ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

এশিয়া কাপে চমক দেখাতে পারেন যে ছয় তরুণ

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১২, ৩০ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ০৯:২৫, ৩০ আগস্ট ২০২৩
এশিয়া কাপে চমক দেখাতে পারেন যে ছয় তরুণ

অপেক্ষার পালা শেষ। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তারপরই পর্দা উঠবে এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত ‘এশিয়া কাপ-২০২৩’ এর। যেটা অভিজ্ঞদের নিজেদের সবটুকু নিংড়ে দিয়ে সাফল্য পাওয়ার মঞ্চ। আর তরুণদের জন্য নিজেদের প্রতিভা আর সামর্থ্য দেখিয়ে নায়ক হয়ে ওঠার মঞ্চ। এবারও যথারীতি প্রত্যেকটি দল অভিজ্ঞ ও তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে যেসব তরুণ এবারের এশিয়া কাপের মঞ্চে চমক দেখাতে পারেন সেসব প্রতিভাবানদের নিয়ে এই আয়োজন।

সোমপাল কামি (নেপাল):
এবারই প্রথমবার এশিয়া কাপে জায়গা করে নিয়েছে নেপাল। তাদের দলের একজন শীর্ষ বোলিং অলরাউন্ডার সোমপাল কামি। ইতোমধ্যে তিনি হিমালয়ের দেশটির হয়ে ৪৭টি ওয়ানডে খেলে ফেলেছেন। নিচের দিকে তিনি দারুণ ব্যাটিং করেন। ২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের ব্যাটিং গড় ২০.৮। তবে তিনি ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলিংয়ে বেশি উজ্জ্বল। এই পেসার ওয়ানডেতে এ পর্যন্ত ৬৩টি উইকেট নিয়েছেন। কামি সব ফরম্যাটে ১০০ আন্তর্জাতিক উইকেট থেকে মাত্র ২ উইকেট দূরে আছেন। এশিয়া কাপেই হয়তো তার উইকেটের সেঞ্চুরিটা উদযাপন করতে পারবেন। অবশ্য তারা ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে কঠিন গ্রুপে পড়েছেন। কিন্তু সেখানেও গ্রুপপর্বে আলো ছড়াতে পারেন সোমপাল কামি।

নূর আহমদ (আফগানিস্তান):
রশিদ খান, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, মোহাম্মদ নবী ও মুজিব উর রহমানের মতো তারকাদের মাঝে থেকেও যে তরুণ আফগানিস্তানের হয়ে এশিয়া কাপে আলো ছড়াতে পারেন তিনি হলেন নূর আহমদ। ১৮ বছর বয়সী বাঁহাতি চায়নাম্যান বোলার এশিয়া কাপে চমক দেখানোর অপেক্ষায়। অবশ্য আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে দারুণ খেলেছিলেন। সম্প্রতি লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগেও নিজের প্রতিভা ও সামর্থের প্রমাণ দিয়েছেন। আইপিএল ও এলপিএলে অর্জিত অভিজ্ঞতা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রতিফলিত করার অপেক্ষায় তিনি। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো স্লো উইকেটে তার অ্যাকুরেসি ও বিভ্রান্তিকর বোলিং প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। সুতরাং তার দিকে নজর থাকবে অনেকের।

মাহিশ থিকশানা (শ্রীলঙ্কা):
এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে আলো ছড়াতে পারেন ২৩ বছর বয়সী ডানহাতি অফব্রেক বোলার মাহিশ থিকশানা। অবশ্য তাদের তারকা স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ইনজুরির কারণে খেলতে না পারায় তার কাছ থেকে প্রত্যাশা থাকবে বেশি। তাতে করে বাড়তি চাপও থাকবে থিকশানার ওপর।

জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বল হাতে দারুণ করেছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কাকে চ্যাম্পিয়ন করার ক্ষেত্রে উইকেট নিয়েছিলেন ২১টি। এছাড়া সদ্য সমাপ্ত লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগেও বল হাতে ভালো করেছেন। উইকেট নিয়েছেন ৭টি। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা আশা করবে এশিয়া কাপেও তিনি নিজেদের সেরাটা দিয়ে দলকে টেনে নিবেন অনেকদূর। প্রতিভাবান এই অফ-স্পিনারের বিষয়ে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের নিঃসন্দেহে সতর্ক থাকতে হবে।

সৌদ শাকিল (পাকিস্তান):
এশিয়া কাপের দলে তার অন্তর্ভূক্তিতে অনেকের চোখ কপালে উঠেছিল। সেটার অবশ্য কারণও রয়েছে। লংগার ভার্সন ক্রিকেটে তার শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। যদিও ওয়ানডেতে নিজের নামের প্রতি এখনো ওভাবে সুবিচার করতে পারেননি। কিন্তু এশিয়া কাপের মঞ্চ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তার নিজেকে প্রমাণ করার দারুণ একটা সুযোগ হয়ে দেখা দিতে পারে। ২৭ বছর বয়সী এই উঠতি ক্রিকেটার মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করেন। পাকিস্তানের হয়ে ৬টি ওয়ানডে খেলে একটিতে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। এশিয়া কাপের এবারের আসরে তিনি যদি খেলার সুযোগ পান তাহলে তার দিকে নজর রাখতেই হবে।

তিলক ভার্মা (ভারত):
আইপিএলে আলো ছড়িয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন ২০ বছর বয়সী ব্যাটিং অলরাউন্ডার তিলক ভার্মা। অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের হয়ে ইতোমধ্যে ৭টি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে ফেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটাও ভালোই করেছেন। এবার ওয়ানডেতে অভিষেকের অপেক্ষায়। তাও আবার এশিয়া কাপের মঞ্চে। সুযোগটা পেলে নিঃসন্দেহে তিনি নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন।

শেষ পর্যন্ত সেরা একাদশে জায়গা পেলে তিলক হয়তো ৪ নম্বরে ব্যাটিং করার সুযোগ পাবেন। তার বয়স কম হলেও ক্রিকেটীয় মাথা বেশ অভিজ্ঞ। সেক্ষেত্রে এশিয়া কাপের অন্যতম সেরা পারফরমার হতে পারেন তিনি। যেহেতু সামনে বিশ্বকাপ সুতরাং এশিয়া কাপের মঞ্চ তার ক্যারিয়ারের স্বপ্নীল গতিপথ তৈরি করে দিতে পারে।

তাওহীদ হৃদয় (বাংলাদেশ):
মুগ্ধ হওয়ার মতো একজন ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের তাওহীদ হৃদয়। ২২ বছর বয়সী এই তরুণ তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত। পাশাপাশি রয়েছে দারুণ ধারাবাহিকতা। বাংলাদেশের হয়ে ৯ ম্যাচ খেলা এই ব্যাটসম্যান ৪৮ গড়ে রান করেছেন ৩৩৮টি। চলতি বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার অভিষেক ম্যাচেই ৯২ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস খেলেছিলেন। যা ছিল অভিষেকে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ঠাণ্ডা মাথার এই ব্যাটসম্যান এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটের চালিকা শক্তি হতে পারেন। নিজের স্বভাবজাত ব্যাটিংটা করতে পারলে এশিয়া কাপ শেষে সেরা পারফরমারদের তালিকায় তার নাম থাকাটা বিস্ময়কর কিছু হবে না।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়