ফ্লাইওভার তো নয়, যেন গোলাপ বাগান
চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের রাজধানী হ্যাংজু ছবির মতো সুন্দর শহর। বেশ ছিমছাম, পরিকল্পিতভাবে সাজানো-গোছানো। তাদের এই পরিপাটি ভাব যে কেবল ‘এশিয়ান গেমস-২০২২’ উপলক্ষ্যে তেমনটি নয়। বহু বছর আগে থেকেই বেশ গোছানো শহর এটি।
অর্থনীতির দিকে দিয়ে চীনের পঞ্চম ধনী শহর হ্যাংজু। বন্দর নগরটি সিল্ক, চা আর চীনামাটির জন্য বিখ্যাত। এই তিনটি জিনিসের তাদের রয়েছে হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস।
তবে আধুনিক হ্যাংজু শহরকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এই যেমন এশিয়ান গেমস উপলক্ষ্যে পুরো শহর জুড়ে সাজ সাজ রব রিবাজ করছে। নগরীর প্রতিটি রাস্তা, অলি-গলিতে শোভা পাচ্ছে এশিয়ান গেমসের লোগো কিংবা প্রচারণা। এশিয়ার ৪৫টি দেশের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কাছে হ্যাংজুকে অনন্যভাবে তুলে ধরতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখা হয়নি।
এশিয়ান গেমসকে সামনে রেখে শহরটির প্রত্যেকটি ফ্লাইওভার সাজানো হয়েছে গোলাপ গাছ দিয়ে। একটি দুটি গাছ নয় পাক্কা ২১ লাখ ৫০ হাজার গাছ। যা লাগানো হয়েছে শহরের ১৭টি ফ্লাইওভারের ৫০০ কিলোমিটার জুড়ে। যেখানে ২০০ প্রজাতির গোলাপ গাছ রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে লাল, গোলাপী, হলুদ ও সাদা গোলাপ।
জানা যায়, ২০০৯ সালে ‘হ্যাংজু মিউনিসিপ্যাল গার্ডেন রেলিকস ব্যুরো’ ফ্লাইওভার জুড়ে গোলাপ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়। বিশেষ করে চায়না রোজ (চীনা গোলাপ)। সেই প্রকল্পটির ফলস্বরূপ বর্তমানে ২১ লক্ষাধিক গোলাপ গাছ রয়েছে শহরের ফ্লাইওভারগুলো জুড়ে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, রাস্তায় লাগানো গোলাপ গাছের সংখ্যার দিক দিয়ে হ্যাংজুই এখন বিশ্বের শীর্ষে। হ্যাংজু শহর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এখন চীনের অনেক শহরই গোলাপ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
সাড়ে ২১ লাখ গাছে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে ফুটতে শুরু করেছে নানা রঙের গোলাপ। এমন সময়ে ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয় যেন গোলাপ বাগানের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। পাখির চোখে দেখতে লাগে অনিন্দ্য সুন্দর।
হ্যাংজু শহর কর্তৃপক্ষ এটার নাম দিয়েছে ‘স্কাই ফ্লোরাল করিডোর।’ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে সাড়ে ২১ লাখ গাছ পরিপূর্ণভাবে ছেয়ে যাবে ফুটন্ত গোলাপে। তখন দেখতে আরও অসাধারণ লাগবে।
সাড়ে ২১ লাখ গাছের কোটি কোটি ফুলের ঘ্রাণে ইতোমধ্যেই গোটা শহর সুরভিত হয়ে আছে। গাড়ীর জানালার কাচ নামালেই নাকে লাগে সুবাস আর দৃষ্টি জুড়ায় দোল খাওয়া নানা রঙের ফুটন্ত গোলাপে।
হ্যাংজু/আমিনুল/বিজয়