম শুনতাম। পরে তাদের খেলা দেখতে দেখতে ভালো লেগে যায়। ব্রাজিলের খেলার ছন্দ আমার ভালো লাগে।
রাইজিংবিডি: ফেভারিট ফুটবলার?
জিকো: ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
রাইজিংবিডি: ব্রাজিলের সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
জিকো: আমার মনে হয় ব্রাজিল ফাইনাল পর্যন্ত যাবে। আর্জেন্টিনাও মনে হচ্ছে ফাইনাল খেলবে। অর্থাৎ কাতারে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালের সম্ভাবনা বেশি।
রাইজিংবিডি: কেন এমন মনে হচ্ছে?
জিকো: দুই দলেরই ফরোয়ার্ড লাইন দুর্দান্ত। সম্প্রতি ম্যাচগুলো দেখলে সেটা বোঝা যাবে। দুই দলের সব বিভাগেই দক্ষ ফুটবলার আছে। গোল দেওয়ার জন্য মেসি-নেইমারের মতো ফুটবলার আছে, যারা যে কোনো মুহূর্তে খেলার চেহারা বদলে দিতে পারে। দুই দলের বেশিরভাগ ফুটবলার ইউরোপে খেলে, তাই ইউরোপিয়ান দলের থেকে তাদের বেশি এগিয়ে রেখেছি।
রাইজিংবিডি: ট্রফি জয়ে কাকে এগিয়ে রাখছেন?
জিকো: ব্রাজিলকে।
রাইজিংবিডি: কেন?
জিকো: ওদের ফরোয়ার্ড লাইনের দিকে তাকালেই বুঝবেন। আগে নেইমার ইনজুরিতে পড়লে দল ভুগতো। এখন সেখানে ভিনিসিয়ুস আছে, জেসুস আছে, রাফিনহা আছে। ব্যাকআপ খেলোয়াড় অনেক ভালো। আর সবাই যদি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে আরও শক্তিশালী হবে। সঙ্গে রক্ষণ-মাঝমাঠ দুটোতেই অভিজ্ঞ আর দারুণ সব ফুটবলার আছে।
রাইজিংবিডি: মেসির হাতে তাহলে কাপ দেখা যাবে না বলছেন!
জিকো: মেসি একটি বিশ্বকাপ জয়ের দাবি রাখে। গত বছর কোপা আমেরিকা জিতলো, সব ধরনের ট্রফি ওর আছে, একটা বিশ্বকাপ হলে পরিপূর্ণতা পাবে। একজন ফুটবলার হিসেবে আমি চাই মেসির যেহেতু শেষ বিশ্বকাপ, তার হাতে ট্রফিটা উঠুক।
রাইজিংবিডি: আপনি দেশসেরা গোলরক্ষক। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলতে পারছে না। আপনারাও বড় মঞ্চে যেতে পারছেন না। আক্ষেপ কাজ করে না?
জিকো: অবশ্যই আক্ষেপ আছে। বড় মঞ্চে খেলতে সবাই চায়। আমিও এর ব্যতিক্রম না। বিশ্বকাপ অন্যরকম মঞ্চ, খেলোয়াড়দের মধ্যে আনন্দ কাজ করে। মাত্র ৩২টি দল লড়াই করে, সেখানে যদি আমরাও থাকতাম তাহলে অন্যরকম হতো।
তারা//