বাংলাদেশকে উড়িয়ে জিতল পাকিস্তান
ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম
![বাংলাদেশকে উড়িয়ে জিতল পাকিস্তান বাংলাদেশকে উড়িয়ে জিতল পাকিস্তান](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2023September/বাংলাদেশ-তাসকিন-2309061519.jpg)
স্কোর: পাকিস্তান ১৯৪/৩ (৩৯.৩ ওভার), বাংলাদেশ ১৯৩/১০ (৩৮.৪ ওভার)
ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
সাকিবের কাঠগড়ায় ব্যাটসম্যানরা
‘আমরা শুরুতেই পিছিয়ে যাই। ওরা খুব ভালো বল করেছিল। আমরাও দৃষ্টিনন্দন শট খেলেছি। কিন্তু এই উইকেটে শুরুর ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারানো বিরাট ক্ষতি। এরপর আমরা জুটি গড়েছি ঠিকই। কিন্তু এরপর ৭-৮ ওভারেই সবশেষ। এরকম সুন্দর উইকেটে খুবই বাজে ব্যাটিং করেছি আমরা।’ – পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে বলেছেন সাকিব।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ
প্রত্যাশামাফিক ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফ। ৬ ওভারে ১৯ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি।
বাংলাদেশকে উড়িয়ে জিতল পাকিস্তান
ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে পাকিস্তান এক নম্বর দল। কেন তারা এক নম্বর দল আরেকটি প্রমাণ পাওয়া গেল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হেসেখেলে হারিয়ে এশিয়া কাপে সুপার ফোরের লড়াই দারুণভাবে শুরু করলো পাকিস্তান।
বোলিং কিংবা ব্যাটিং কোনো বিভাগেই বাংলাদেশকে দাঁড়াতে দেয়নি পাকিস্তান। অথচ টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে নিজেদের কাজে একধাপ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হতশ্রী ব্যাটিং ও পাকিস্তানের পেসারদের গতিতে পরাস্ত হয়ে স্কোরবোর্ডে স্বল্প পুজি পায় বাংলাদেশ। ওই রান নিয়ে বোলাররা লড়াই করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। উল্টো ইমাম উল হক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং গড়ে দেয় বড় পার্থক্য।
সব মিলিয়ে আফগানিস্তানকে হারানোর দুদিন পরই ক্রিকেটে একটি বাজে দিন কাটালো সাকিব অ্যান্ড কোং। সুপার ফোরে বাংলাদেশ আরো দুটি ম্যাচ খেলবে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ফাইনাল খেলতে হলে দুটি ম্যাচেই জিততে হবে বাংলাদেশকে। কাজটা কঠিন তবে অসম্ভব নয় মোটেও।
রিজওয়ানের ১১তম ফিফটি
ছক্কায় রানের খাতা খোলা মোহাম্মদ রিজওয়ান ফিফটি পেয়েছেন ৭১ বলে। শুরুতে আগ্রাসী থাকলেও পরবর্তীতে ধীর গতিতে এগিয়েছে তার ইনিংস। মাইলফলকে পৌঁছতে ৫ চার ও ১ ছক্কা হাঁকান ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
মিরাজের প্রথম উইকেট
পুল করে ছক্কা ও চার মেরে মিরাজকে চমকে দিয়েছিলেন ইমাম উল হক। অফস্পিনার ছিলেন পুরোপুরি অসহায়। তবে মনোবল না হারিয়ে নতুন উদ্যোমে ফিরে মিরাজ পেলেন সাফল্য। ইমামকে বোল্ড করে পেলেন নিজের প্রথম উইকেট। তার ৮৪ বলে ৭৮ রানের ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ৪ ছক্কা। পাকিস্তান হারাল তৃতীয় উইকেট। নতুন ব্যাটসম্যান সালমান আগা।
ইমামের ফিফটি
মেহেদী হাসান মিরাজের শর্ট বল পেছনের পায়ে ভর দিয়ে পুল করে ছক্কা উড়িয়ে ফিফটি পেয়েছেন ইমাম উল হক। ৬১ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় এ রান করেন পাকিস্তানের ওপেনার। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তার ১৯তম ফিফটি।
১১.২ ওভারে দলীয় পঞ্চাশ রান পাওয়া পাকিস্তান শতরান পেরিয়েছে ২২.৪ ওভারে।
এবার রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন ইমাম
মিরাজ বোলিংয়ে এনে প্রথম বলেই ফাঁদ পেতেছিলেন ইমাম উল হকের জন্য। তার আর্ম বল ইমামের প্যাডে আঘাত করেন। আম্পায়ারও বাংলাদেশের আবেদনে সাড়া দেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে এবার বেঁচে যান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বল উইকেটে পিচ করলেও স্টাম্প না ছুঁয়েই বেরিয়ে যাচ্ছিল। সেজন্য বেঁচে যান ইমাম।
