ঢাকা     মঙ্গলবার   ০১ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৬ ১৪৩১

কেমন হলো নবম বিপিএলের সাত দল

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৮, ৫ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৮:২৩, ৫ জানুয়ারি ২০২৩
কেমন হলো নবম বিপিএলের সাত দল

শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দেশের ক্রিকেটে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। নবম আসরে ট্রফির লড়াইয়ে লড়বে ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজি। কাল থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ১৬ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের মধ্য দিয়ে। 

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে জেনে নাওয়া যাক ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সবশেষ অবস্থা। কোন দল কেমন হয়েছে, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে কে কতটা এগিয়ে, কার শক্তিমত্তা কতটুক এসব নিয়ে রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদন। 

ঢাকা ডমিনেটর্স

আরো পড়ুন:

ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা নিয়ে শুরুতে হয়েছে নাটকীয়তা। শেষ পর্যন্ত নতুন নামে হাজির হয়েছে রাজধানী ঢাকার দলটি। টুর্নামেন্টের অন্যতম আকর্ষণ এই দল হলেও ক্রিকেটার দিয়ে আশা পূরণ করতে পারেনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। আন্দ্রে রাসেলের মতো তারকা ক্রিকেটার ঢাকার হয়ে খেলে গেলেও এবার এমন বড় কোনো নাম নেই। এবারের আসরে দলটির সবচেয়ে বড় তারকা বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদ। তাকে সরাসরি দলে ভেড়ায় তারা। 

ঢাকার মূল শক্তি পেস। তাসকিন আহমেদের সঙ্গে আছেন জাতীয় দলের আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। যদিও তাকে ২০ জানুয়ারির আগে পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া দেশি পেসার আল আমিন, শ্রীলঙ্কান চামিকা করুণারত্নে ও পাকিস্তানি পেসার সালমান এরশাদ আছেন স্কোয়াডে। ব্যাটিংয়ে দেশিদের মধ্যে আছেন সৌম্য সরকার, নাসির হোসেন ও মোহাম্মদ মিঠুন। তারাও ভুগছেন ফর্মহীনতায়। ব্যাট হাতে রানের দায়িত্ব নিতে হবে দুই পাকিস্তানি আহমেদ শেহজাদ ও শান মাসুদকে। 

স্কোয়াড: তাসকিন আহমেদ, চামিকা করুণারত্নে, দিলশান মুনাবিরা, মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলাম, আরাফাত সানি, নাসির হোসেন, আল আমিন হোসেন, শান মাসুদ, আহমেদ শেহজাদ, অলক কাপালি, মনির হোসেন, আরিফুল হক, মুক্তার আলী, মিজানুর রহমান, উসমান গনি, সালমান এরশাদ। 

সিলেট স্ট্রাইকার্স 

বিপিএলে সবচেয়ে ব্যর্থ দলের তালিকা করলে সবার আগে উঠে আসবে সিলেটের নাম। তবে দলটির নেতৃত্বে এবার বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা থাকায় অনেকেই দেখছেন ভাগ্যবদলের স্বপ্ন। সঙ্গে আছেন জাতীয় দলের আরেক তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। 

দল গড়াতে সিলেট বেশি নজর দিয়েছে অলরাউন্ডারদের দিকে। টি-টোয়েন্টিতে চারদিকেই অলরাউন্ডারদের জয়জয়কার। থিসারা পেরেরা-ধনঞ্জয়া ডি সিলভা-রায়ান বার্ল কিংবা কলিন অ্যাকারম্যানরা আছেন সিলেটে। তবে ব্যাট হাতে কিছুটা ভুগতে পারে তারা। টপ অর্ডারে থাকা তিন নাম নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয় ও জাকির হাসান টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটসম্যান নন। তবে নিজেদের দিনে তারাও আলো ছড়াতে পারেন। 

স্কোয়াড: মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ হারিস, থিসারা পেরেরা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, রায়ান বার্ল, কামিন্দু মেন্ডিস, কলিন অ্যাকারম্যান, মুশফিকুর রহিম, ইমাদ ওয়াসিম, নাজমুল হোসেন, রেজাউর রহমান, নাবিল সামাদ, তৌহিদ হৃদয়, রুবেল হোসেন, টম মুরস, গুলবাদিন নাইব, জাকির হাসান, নাজমুল ইসলাম অপু, আকবর আলী, শরীফউল্লাহ ও তানজিম হাসান।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স 

