শামীমের সঙ্গে ‘হৃদয় জুড়ানো’ সেই জুটির গল্প বললেন হৃদয়
ক্রীড়া প্রতিবেদক, সিলেট থেকে || রাইজিংবিডি.কম
৬৪ রানে নেই ৪ উইকেট। ভরসা দেখানো অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানও আউট। চায়ের দেশে তখন আতঙ্ক। গ্যালারিতে পিন-পতন নীরবতা। তখন শুরু হয় দুই তরুণের জয়গান। তাদের ব্যাটিং দেখে মনে হয় এই চিত্রনাট্য আগে থেকেই লেখা।
দল যখন বিপাকে ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন তাওহিদ হৃদয় ও শামীম পাটোয়ারী। দলের বিপর্যয়ে দুই তরুণের ব্যাট জ্বলে ওঠায় শেষমেশ ২ উইকেটের জয় নিয়ে বাংলাদেশ মাঠ ছাড়ে।
ম্যাচের মোড় ঘোরানো ওই জুটিতে দুজনের ছিল প্রায় সমান অবদান। যদিও ৪৭ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন হৃদয়। ১৮তম ওভারে রশিদ খানকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আউট হন শামীম। ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ৩৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।
স্বভাবতই এই জুটির গল্প নিয়ে সবার আগ্রহ তুঙ্গে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হৃদয়ের কাছে এই জুটি নিয়েই বেষ কয়েকটি প্রশ্ন ছিল। শামীম যখন ক্রিজে আসে তখন কি বলেছিলেন হৃদয়? নিচু স্বরে তার উত্তর, ‘এক-দুটি ওভারে মোমেন্টাম আনতে পারলেই খেলাটা ঘুরে যাবে।’
যেই কথা সেই কাজ। দুজনের ব্যাট থেকে আসতে থাকে অসাধারণ, সাহসী সব শট। রশিদ কিংবা ফারুকি, কেউই ছাড় পাননি এই তরুণ তুর্কিদের ব্যাটের মার থেকে। যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য শামীম ও হৃদয়। দেশকে প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ দেওয়া দুইজনের মধ্যে বিশ্বাস ছিল, আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও দলকে জেতাতে পারবেন।
ম্যাচ শেষে শামীমকে বলা নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা জানান হৃদয়, ‘শামীমকে একটি কথাই বলেছিলাম, এরকম ম্যাচ আমরা অনেক জিতিয়েছি।’
কেন ম্যাচ জেতানোর আত্মবিশ্বাস ছিল সেটাও ব্যাখ্যা করেন হৃদয়, ‘যেহেতু আমরা মিডল অর্ডারে ব্যাট করি, এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি অনেক। ওকে এটাই বলেছিলাম।’
১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দুইজনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। যদিও শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাটট্রিকও জেতাতে পারেনি আফগানদের। তখন বাংলাদেশের ম্যাচ হারের শঙ্কা জাগলেও আগেই জয় প্রায় হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয় টাইগাররা।
হৃদয়ের বিশ্বাস ছিল মোমেন্টাম নিজেদের করে নিতে পারলে জয়টা মোটেও অসম্ভব ছিল না। ম্যাচে হয়েছেও সেটাই। ইনিংসের ১৩তম ওভারে ২১ ও ১৭তম ওভারে ১৬ রান নিয়ে ম্যাচের মোমেন্টাম নিজেদের দিকে ঘুরে নেওয়া হৃদয় বলেন, ‘একটি-দুটি ওভারে মোমেন্টাম আনতে পারলেই খেলাটা ঘুরে যাবে। আমরা সেটিই করতে পেরেছি। মাঝে দুটি ওভারেই মোমেন্টাম বদলে গেছে।’
সিলেট/রিয়াদ