কোচের অপেক্ষায় না থেকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে মনোযোগ মিরাজের
সাকিব আল হাসানের দৃঢ় বিশ্বাস ২০২৩ সাল হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অর্জনের বছর। বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে একাধিকবার বলেছেন, ‘২০২৩ সাল আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বছর হবে।’ অথচ বছরের শুরুর তিন মাস প্রধান কোচ ছাড়া কাটাতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে।
গেলো বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের চাকরি ছেড়েছেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। বিসিবির ছাঁটাইয়ের আগেই তিনি নিজে ইস্তফা দিয়েছেন। মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে বাংলাদেশ। এর আগে নতুন কোচ নিয়োগ দেবে বিসিবি। শোনা যাচ্ছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহকেই আবার ফেরাচ্ছে বিসিবি। তার অধীনেই বাংলাদেশ খেলতে পারে অক্টোবর-নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপের বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচ পরিবর্তন করার রীতি একেবারেই কম। দলগুলো নিজেদের পরিকল্পনা, প্রস্তুতি, ছক কষা, দল গঠনের জন্য অন্তত বছর খানেক সময় নিয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের পরবর্তী কোচ যখন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তখন সময় পাবেন কেবল সাত মাস। এই সময়টা কি পর্যাপ্ত?
টেস্ট ও ওয়ানডেতে দলের অপরিহার্য হয়ে উঠা মেহেদী হাসান মিরাজের মতে, কোচরা কেবল পরিকল্পনা করবেন। মূল কাজটা করতে হবে ক্রিকেটারদেরই। এজন্য নিজেদের ব্যক্তিগত প্রস্তুতিতেই জোর দিচ্ছেন অফস্পিনার অলরাউন্ডার, ‘খেলোয়াড় হিসেবে সবাই কিন্তু নিজের প্রস্তুতি, নিজের কাজ সম্পর্কে জানে। আমি নিজেকে কীভাবে উন্নত করবো কিংবা নিজের প্রস্তুতিটা কী সে সম্পর্কে জানি। শেষ পর্যন্ত খেলতে হবে কিন্তু খেলোয়াড়দের এবং ভালো খেলতে হবে। তাদের প্রস্তুতিটাই গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের মূল ও শক্তির যে জায়গাগুলো আছে সেগুলো আরও শক্তিশালী করতে হবে।’
‘আমাদের যে ভুল আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করবো এই ঘরোয়া প্রতিযোগিতার ভেতরে। এরপর নতুন (কোচ) যারা আসবে তারা তাদের পরিকল্পনা সাজাবে। সেখানে আমরা আমাদের ভাবনাগুলো দেবো, কীভাবে খেলতে পছন্দ করি বা আমাদের কোন জায়গায় কী সমস্যা। এটা একটা কম্বিনেশনের ব্যাপার।’– যোগ করেন মিরাজ।
গত বছর পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট দুর্দান্ত কেটেছে মিরাজের। ওয়ানডেতে ১৫ ম্যাচে ৩৩০ রান, ২৪ উইকেট পেয়েছেন। সামনেও একই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান মিরাজ। সঙ্গে বিশ্বকাপকে ঘিরে এখন থেকেই পরিকল্পনা সাজানোর কথা বলেছেন তিনি, ‘২০২৩ সালে আমাদের বড় ইভেন্ট আছে, সেটা বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপকে ঘিরে আমাদের সব পরিকল্পনা করা হবে। আমি নিজেকে ওইভাবেই মানসিকভাবে প্রস্তুত হবো যে কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়। বিশ্বকাপ বড় ইভেন্ট। সেজন্য ওইভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা যদি এখন থেকে প্রস্তুতি নেই তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে। যে ধারাবাহিকতা নিয়ে আমরা খেলে এসেছি সেটা যদি টেনে নিতে পারি তাহলে দলের জন্য অবশ্যই ভালো হবে।’
আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে বেশ ভালো অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ১৮ ম্যাচে ১২টি জিতেছে। সামনে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি করে ম্যাচ খেলবে। ম্যাচগুলোতে ভালো ফল পেলে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারবে ওয়ানডে বিশ্বকাপে।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের আমলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক মিরাজের। হাথুরুসিংহে ফিরলে তার কাজ আরও সহজ হতে পারে এমনটা ধারণা। কিন্তু মিরাজ মনে করেন, পারফর্ম করেই টিকে থাকতে হবে জাতীয় দলে। তার ভাষ্য, ‘আমি যদি পারফর্ম করতে না পারি তাহলে কিন্তু খেলতে পারবো না, যে কোচই আসুক না কেন। এখানে পারফর্ম করেই খেলতে হবে। পছন্দ করুক না করুক সেটা ব্যাপার না। পারফর্ম করলে খেলতে পারবো দীর্ঘ সময়, যেটা আমার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে।’
ঢাকা/ইয়াসিন/ফাহিম