তাসকিনের বলে বোল্ড বাবর
বাবরকে বেশিদূরে যেতে দিলেন না তাসকিন আহমেদ। বোল্ড করে ফিরিয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ককে। তার লেন্থ বলে আলগা শট খেলেছিলেন বাবর। বল একটু নিচুও হয়েছিল। ইনসাইড এজ হয়ে উইকেট হারান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ২২ বলে ১৭ রান করে আউট হন বাবর। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান রিজওয়ান।
ইমামকে ফেরাতে দুই রিভিউ হারাল বাংলাদেশ
প্রথমে হাসান মাহমুদ, পরে তাসকিন আহমেদ। চার ওভারের ব্যবধানে ইমাম উল হককে ফেরাতে দুই জোরাল আবেদন করেন দুই ডানহাতি পেসার। দুইবারই আম্পায়ার সাড়া দেননি। কিন্তু বাংলাদেশের আবেদন ছিল আত্মবিশ্বাসী।
অধিনায়ক সাকিব বোলারের ওপর আত্মবিশ্বাস রেখে দুইবারই রিভিউ নেন। কিন্তু দুইবারই ইমাম বেঁচে যান বল আউটসাইড লেগে পিচ করায়। বাংলাদেশের পেসাররা দারুণ বল করছেন। কিন্তু পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা বেশ সতর্ক। বাবর আজম ক্রিজে আসার পর রানও আসছে। ১৪ ওভার শেষে তাদের রান ৫৯/১।
ব্রেক থ্রু এনে দিলেন শরিফুল
৪ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়ে পাকিস্তান ব্যাটিং শিবিরে ভয় ধরাচ্ছিলেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি পেসার নিজের পঞ্চম ওভার করতে এসে পেলেন সাফল্য। ফখর জামানকে ভেতরে ঢোকানো বলে এলবিডব্লিউ করেছেন শরিফুল। ৩১ বলে ২০ রান করেন ফখর। ৩৫ রানে প্রথম উইকেট হারাল পাকিস্তান। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান বাবর আজম।
১৬ মিনিট পর খেলা শুরু
স্টেডিয়ামের একটি ফ্লাডলাইট অচল হয়ে যাওয়ায় ১৬ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। এখন সবকটি ফ্লাডলাইট চলছে। খেলাও হচ্ছে।
ফ্লাডলাইট অচল
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের একটি ফ্লাডলাইট অচল হয়ে পড়ায় খেলা আপাতত বন্ধ আছে। দুই দলের খেলোয়াড়রা মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে গেছেন।
দুইশ’ও করতে পারল না বাংলাদেশ
১৯৩ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। সাকিব ও মুশফিকের লড়াইয়ে এক সময় মনে হয়েছিল লড়াকু পুঁজি পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের এক’শ রানের জুটি ভাঙার পর টপাটপ উইকেট হারায় দল। শেষ পর্যন্ত ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস।
শরিফুল ইসলামকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন নাসিম শাহ। তাকে বোল্ড করেন ডানহাতি পেসার। ৫.৪ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন নাসিম। বাংলাদেশকে বেশি ভুগিয়েছেন হারিস রউফ। ৬ ওভারে ১৯ রানে ৪ উইকেট নেন হারিস। তার গতির কাছেই পরাস্ত ব্যাটসম্যানরা।
৪৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর মুশফিক ও সাকিব ১২০ বলে ১০০ রান করেন। প্রতি আক্রমণে গিয়ে তারা বেশ ভালো ব্যাটিং করছিলেন। প্রথমে সাকিব ও পরে মুশফিক তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। কিন্তু দুজন নিজেদের ইনিংস বড় করতে পারেননি। তাতে বড় হয়নি বাংলাদেশের রানও। মুশফিক সর্বোচ্চ ৬৪ ও সাকিব ৫৩ রান করেন।
স্কোরবোর্ডে স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়াই করা কঠিন। তবুও বোলাররা নিশ্চয়ই চেষ্টা চালাবেন। সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের বাজে দিন কাটল। বোলাররা রাঙাতে পারেন কিনা সেটাই দেখার।
টিকতে পারলেন না আফিফও
বাংলাদেশের শেষ ভরসা হয়ে ক্রিজে ছিলেন আফিফ হোসেন। তার সামনে সুযোগ ছিল নিজের জায়গা পাকা করার। কিন্তু বড় মঞ্চে আফিফ বড় সুযোগ নষ্ট করলেন। নাসিম শাহর শর্ট বল পুল করতে চেয়েছিলেন। টাইমিংয়ে গড়বড় করে ক্যাচ দেন মিডঅনে। ১১ বলে ১২ রানে থেমে যায় তার ইনিংস।