গত আসরে তারুণ্য নির্ভর দল গড়ে চমকে দিয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। এবারও সেদিকেই ঝোঁক সাগরিকা পাড়ের ফ্র্যাঞ্চাইজিটির। সরাসরি নিয়েছে তরুণ আফিফ হোসেনকে, ড্রাফট থেকে সবার আগে নিয়েছে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে। শুধু দেশি না বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দলটির ঝোঁক ছিল তারুণ্যের দিকে। তাই তো অনেক নামই ভক্তদের কাছে অচেনা-অজানা। 

দেশি-বিদেশি মিলিয়ে বোলিংয়ের দিকে নজর দিয়েছে চট্টগ্রাম। মেহেদী হাসান রানা-মৃত্যুঞ্জয়-আবু জায়েদ রাহি-তাইজুল ইসলামদের সঙ্গে আছেন পাকিস্তানের পেসার শাহনওয়াজ দাহানি। চট্টগ্রামকে ভোগাতে পারে ব্যাটিং। আগের আসরে উইল জ্যাকস ছিলেন শুরুতেই। এবার তার মতো কেউ নেই। রান তোলার দায়িত্ব আফিফের কাঁধেই বেশি। 

স্কোয়াড: আফিফ হোসেন, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, শুভাগত হোম, মেহেদী হাসান রানা, ইরফান শুক্কুর, মেহেদী মারুফ, জিয়াউর রহমান, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ, ফরহাদ রেজা, তৌফিক খান, আল আমিন জুনিয়র, অভিষেক মিত্র, মোহাম্মদ নিহাদুজ্জামান, বিশ্ব ফার্নান্ডো, আশান প্রিয়াঞ্জন, কুর্টিস ক্যাম্ফার, ম্যাক্স ও’ডাউড, উন্মুক্ত চাঁদ, উসমান খান, শাহনওয়াজ দাহানি, খাজা নাফায়, মালিন্দা পুষ্পকুমারা, বিজয়কান্ত বিয়াসকান্ত ও দারবিশ রাসুলি।

খুলনা টাইগার্স 

সব বিভাগে নজর রেখে দল সাজিয়েছে খুলনা টাইগার্স। ব্যাটসম্যান-বোলার-অলরাউন্ডার মিলিয়ে আছে ভারসাম্য। নাসিম শাহ-ফখর জামানদের মতো ক্রিকেটারদের সঙ্গে আছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, ইয়াসির আলী, নাসুম আহমেদের মতো তারকারা। তবে স্কোয়াডে বিদেশিদের মধ্যে পাকিস্তানের আধিক্য বেশি থাকায় খুলনাকে ভুগতে হতে পারে। কারণ পাকিস্তান সুপার লিগ শুরু হলে তাদের আর পাওয়া যাবে না। তখন নতুন করে খুঁজতে হবে ক্রিকেটার। 

স্কোয়াড: তামিম ইকবাল, আজম খান, ওয়াহাব রিয়াজ, আভিষ্কা ফার্নান্ডো, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ইয়াসির আলী, নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলাম, মুনিম শাহরিয়ার, সাব্বির রহমান, দাসুন শানাকা, পল ফন মিকেরেন, শফিকুল ইসলাম, প্রীতম কুমার, হাবিবুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, শারজিল খান, ফখর জামান, অ্যান্ড্রু বালবার্নি।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স 

গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্বের জন্য আবেদন না করে চমকে দিয়েছিল। পরে অবশ্য তারা এসেছে এবং আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছে ট্রফি ধরে রাখার জন্য। দেশিদের মধ্যে সরাসরি নিয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানকে। এছাড়া আছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান-শাহীন শাহ আফ্রিদির মতো তারকা ক্রিকেটার। যদিও তাদের পুরো মৌসুম পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। আছেন ডেভিড মালানের মতো দক্ষ ব্যাটসম্যান। তাকেও পুরো আসর পাওয়া যাবে না। 

