ভিন্ন ফরম্যাট কিন্তু লক্ষ্য একই
বেন স্টোকস-ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ‘বাজবল’ জুটি টেস্ট ক্রিকেটকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছে যেখানে, সাদা পোশাকের ক্রিকেটও পেয়ে গেছে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের রসদ। তাতে টেস্ট ম্যাচ পাঁচদিনের উপযোগীতা থাকবে কিনা তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।
বাংলাদেশ সেই আক্রমণাত্মক টেস্ট খেলার যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। ঘরের মাঠে টেস্ট হলে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখতেই হবে। হোম কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে যে কোনো দলকেই বাংলাদেশ নাড়িয়ে দেয়। এবার প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড বলে সাকিবের দলই হট ফেভারিট।
দুই দল সীমিত পরিসরের সিরিজে এর আগে একাধিকবার মুখোমুখি হলেও সাদা পোশাকে প্রথমবার মাঠে নামতে যাচ্ছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটু ভয়ের কারণও বটে! আইসিসি টেস্ট খেলুড়ে সবগুলো দেশের বিপক্ষে প্রথম মুখোমুখিতে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানকে আতিথেয়তা দিয়ে তাদের বিপক্ষেও হারতে হয়েছিল। তাই বুক ভরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সতর্কও রয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজের কণ্ঠে পাওয়া গেল সতর্কবাতাও, ‘আন্তর্জাতিক খেলা কিন্তু আন্তর্জাতিক খেলাই। আপনি ১ নম্বর দলের সাথে খেললেও যেমন, ১০ নম্বর দলের সঙ্গে খেললেও একই অনুভূতি কাজ করে আমাদের।’
আয়ারল্যান্ড প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হাতছাড়ার পর তাদের মিশন এখন লাল বলের ক্রিকেটে। অনেক পরিবর্তন নিয়ে প্রায় চার বছর পর টেস্ট খেলতে নামবে আয়ারল্যান্ড। সবশেষ টেস্ট স্কোয়াডের ৭ জন খেলোয়াড়ই এবার নেই। স্কোয়াডের ৬ জনের আছে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। ৫ জনের টেস্ট অভিষেক হচ্ছে তা নিশ্চিত। তাইতো আজ রাতেই অভিষিক্তদের মাথায় টেস্ট ক্যাপ পড়িয়ে দেবে তারা। কারণ ম্যাচের সকালে এ কার্যক্রম চালালে অনেক সময় লেগে যাবে।
এমন একটি দলের বিপক্ষে মাঠে নেমে দাপট দেখানো ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই বাংলাদেশের। শক্তি-সামর্থ্যে অনেক এগিয়ে স্বাগতিকরা। মিরাজও প্রত্যাশিত ফলের কথাই বললেন, ‘অভিজ্ঞতার দিক থেকে হয়তো আয়ারল্যান্ডের অনেক বেশি টেস্ট খেলা হয়নি। আমরা টেস্ট ক্রিকেট অনেক দিন ধরে খেলছি। আমাদের অনেক ক্রিকেটার আছে। অবশ্যই আমাদের চেষ্টা থাকবে ব্যবধানটা যেন ভালোভাবে জিততে পারি। তবে, দিন শেষে জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ১ রানে জিতলেও জিতবেন, ১০০ রানে জিতলেও জিতবেন। প্রথম চেষ্টা থাকবে ম্যাচ জেতা।’
মাঠের নামার আগে বাংলাদেশ শিবিরে দুঃসংবাদ। দলের পেস তারকা তাসকিন আহমেদ ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন। তার পরিবর্তে রেজাউর রহমানকে নেওয়া হলেও তার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। দুই পেসার নিয়ে খেললে ইবাদত হোসেনের সঙ্গী হবেন খালেদ আহমেদ। এছাড়া সাকিবের সঙ্গে হাত ঘুরাবেন তাইজুল ইসলাম ও মিরাজ।
সোহানকে না নেওয়ায় উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে পাওয়া যাবে। ওপেনিংয়ে দলে ফেরা তামিম ইকবালকেই পাওয়া যাবে। তবে ছেলের অসুস্থতায় তামিম যদি খেলতে না পারেন তাহলে সাদমান ইসলাম মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গী হবে। তিনে শান্ত, চারে মুমিনুল খেলবেন।
ম্যাচের ফল কী হবে, কয়দিন ম্যাচ হবে সেসব নিয়ে আয়ারল্যান্ডের চিন্তা নেই। দীর্ঘদিন পর টেস্ট খেলার সুযোগ মিলেছে সেই রোমাঞ্চে তারা ডুবে আছে। অধিনায়ক বালবার্নির কথায় তাই ফুটে উঠল, ‘আমাদের ছেলেদের অনেকেই প্রথম শ্রেণির ম্যাচ বেশি খেলেনি। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচ খেলা মানে পুরো ভিন্ন ব্যাপার। আমাদের ছেলেরা মূলত সাদা বলে খেলে বেড়ে ওঠে।’ ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি হয়ে টেস্ট। ফরম্যাট বদলেছে। বদলেছে জার্সির রঙ, খেলার বল। তবে বাংলাদেশের লক্ষ্য একটুও বদলায়নি। আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য সাকিব অ্যান্ড কোংয়ের।
ঢাকা/ইয়াসিন