হারিসের জোড়া সাফল্য, মুশফিক-তাসকিনের বিদায়
নিজের উইকেট আত্মহুতি দিলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশকে লড়াকু পুঁজি পেতে হলে তাকে থাকতে হতো ক্রিজে। শেষ পর্যন্ত খেলতে হতো। কিন্তু নিজের মহামূল্যবান উইকেট মুশফিক উপহার দিয়ে আসলেন প্রতিপক্ষকে।
হারিস রউফ বোলিংয়ে ফিরে ফেরান মুশফিককে। তার লেন্থ বল এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে মুশফিকের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে যায়। রিজওয়ান ঠিকঠাক ক্যাচ নিয়ে ফেরান বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানকে। ৮৭ বলে ৬৪ রানে থেমে যায় মুশফিকের ইনিংস। যেখানে ছিল ৫ বাউন্ডারি। পরের বলে হারিসের চতুর্থ শিকার হন তাসকিন আহমেদ। প্রায় একই রকম ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হন তাসকিন।
ফিরলেন শামীম
শাহীন শাহ আফ্রিদিকে ফাইন লেগ দিয়ে বিশাল ছক্কা উড়িয়ে বড় কিছুর আভাস দিয়েছিলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। কিন্তু ওই আভাসেই থেমেছে তার ইনিংস। পরের ওভারে স্পিনার ইফতেখার আহমেদকে উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। ২৩ বলে ১৬ রান করে আউট হন শামীম। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন।
মুশফিকের ৪৬তম ফিফটি
সাকিবের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করেছেন মুশফিকুর রহিমও। তার পুরস্কারও পেলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মনোযোগী ব্যাটিংয়ে মুশফিক পেয়েছেন ৪৬তম ফিফটি। ৭১ বলে ৪ চারে এ ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি। ধীর গতির হলেও তার ইনিংসটি ছিল যথেষ্টা কার্যকরী। আপাতত তার ক্রিজে থাকা সবচেয়ে বেশি জরুরি। মুশফিক শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকলে লড়াকু স্কোর পাবে বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান
ওয়ানডে ক্রিকেটে পঞ্চম উইকেটে সবচেয়ে বেশি শতরানের জুটি
মাহেন্দ্র সিং ধোনী ও সুরেশ রায়না ৬
মাহেন্দ্র সিং ধোনী ও যুবরাজ সিং ৬
সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম ৫
শতরানের জুটির পর পথ ভুললেন সাকিব
মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে কাটায় কাটায় একশ রানের জুটি গড়লেন সাকিব আল হাসান। যা ছিল তাদের পঞ্চম শতরানের জুটি। দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে সাবলীল ব্যাটিংয়ে সাকিব নিজেও পেয়ে যান ব্যক্তিগত ফিফটি। ২২ গজে দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা এ ব্যাটসম্যান এরপরই পথ ভুললেন।
পেসার ফাহিম আশরাফের বাউন্ডার পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে সীমানায় ক্যাচ দেন সাকিব। সেখানে ফখর জামান রানিং ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন বাংলাদেশের অধিনায়ককে। ৫৭ বলে ৭ চারে ৫৩ রানের ইনিংসটি খেলেন সাকিব। তাদের জুটির একশ রান এসেছিল ১১৯ বলে। ১৪৭ রানে বাংলাদেশ হারাল পঞ্চম উইকেট।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে সাকিবের ফিফটি
দল ছিল বিপদে। সাকিব নিজের ব্যাটিংয়ে তা বুঝতে দেননি। উল্টো আক্রমণে গিয়েছেন। বাজে বল কড়া শাসন করেছেন। ভালো বল সমীহ করে খেলেছেন। তাতে রান পেয়েছেন অনায়েসে। ৫৩ বলে বাংলাদেশের অধিনায়ক তুলে নিয়েছেন ফিফটি। যা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৫তম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। ৭ চারে সাজিয়েছেন এই ইনিংস।
সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে জবাব দিচ্ছে বাংলাদেশ
অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ভর করে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে তাদের জুটির রান ফিফটি ছুঁয়েছে। তাতে বাংলাদেশের রানও একশ পেরিয়েছে।
২০.১ ওভারে বাংলাদেশের দলীয় রান একশ ছুঁয়েছে।
৪৭ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়েন অভিজ্ঞ সাকিব ও মুশফিক। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। নিজেদের ২০তম পঞ্চাশ জুটি তুলে নিয়েছেন তারা। যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ১৯টি পঞ্চাশ রানের জুটি আছে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের।
বাংলাদেশের ফিফটি
১০.২ ওভারে দলীয় পঞ্চাশ রান পেয়েছে বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লে’তে ১০ ওভারে ৪৯/৪
প্রথম পাওয়ার প্লে একদমই ভালো যায়নি বাংলাদেশের। স্কোরবোর্ডে কোনো রান উঠার আগেই মিরাজ আউট হন। এরপর লিটন ও নাঈম দারুণ ব্যাটিংয়ে পরিস্থিতি সামলে নেন। কিন্তু ৩১ থেকে ৪৭ রানে আসতেই বাংলাদেশ হারায় আরো ৩ উইকেট। সব মিলিয়ে ১০ ওভারে ৪৯ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
হতাশ করলেন তাওহীদ
আগের ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছিলেন। পজিশন ঠিকঠাক ছিল না। কিন্তু এবার নিজের পজিশনে নেমেও হতাশ করলেন তাওহীদ হৃদয়। হারিস রউফের স্টাম্পের ওপরের সোজা বল মিস করে তাওহীদ আউট হলেন ২ রানে। ১৪৫ কিমির বলে তাওহীদ লেগ সাইডে গ্লান্স করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গতির কাছে পরাস্ত এই ব্যাটসম্যান। এশিয়া কাপে সময়টা ভালো যাচ্ছে না তাওহীদের। ২০ ও শূন্যর পর আজ করলেন ২। উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
নাঈমের বিদায়ে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ
টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান বিদায় নিলেন ৪৫ রানেই। প্রথমে মিরাজ। পরে লিটন। সবশেষ নাঈম শেখ। নাসিম চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায় হারিস রউফকে অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে আনেন বাবর আজম। দ্রুত গতির বোলার প্রথম ওভারেই দলকে সাফল্যে ভাসালেন। তার শর্ট বল জায়গায় দাঁড়িয়ে পুল করতে যান নাঈম। ওই বলে পুল শট খেলার অবস্থায় ছিলেন না নাঈম। কিন্তু ভুল শট খেলে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে নাঈম ফিরলেন ড্রেসিংরুমে। বাংলাদেশ হারাল তৃতীয় উইকেট। নতুন ব্যাটসম্যান তাওহীদ হৃদয়।
ফিরে গেলেন লিটনও
দৃষ্টিনন্দন চার বাউন্ডারিতে লিটন দাস নিজের ফেরা রাঙিয়েছিলেন। থিতু হওয়ার আগেই ব্যাট থেকে বাউন্ডারির ফোয়ারা ছুটছিল। কিন্তু তাকে থামানোর সব উত্তর জানা ছিল পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদির। বাঁহাতি পেসারের লেট মুভমেন্টে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে কট বিহাইন্ড লিটন। বল হাল্কা বাউন্সও পেয়েছিল। ১৩ বলে ১৬ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ ৫ ওভারে হারাল দ্বিতীয় উইকেট। নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
মিরাজের গোল্ডেন ডাক
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি পাওয়ায় মেহেদী হাসান মিরাজকে আবারো পাঠানো হয়েছিল ইনিংস উদ্বোধন করতে। কিন্তু আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার রানের খাতা খোলার আগেই আউট। নিজের উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন মিরাজ। পেসার নাসিমের লেগ স্টাম্পের উপরে আলগা বলে লোপ্পা ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। ওখানে ফিল্ডার ফখর সহজেই বল তালুবন্দি করেন। এমন বল স্রেফ বাউন্ডারিতে যায় সেখানে মিরাজ ফিরলেন ড্রেসিংরুমে। শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভার ছিল মেডেন। এবার মিরাজ শুরুতেই আউট হলেন।
হিথ স্ট্রিকের জন্য নীরবতা
