প্রতিপক্ষের ভয় এখন তাদের নিয়েও
ক্রীড়া প্রতিবেদক, সিলেট থেকে || রাইজিংবিডি.কম
তাসকিন আহমেদ এখন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের ব্র্যান্ড। মোস্তাফিজুর রহমান বরাবরই দেশের বিজ্ঞাপন। সঙ্গে হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন পেস আক্রমণকে করেছে পূর্ণ। এর বাইরে রেজাউর রহমান রাজা দলগত প্রক্রিয়ায় থেকে হয়ে উঠছেন আরও ক্ষুরধার, আরও আক্রমণাত্মক।
একটা সময় বাংলাদেশের পেস বোলিং মানেই ধরা হতো মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। যেমন গতি, তেমন অ্যাকুরেসি। এরপর অনেকেই এসেছেন। কিন্তু থিতু হয়ে কাঁপন ধরাতে পারেননি। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ প্রতিপক্ষের ভয়ের কারণ। উপমহাদেশের বাইরের দলগুলো এখানে এলেই মনে করে, বাঁহাতি স্পিনে কাবু হতে হবে। কিন্তু দিন বদলানোর সঙ্গে বদলেছে অনেক কিছু। এখন শুধু স্পিনে নয়, বাংলাদেশ খেলার দান পাল্টে দিতে পারে পেস আক্রমণ দিয়েই। তাসকিন, মোস্তাফিজ, হাসান, শরিফুল, ইবাদতদের নিয়ে যে আক্রমণ রয়েছে বাংলাদেশের তা প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দিতে সক্ষম।
এমন মন্তব্য কোনো স্থানীয় কোচ বা বাংলাদেশের কোচিং স্টাফ করেননি। করেছেন আয়ারল্যান্ডের কোচ আইনরিখ মালান। সিলেটে বৃষ্টিস্নাত দিনে আয়ারল্যান্ডের অনুশীলন পণ্ড হয়। ম্যানেজারকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন কোচ মালান।
সেখানে বাংলাদেশের পেসারদের স্তুতিতে ভাসালেন আয়ারল্যান্ডের কোচ, ‘গতকাল রাতেই দেখেছি, বাংলাদেশ দল মানে শুধু স্পিনার নয়, তিনজন মানসম্পন্ন পেসারও আছে। আমার মনে হয় আমাদের জন্য ভালো একটি চ্যালেঞ্জ এটি। এটা নিশ্চিত করতে হবে তাদের আটকে যেন আমরা আগামীকাল ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ডুবেছে আয়ারল্যান্ড। ৩৩৯ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫৫ রানে গুটিয়ে যায়। যেখানে বাংলাদেশের দুই পেসার তাসকিন ও ইবাদত মিলে নেন ৬ উইকেট।
৪ উইকেট নিয়ে ইবাদত ছিলেন সেরা। তাসকিনের ইকোনমি ছিল দুর্দান্ত। এছাড়া মোস্তাফিজও আঁটসাঁট বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখেন। এ দলের স্কোয়াডে আছেন হাসান ও শরিফুল। যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এরই মধ্যে পরীক্ষিত, নিজেদের ছাপ রেখেছেন।
রাজাকে ধরা হচ্ছে এই স্কোয়াডের প্রতিশ্রুতিশীল ও পরিশ্রমী খেলোয়াড়। সব মিলিয়ে সম্মিলিত এই পেস ব্যাটারি যে কোনো মঞ্চে, যে কোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠতে পারে যে কোনো সময়।
পেস বোলিংয়ে বাংলাদেশের এ বিপ্লব শুরু হয়েছিল ওটিস গিবসনের সময়। তার বিদায়ের পর সেই ব্যাটন এখন সাদা বিদ্যুৎ খ্যাত অ্যালান ডোনাল্ডের হাতে। যার সংস্পর্শে আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছেন পেসাররা। মাঠে খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করতে ডোনাল্ড কাজ করছেন নিবিড়ভাবে। মাঠের বাইরে তাদের মানসিকতা বাড়াতেও কাজ করছেন পেস বোলিং কোচ। বলা চলে, পেসারদের শুধু আন্তর্জাতিক মানেরই নয়, সেরাদের সেরা বানাতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন ডোনাল্ড। যার সুফল ২২ গজে নিত্যদিন পাচ্ছে বাংলাদেশ।
ইয়াসিন/আমিনুল