ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

নতুন মোড়কে সেই পুরোনো গল্প

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ, ক্যান্ডি থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ৩১ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ২২:৫৬, ৩১ আগস্ট ২০২৩
নতুন মোড়কে সেই পুরোনো গল্প

ব্যাট হাতে ব্যর্থতার মিছিল, দারুণ বোলিংয়ে কাছে গিয়ে হার; ম্যাচে শেষে স্কোরবোর্ডে আরও কিছু রানের আক্ষেপ। বাংলাদেশ ক্রিকেটে প্রায় সব হারের চিত্রনাট্য যেন এমনই। হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নতুন মোড়কে সেই পুরোনো গল্পের পুনরাবৃত্তিই ঘটেছে।

উইকেট পড়তে ভুল করা, অচেনা-আনকোরা বোলিংয়ের সামনে নিজেদের বিলিয়ে দেওয়া, বল হাতে ভালো শুরু এলেও স্কোরবোর্ডে কম পুঁজির আক্ষেপ নিয়ে ম্যাচ হেরে যাওয়া। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এশিয়া কাপে নিজেদের অন্যতম ধারাবাহিক দল দাবি করেছিলেন।

‘শেষ ৪-৫টি এশিয়া কাপের কথা ধরতে গেলে, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টসহ আমরা ভালো খেলেছি। ৩ বার ফাইনাল খেলেছি। আমরা বেশ ধারাবাহিক আছি’-এমন বক্তব্যের পরদিনই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে টানা দ্বিতীয়বার এশিয়া কাপের গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার পাল্লকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৪২.৪ ওভারে অলআউট হয় বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেট হারিয়ে ৬৬ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে। বাংলাদেশ বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকলেও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকা এক পা দিয়ে রেখেছে সুপার ফোরে।

দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন চারিথ আসালঙ্কা। আসালঙ্কা ৮৫ বলে ফিফটি করেন। শেষ পর্যন্ত ৯২ বলে ৬২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তার সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা (২১)।

৪৩ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর সামারাবিক্রমার সঙ্গে আসালঙ্কার জুটির শুরু হয়। দুজনে ১১৯ বলে ৭৮ রান যোগ করেন। ৫৪ রান করে সামারাবিক্রমা ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এই জুটিই মূলত বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।

এর আগে ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি সাকিবের দল। 

বাংলাদেশের হয়ে ১০ ওভারে ২৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন সাকিব। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন তাসকিন, শরিফুল ও মেহেদি।

এর আগে অখ্যাত পাথিরানার পেসে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং। শেষ ২১ রানে হারায় ৫ উইকেট। আজকের আগে ৪ ম্যাচে মাত্র ৪ উইকেট নেওয়া পাথিরানা এই ম্যাচে একাই নেন ৪ উইকেট। ৭.৪ ওভারে মাত্র ৩২ রান দেন তিনি।  ২ উইকেট নেন থিকশানা। 

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ মাত্র ৩৪ রান নিতে গিয়ে হারায় ২ উইকেট। এরপর ফেরেন অধিনায়ক সাকিব (৫) নিজেই। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটি গড়ে প্রতিরোধের আভাস দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। হৃদয় ২০ রানে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের জুটি। শান্ত এক প্রান্তে অবিচল থেকে হাঁকান ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি।

হৃদয়ের পর মুশফিকের সঙ্গী হন শান্ত। দুজনের জুটিতে স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আপার কাট করতে গিয়ে পাথিরানার বলে এক প্রকার উইকেট বিলিয়ে আসেন মুশফিক (১৩)। তার আগের বলে ফিল্ডিং বদলে থার্ডম্যানে ফিল্ডার আনেন দাসুন শানাকা।

ফাঁদ বুঝতে পারেননি মুশফিক। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন নাঈম শেখও (১৬)। মুশফিক ফিরলে শান্তর সঙ্গী হন মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা।

মিরাজের (৫) পর ফেরেন শেখ মাহেদীও (৬)। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে শান্তও টিকতে পারেননি। ৮৯ রানে থামে তার ইনিংস। ১২২ বলে ৭টি চারের মারে এই রান করেন তিনি। তাসকিন আহমেদ-মোস্তাফিজুর রহমান ফেরেন শূন্যরানে। মাঝে ২ রানে অপরাজিত ছিলেন শরিফুল ইসলাম।

আগামীকাল বাংলাদেশ উড়াল দেবে পাকিস্তানে। লাহোরে গ্রুপ ‘বি’ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হবে আফগানিস্তানের। ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ হারা সাকিবদের সামনে এবার আফগান চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ পারবেতো?

ক্যান্ডি/রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়