স্কোয়াডে ৫ পেসার, কী বার্তা দিচ্ছে?
চার বছর আগে পরে ভাবনার এতোটাই বদল হয়েছে যে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নিজেদের শক্তির জায়গায় স্থির থাকার পরিবর্তে প্রতিপক্ষকে নিয়ে বাড়তি চিন্তা বাংলাদেশের।
২০১৯ সালে আফগানিস্তানকে চট্টগ্রাম টেস্টে আতিথেয়তা দেওয়ার সময় স্বর্গ বানিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। যা ছিল নিজেদের পায়ে নিজেই কুড়াল মারার ঘটনা! ভাবনায় ছিল, নিজেদের কন্ডিশনে স্পিন দূর্গ বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবে। কিন্তু নিজেদের পাতা ফাঁদে সাকিব অ্যান্ড কোং আটকা পড়ে নিজেরাই। হিতে বিপরীত হয়ে রশিদ খানের ১১ উইকেট পাওয়া ম্যাচ বাংলাদেশ হেরে যায় শেষ দিনে শেষ সেশনে। বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়া টেস্ট স্বাগতিকরা চাইলেই ড্র করতে পারত। কিন্তু অতো ধৈর্য কোথায়?
চার বছর পর আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট বাংলাদেশের। এবার কোন পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বাংলাদেশ? স্বাগতিকদের স্কোয়াড দেখলে পরিস্কার ধারণা পেতে যথেষ্ট। যেখানে রাখা হয়েছে ৫ পেসার। তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদের সঙ্গে শরিফুল ইসলামকে নেওয়া হয়েছে। নতুন মুখ মুশফিক হাসান।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে পেস বিপ্লব চলছে তা বলতে দ্বিধা নেই। পেসাররা নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য দারুণভাবে মেলে ধরায় টিম ম্যানেজমেন্ট তাদের নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্যই হচ্ছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা চার বছর আগের টেস্টে কোনো পেসার ছাড়া নেমেছিল বাংলাদেশ। সাকিবের সঙ্গে তাইজুল, মিরাজ ও নাঈম ছিলেন। হাত ঘুরিয়েছিলেন মোসাদ্দেকও। অন্যদিকে রশিদ, জহির ও কাইসরা দ্যুতিময় ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বোলিংয়ে বাংলাদেশকে এলোমেলো করে দেন।
এবার বাংলাদেশের স্কোয়াডে ৫ পেসার। একাদশে কজন থাকবেন সেটাই দেখার। তবে রশিদ খানদের আতিথেয়তা দেওয়ার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। সিলেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের চারদিনের শেষ দুটি ম্যাচ হয়েছে সবুজাভ উইকেটে। সতেজ ঘাস ছিল। নতুন বলে ছিল মুভমেন্ট।
স্কোয়াডে সাকিব নেই। তার পরিবর্তে বাড়তি স্পিনার নেওয়া হয়নি। তাইজুল ও মিরাজ টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ। তাতে স্পষ্ট যে, শের-ই-বাংলায় স্পিনসহায়ক উইকেটে খেলতে চাচ্ছে না স্বাগতিকরা। তাইতো স্কোয়াডে ৫ পেসার। তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ব্যাখ্যা দিলেন অন্য কিছুর, ‘প্রচণ্ড গরমে পেসারদের খেলতে হবে। অনুশীলন করতে হবে। টেস্ট শুরু হতে এখনো অনেক দেরী। এর আগে কারো কোনো সমস্যা হলে যেন ব্যাকআপ প্রস্তুত রাখা যায় সেজন্য পেসারদের তালিকাটা বড় করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ সবশেষ যে দুটি টেস্ট মিরপুরে খেলেছে দুটিতেই স্পিন ট্র্যাক বানিয়েছিল। ভারতের বিপক্ষে লড়াই করে হারলেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছিল। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে হোম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই পথে এগোলো বিপদ বাড়তেও পারে। কারণ চার বছরে রশিদ খানরা আরও ক্ষুরদার, আরো আক্রমণাত্মক। এজন্য সবুজ উইকেট বানিয়ে বাংলাদেশের একাদশে তিন পেসার দেখলেও অবাক হওয়ার থাকবে না।
ঢাকা/ইয়াসিন