তিন বিভাগেই ভারসাম্য রেখে দল গড়েছে কুমিল্লা। তবে পুরো আসরে সব খেলোয়াড়কে না পেলে ভুগতে হতে পারে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। 

স্কোয়াড: মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন শাহ আফ্রিদি, আবরার আহমেদ, আবু হায়দার রনি, আশিকুর জামান, জশ কব, হাসান আলী, ইমরুল কায়েস, জাকের আলী, খুশদিল শাহ, ব্রেন্ডন কিং, লিটন দাস, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মোহাম্মদ নবী, মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোসাদ্দেক হোসেন, মুকিদুল ইসলাম, নাঈম হাসান, সৈকত আলী, তানভীর ইসলাম, চ্যাডউইক ওয়ালটন, সেন উইলিয়ামস, ডেভিড মালান। 

ফরচুন বরিশাল 

বিরতির পর বিপিএলে ফিরে সাকিব আল হাসানকে দলে ভিড়িয়ে চমকে দিয়েছিল ফরচুন বরিশাল। তার নেতৃত্বে গতবার চ্যাম্পিয়ন হতে হতেও হয়নি। ফিরতে হয়েছে রানার্সআপ হয়ে। এবার কেমন করবে সাকিবের দল? 

সাকিবের সঙ্গে এই দলে খেলবেন বাংলাদেশের সাবেক টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আগেরবার ক্রিস গেইল ছিলেন। এবার তিনি না থাকলেও আছেন সেই দেশেরই বিশালদেহী রাকিম কর্নওয়াল। যিনি সিপিএলে ঝড় তুলেছিলেন। সাকিবের দলের শক্তি স্পিন। তার সঙ্গে আছেন মিরাজ-কর্নওয়ালরা। স্পিনের তুলনায় পেসে কিছুটা দুর্বল। 

ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ ও কামরুল ইসলামদের সঙ্গে বিদেশি হিসেবে আছেন নাভিন উল হক ও মোহাম্মদ ওয়াসিম। পেসে দেশিদের মধ্যে কারো ভালো পারফর্ম করে যাওয়া আবশ্যক, নয়তো ভুগতে হবে। 

স্কোয়াড: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, ইবাদত হোসেন, এনামুল হক, কামরুল ইসলাম, ফজলে রাব্বী, খালেদ আহমেদ, সাইফ হাসান, কাজী  অনিক, সানজামুল ইসলাম, সালমান হোসেন, রাকিম কর্নওয়াল, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, কুশল পেরেরা, ইব্রাহিম জাদরান, করিম জানাত, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম, কেসরিক উইলিয়ামস, নাভিন উল হক, হায়দার আলী, চতুরাঙ্গা ডি সিলভা, উসমান কাদির। 

রংপুর রাইডার্স

এবারের বিপিএলে ফিরে এসেছে রংপুর রাইডার্স। টুর্নামেন্টের অন্যতম আকর্ষণ এই ফ্র্যাঞ্চাইজি। ফিরতি মৌসুমে তারাও পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের নিয়ে দল গড়ায় মনোযোগ দিয়েছেন। নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বে এই দলে আছেন এক ঝাঁক দেশি তরুণ। আর বিদেশিদের মধ্যে শোয়েব মালিকের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সঙ্গে আছেন দারুণ ফর্মে থাকা জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। 

দল গড়ায় পেসার-স্পিনার-অলরাউন্ডারে ভারসাম্য থাকলেও ব্যাট হাতে ভুগতে পারে দলটি। পারভেজ হোসেন ইমন-নাঈম শেখদের টপ অর্ডার সামলাতে হবে। মিডল অর্ডারে শোয়েব-নাওয়াজ-রাজারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। 

স্কোয়াড: নুরুল হাসান সোহান, শোয়েব মালিক, পাথুম নিসানকা, হারিস রউফ, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নাওয়াজ, জেফ্রি ভ্যান্ডার্সি, সিকান্দার রাজা, শেখ মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, নাঈম শেখ, রাকিবুল হাসান, শামীম পাটোয়ারী, রিপন মন্ডল, রনি তালুকদার, পারভেজ হোসেন ইমন, রবিউল হক, আলাউদ্দিন বাবু।

ঢাকা/রিয়াদ/ফাহিম

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়