ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

নিরুত্তাপ প্রেমাদাসায় কোহলি-রাহুলে ভারতের জয়গান 

সাইফুল ইসলাম রিয়াদ, কলম্বো থেকে  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:০৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
নিরুত্তাপ প্রেমাদাসায় কোহলি-রাহুলে ভারতের জয়গান 

যত ক্রেজ যেন টিভি পর্দায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। নিয়ম ভেঙে একদিনের খেলা দুই দিনে, সময় চলে গেলেও কাটেনি ওভার; এরকম অনেক প্রথমের সাক্ষী হয়ে থাকলো এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সুপার ফোরের লড়াই। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল ১ ঘণ্টা ১২ মিনিট। হিসেবে ওভার কমার কথা ছিল ১৮টি! যে কোনো মূল্যে খেলা মাঠে গড়ানোর চেষ্টা ছিল, হয়েছেও তাই। তবে মাঠে দর্শকদের আগমন ঘটেনি।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে দর্শক আসন ৩৫ হাজার। খালি ছিল প্রায় ৩০ হাজারই। কাগুজে হাই ভোল্টেজ এই লড়াইয়ে বিরাট কোহলি-লোকেশ রাহুলের শতকে ভর করে পাকিস্তানকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। আগে ব্যাটিং করে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৫৬। রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১২৮ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। ভারতের জয় ২২৮ রানে। রানের হিসেবে এটি পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের সবচেয়ে বড় জয়। অন্যদিকে যে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পাকিস্তানের এটি দ্বিতীয় বড় হার! 

তবে দিনটা যেন পাকিস্তানের ছিল না। ইনজুরিতে ছিটকে এ আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হারিস রউফ। ব্যাটিং করতে পারেননি নাসিম শাহও। তিনিও ভুগছিলেন ইনজুরিতে। সবমিলিয়ে প্রতিপক্ষের বাজে দিন কাজে লাগিয়ে ষোলো আনাই উসুল করেছে রোহিত শর্মার দল।  আগের দিন ২ উইকেটে ১৪৭ রান করে ভারত। ব্যাট হাতে বিধ্বংসী শুরু এনে দিয়ে ম্যাচের লাগাম শুরুতে নিজেদের হাতে নিয়ে নেন রোহিত (৫৬)-শুভমান (৫৮)। দুজন ফিফটির পর ফিরলে শুরু হয় কোহলি-রাহুলের লড়াই। প্রথম দিন ২৪.১ ওভারে ভারত ১৪৭ রান করে। কোহলি ৮ রাহুল  ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। দুজনে আজ ২৫.৫ ওভারে যোগ করেন ২০৯ রান।

৬ মাস পর দলে ফেরা রাহুল ব্যাটিং শৈলী দেখিয়ে তুলে নেন ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। ১০ চার ও ২ ছয়ে ১০০ বলে সেঞ্চুরির দেখা পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। রাহুলের সেঞ্চুরির উদযাপনের রেশ না কাটতে কোহলি দেখা পান ওয়ানডেতে ৪৭তম শতকের। মাত্র ৮৪ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। দুজনের জুটিতে আসে ১৯৪ বলে ২৩৩ রান।  ফাহিম আশরাফকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে সোজাসুজি দারুণ এক ছয়ে ইনিংস শেষ করেন কোহলি। তিনি অপরাজিত ছিলেন ৯৪ বলে ১২২ রান করে। তার হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। অন্যদিকে রাহুল ১০৬ বলে করেন ১১১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এক হারিসের অনুপস্থিতিতে শাহিন শাহ আফ্রিদিরা যেন ছিলেন নির্বিষ। ১০ ওভারে ৭৯ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। আরেকটি উইকেট পান শাদাব খান। তিনি সমান ওভারে খরচ করেন ৭১ রান। 

রানের চাপে পড়া পাকিস্তান ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে। ইমামকে ফিরিয়ে জসপ্রীত বুমরাহ শুরু করেন। এর পরেই অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বাবরকে (১০) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। বাবর শুরু থেকে ছিলেন নির্লিপ্ত। প্রথম ১০ বলে কোনো রানই করতে পারেননি। বাকি কাজটা সেরে নেন কুলদীপ যাদব। এই স্পিনারের ঘূর্ণির যেন কোনো জবাব ছিল না। ৮ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট! ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফাইফার আর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন ফখর জামান। ২৩ রান করে আসে আঘা সালমান ও ইফতেখার আহমেদের ব্যাট থেকে। হেলমেট বিহীন ব্যাটিং করতে গিয়ে বলের আঘাতে রক্ত ঝরেছিল সালমানের, আবার ব্যাটিং শুরু করলেও ছিল না ধার। আর কেউ দুই অঙ্কের মুখ দেখেননি। কুলদীপ ছাড়া ভারতের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন বুমরাহ-হার্দিক-শার্দুল ঠাকুর। 

কলম্বো/রিয়াদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়