দেরিতে হলেও জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ হিথ স্ট্রিকের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে ম্যাচের আগে। গত ৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তি ক্রিকেটার। সেদিন অবশ্য স্ট্রিক স্মরণে কোনো আনুষ্ঠানিকতা দেখা যায়নি। এ নিয়ে এসিসির প্রবল সমালোচনা হয়েছিল। তিন দিন পর আজ তার মৃতু্যতে নীরবতা পালন করলো দুই দল। স্ট্রিক বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ ছিলেন। তার মৃতু্যতে এখন পর্যন্ত বিসিবি শোক জানায়নি।
টস
টস জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এশিয়া কাপে এবার তিন ম্যাচেই টস জিতলেন সাকিব। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায় ম্যাচটি শুরু হয়েছে।
দুই দলেই পরিবর্তন
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ছিটকে গেছেন এশিয়া কাপ থেকে। তার জায়গায় আজ দলে ফিরেছেন লিটন দাস। পাকিস্তান গতকাল রাতেই দল ঘোষণা করেছে। স্পিন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজের পরিবর্তে দলে নেওয়া হয়েছে পেস অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফকে।
বাংলাদেশ একাদশ
নাঈম শেখ, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, শামীম পাটোয়ারী, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও শরীফুল ইসলাম।
পাকিস্তান একাদশ
ইমাম-উল-হক, ফখর জামান, বাবর আজম (অধিনায়ক), সালমান আগা, ইফতিখার আহমেদ, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার), ফাহিম আশরাফ, শাদাব খান (সহ-অধিনায়ক), নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফ।
পরিসংখ্যান
ওয়ানডে ক্রিকেটে দুই দল ৩৭ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের জয় ৫টি। পাকিস্তানের ৩২টি। এশিয়া কাপে দুই দল ১৩ ম্যাচ খেলেছে। পাকিস্তানের ১২ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে ১টিতে। সাম্প্রতিক মোকাবিলার দিকে নজর দিলে পাকিস্তানের চেয়ে বেশ এগিয়ে সাকিবরা। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর এটাই প্রথম বাংলাদেশ-পাকিস্তান ওয়ানডে ম্যাচ। সর্বশেষ লড়াইয়ে সাকিব-মুশফিকুর রহিমদের ৯৪ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। তবে বিশ্বকাপের ওই ম্যাচের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা চার ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ।
সাকিবই গড়ে দেবেন ব্যবধান?
বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানই কি আজ ব্যবধান গড়ে দেবেন? বাংলাদেশিদের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ২০১ রান তার। সঙ্গে ২১ উইকেট তার সামর্থ্যকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের মাটিতে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ২০০৮ সালে মুলতানে করেছিলেন ১০৮ রান। বাংলাদেশের অধিনায়ক আজ একা ব্যবধান গড়ে দিতে পারলে নিঃসন্দেহে এশিয়া কাপে শিরোপার লড়াইয়ে একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
লাহোরে আগুনে ম্যাচের অপেক্ষা
সুপার ফোর পর্বে প্রথম ম্যাচে আজ মাঠে নামছে এশিয়ার অন্যতম দুই পরাশক্তি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি জয়ের আশায় নামছে সাকিব আল হাসানের দল। স্বাগতিক দল হিসেবে এবং সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় দুর্দান্ত পাকিস্তান। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের তারা এক নম্বর দল। অন্যদিকে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে যেভাবে আফগানিস্তানের মতো দলকে উড়িয়ে দিয়েছে তাতে এই ম্যাচে তারাও ফেভারিট। লাহোরে যে দাবদাহ, সেই উত্তাপের মাঝে দুই দলের লড়াইয়ে উত্তেজনার স্ফুলিঙ্গ ছুটবে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
ইয়াসিন/বিজয়
আরো পড়ুন