জাতীয় খেলা কাবাডিতে বাংলাদেশের বেহাল দশা
ক্রীড়া প্রতিবেদক, চীন থেকে || রাইজিংবিডি.কম
বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি। গ্রামবাংলার জনপ্রিয় খেলাও বটে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাবাডির এখন বেহাল দশা। যেসব দেশ বাংলাদেশের কাছ থেকে কাবাডি খেলা শিখেছে এখন তাদের সঙ্গেই কুপোকাত হতে হচ্ছে।
এই যেমন নেপালকে কাবাডি শেখানো বাংলাদেশ এখন তাদের সঙ্গেই পারে না। ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে (এসএ গেমস) নারীরা নেপালের কাছে ৩৬-২৫ পয়েন্টে হেরেছিল। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে অল্পের জন্য জিতে (১৬-১৫) চতুর্থ হয়ে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল বাংলাদেশ।
২০২৩ সালে এসে এশিয়ান গেমসের মঞ্চে সেই নেপালের কাছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩৭-২৪ পয়েন্টের ব্যবধানে হার মানে বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল। অথচ এই গেমসকে সামনে রেখে কোটি টাকারও বেশি খরচ করে ভারতে ৪৫ দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল। পরবর্তী ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে ৫৪-১৬ পয়েন্টের ব্যবধানে উড়ে যায় বাংলাদেশের নারীরা।
২০১০ এর পর নারী কাবাডি দল সবশেষ ২০১৪ সালে এশিয়ান গেমসে পদক জিতেছিল। সেবার তৃতীয় হয়ে ব্রোঞ্জ পেয়েছিল। এরপর থেকে কেবল ব্যর্থতার মিছিল। ২০১৮ সালে ৯ দলের মধ্যে সপ্তম হয়েছিল বাংলাদেশ।
এই তো মেয়েদের ফিরিস্তি। ছেলেদের অবস্থাও তথৈবচ। এবারের এশিয়ান গেমসে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৫২-১৭ পয়েন্টের ব্যবধানে হারায় জাপানকে। এরপর ভারতের কাছে হেরে যায় ৫৫-১৮ ব্যবধানে। তৃতীয় ম্যাচে তুহিন তরফদাররা চাইনিজ তাইপের কাছে ৩১-১৮ পয়েন্টের ব্যবধানে হেরে বিদায় নেয়। অবশ্য শেষ ম্যাচে তারা সান্ত্বনার জয় পায় থাইল্যান্ডের বিপক্ষে।
২০০৬ সালের পর থেকে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ পুরুষ কাবাডি দলের আর কোনো পদক নেই। সেবার এশিয়ান গেমসে ইরানের কাছে হেরে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিল বাংলাদেশ।
এরপর ২০১০ সালে সাত দলের মধ্যে পঞ্চম হয় বাংলাদেশ। আর ২০১৪ সালে আট দলের মধ্যে সপ্তম হয়। ২০১৮ এশিয়ান গেমসে এগারো দলের মধ্যে পঞ্চম হয়েছিল বাংলাদেশ দল।
এবার পদক জয়ের মিশন নিয়ে এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে চীনের হ্যাংজু শহরে এসেছিল বাংলাদেশ নারী ও পুরুষ কাবাডি দল। নারী দল নেপাল ও ইরানের কাছে ধরাশায়ী হয়ে শূন্য হাতে বিদায় নেয়। আর পুরুষ দল জাপান ও থাইল্যান্ডকে হারালেও শূন্য হাতেই বিদায় নেয়।
নেপাল, চাইনিজ তাইপে, থাইল্যান্ড- বাংলাদেশের কাছ থেকে কাবাডি খেলা শিখে এখন বাংলাদেশকেই বলে কয়ে হারিয়ে দিচ্ছে। অন্যান্যরা যখন কাবাডিতে উন্নতি করছে, তখন আমরা চড়ে বসেছি উল্টোরথে। এই রথযাত্রা কবে থামবে?
হ্যাংজু/আমিনুল/বিজয়