দুরন্ত মিরাজ, আত্মবিশ্বাসী তানজীদ, বৃষ্টির আগে-পরে ব্যাটিংয়ের দুই রূপ
ইনিংসের প্রথম বলটি ‘নো’ করেন রিচ টপলি। ফ্রি-হিট পেয়ে সুযোগের ষোলোকলা পূর্ণ করলেন ওপেনার তানজীদ হাসান তামিম। পুল করে ছয়! দ্বিতীয় বলটিও নো হয়, তবে এবারের ফ্রি-হিট ডট দেন এই বাঁহাতি ওপেনার। দারুণ ছয়ে ইনিংস শুরু করা তানজীদ সময় যতো যাচ্ছিল তাকে তত আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল।
স্যাম কারান কিংবা ডেবিড উইলি-মার্ক উডদের বলকে মামুলি বানিয়ে পাঠিয়েছেন বাউন্ডারির বাইরে। বিশ্বকাপের মহারণ শুরুর আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচেও প্রথমটির মতো তানজীদের ব্যাটে রান টিম ম্যানেজম্যান্টকে দেবে বাড়তি স্বস্তি। সঙ্গে উপরে ওঠে ব্যাটিং করা মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাটে ছুটছে রানের ফোয়ারা।
গৌহাটিতে সোমবার (২ অক্টোবর) টস জিতে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। দারুণ খেলতে থাকা তানজীদ অল্পের জন্য পাননি ফিফটি। ৭টি চার ও ১টি ছয়ে ৪৪ বলে ৪৫ রান করেন এই ওপেনার। ব্যাটিং করেন ১০০ স্ট্রাইক-রেটে। অবশ্য তানজীদ ফিফটি না পেলেও চারে নামা মিরাজ তুলে নিয়েছেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি। আগের ম্যাচে তিনে নেমে হাঁকিয়েছিলেন ফিফটি। মিরাজ ৮৯ বলে ৭৪ রান করে আউট হন। ইনিংসে চারের মার ছিল ১০টি।
৩০ ওভারের পর গৌহাটিতে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টি থামলে বাংলাদেশ সময় ৮টায় খেলা শুরু হয়। ততক্ষণে ওভার কমে যায় ১৩টি। ৩৭ ওভারে বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ১৮৮ রান করে। বৃষ্টির বাধার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৩ রান। বৃষ্টির পর বাংলাদেশ ৭ ওভারে ৩৫ রান করতে হারায় ৪ উইকেট!
মিরাজ-হৃদয় অপরাজিত থেকে শুরু করেছিলেন। বৃষ্টির পর কোন রানই করতে পারেননি হৃদয়। ১৩ বলে ৫ রান করে ফেরেন সাজঘরে। হৃদয়ের পর মিরাজও ফিরে যান। তিনি যোগ করেন ১৪ রান। মিরাজের পরের বলেই ক্রিজে এসে ফেরেন নাসুম আহমেদ (০)। আরেক অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসান বোল্ড হন ফুলটস বলে।
তানজীদ-মিরাজরা রান পেলেও দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত রানের দেখা পাননি। টপলির অফের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন ডিপ থার্ডে অ্যাটিকসনের হাতে। তার ব্যাট থেকে আসে ১১ বলে ২ রান।
আগের ম্যাচে ফিফটি করে রানের ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া লিটন দাস ফেরেন ৬ বলে ৫ রান করে। টপলির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। তবে তার আউট নিয়ে আছে সংশয়। লেগ সাইডে করা টপলির এক্সট্রা বাউন্ড লিটনের গ্লাভসে লেগে যায় বাটলারের হাতে, তবে সেই হাতে ব্যাট ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী আউট হওয়ার কথা না। লিটনও অবশ্য আউট নিয়ে কোনো সন্দেহ না প্রকাশ করে হাঁটা ধরেন ড্রেসিংরুমের পথে।
লিটনের মতো রান পাননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-মুশফিকুর রহিম। মুশফিক ৮ রান করে আদিল রশিদের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজ ঘরে। রশিদের শিকার হন মাহমুদউল্লাহও। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ২১ বলে ১৮ রান কর এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ইংলিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন টপলি। ২ উইকেট করে নেন উইলি-রশিদ।
টস জেতার পর ব্যাটিং নিয়ে শান্ত বলেছিলেন এই ম্যাচে তারা আগে ব্যাটিংটা ঝালিয়ে নিতে চান। কারণ আগের ম্যাচে প্রথমে বোলিং করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টি তা ঠিক-ঠাক হতে দিলো কই। তবুও যে ওপেনিং ঘিরে সবচেয়ে বড় অস্বস্তি ছিল, তানজীদের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং, সঙ্গে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত মিরাজে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে ম্যানেজম্যান্ট।
ঢাকা/রিয়াদ