ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের স্বপ্নে অনুপ্রেরণা নেদারল্যান্ডস

ক্রীড়া ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২৪ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ০৯:৫৪, ২৪ অক্টোবর ২০২৩
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের স্বপ্নে অনুপ্রেরণা নেদারল্যান্ডস

বিশ্বকাপের চলমান আসরে দুর্দান্ত গতিতে ছুটছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তাদেরকে হারিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আইসিসির সহযোগী দেশ নেদারল্যান্ডস। এটা যেকোনো দলের জন্যেই সাহস কিংবা অনুপ্রেরণা। কেননা এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা যে ধরনের ব্যাটিং করছে, আজকের ম্যাচের ভেন্যু ওয়াংখেড়েতে দুই দিন আগে যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাতে নেদারল্যান্ডসকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নেয়াই যায়। বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও ভরসা খুঁজলেন নেদারল্যান্ডসে।

দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিব বলেন, ‘স্পিনাররা প্রভাব ফেলতে পারতো যদি এই মাঠটা না হতো। এই মাঠের কারণেই হয়তো স্পিনাররা অতো বেশি ইফেক্ট নাও ফেলতে পারে। এখানে মাঠ ছোট, হাইস্কোরিং ম্যাচ হয়। আমরা সেভাবে প্ল্যান করছি। নেদারল্যান্ডস তাদের অল্প রানে আটকে ফেলেছে। সেখান থেকে অনেক কিছু নেওয়ার চেষ্টা করবো। শেষ ১-১.৫ বছরের পারফরম্যান্স নিয়ে প্ল্যান করা হবে। প্ল্যান তো থাকেই কিন্তু সফল হয় না। আশা করছি কালকে আমাদের ভালো দিন যাবে এবং প্ল্যান সফল হবে।’

আসরে শুরুটা দুর্দান্ত হলেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর খেই হারিয়ে ফেলে সাকিবের দল। তবে সেসব ঝেড়ে নতুন শুরু করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাকিবের চাওয়া একটা মোমেন্টাম, ‘আমাদের অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ ম্যাচের মধ্যে ৩ ম্যাচ জিতেছে। ওরা অনেক ভালো অবস্থায় আছে। এর মানে এটাই না যে সব শেষ। ৫ ম্যাচ বাকি আছে। এখানে জিততে পারলে ভালো মোমেন্টাম আসবে।’

পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের অবস্থান সাত নম্বরে। ৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১ ম্যাচ জিতেও পয়েন্ট টেবিলে এই অবস্থানের পেছনে বাকি দলগুলোর প্রভাবটা সাকিবও স্বীকার করলেন। সেই সঙ্গে এও জানিয়ে রাখলেন যে, এবার নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যেতে চান, ‘পয়েন্ট টেবিল দেখলে মনে হবে না আমরা খুব বেশি বাজে অবস্থায় আছি। সত্যি কথা (হাসি)। অন্যান্য দল আমাদের সাহায্য করছে। এখন আমাদের দায়িত্ব আমাদের নিজেদের সাহায্য করা।’

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আইপিএল খেলার সুবাদে এই মাঠ সাকিবের বেশ ভালো পরিচিত। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে সাকিব বলেন, ‘আইপিএল খেলার কারণে আমার কিছুটা জানাশোনা আছে এসব ব্যাপারে। কিন্তু এখানে এটি খুব বেশি প্রাসঙ্গিক বলে আমার মনে হচ্ছে না। খেলায় এটা খুব বেশি প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছি না। আগের ম্যাচ আমরা সবাই দেখেছি। পরিকল্পনা এবং আইডিয়া সবকিছু করা হচ্ছে সবাইকে নিয়েই।’

এই ম্যাচে বাংলাদেশ পাচ্ছে না দলের মূল পেসার তাসকিন আহমেদকে। কাঁধের ব্যথা থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় থাকায় তাসকিনকে নিয়ে ঝুঁকি নিচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। অপরদিকে অসুস্থতার কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের একটু আগে ছিটকে পড়েন টেম্বা বাভুমা। বাংলাদেশের বিপক্ষেও দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়মিত অধিনায়কের খেলা নিশ্চিত নয়।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর আরেকটি পথ হলো আগে ব্যাটিং করা। কেননা পরিসংখ্যান বলছে, রান তাড়া করতে নেমে সবশেষ ১৫ ম্যাচের ১০টিতেই হেরেছে প্রোটিয়ারা। চলতি বিশ্বকাপে সেটা দেখা গেছে। আসরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে যারা প্রতিপক্ষের উপর স্রেফ ঝড় বইয়ে দিয়েছে, তারাই কিনা রান তাড়ায় নেমে পেরোতে পারেনি নেদারল্যান্ডসের ২৪৬! সাকিবও তা জানেন এবং সংবাদ সম্মেলনে মজা করেই বললেন, ‘দোয়া করেন যেন টসটা জিততে পারি।’

বাংলাদেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি সাকিবের বহুদিনের চেনাজানা। সে দিক থেকে বলা যায়, চার ম্যাচের তিনটিতেই হেরে তার চাপে থাকার কথা। কিন্তু সেই কথা উড়িয়ে দিলেন আসরে প্রথমবার সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ দলপতি, ‘এটা এক্সাইটিং। আমার মনে হয় আমার জন্য এটা অনেক এক্সাইটিং। পঞ্চম বিশ্বকাপে এসেও আমি সমান পরিমাণ উৎসাহ পাচ্ছি বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য, পারফর্ম করার জন্য। এখনও পর্যন্ত আমি উপভোগ করে যাচ্ছি। আশা করছি বিশ্বকাপটাও ভালো ভাবে শেষ করতে পারব।’

সাকিব আশা দেখতে পারেন আরেকদিক থেকেও। কেননা বিশ্বমঞ্চে মুখোমুখি লড়াইয়ে যে দক্ষিণ আফ্রিকার সমানে সমান বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত মোট চারবার বিশ্বকাপে একে অন্যকে মোকাবেলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ। তাতে দুই দলই সমান ২টি করে জয় পেয়েছে। বাংলাদেশ জিতেছিল ২০০৭ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে। বিপরীতে ২০০৩ ও ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছিল প্রোটিয়ারা।

বাংলাদেশের জন্য সুখস্মৃতি হিসেবে ফিরে আসতে পারে দুই দলের মুখোমুখি হওয়া সবশেষ ওয়ানডে সিরিজও। যে সিরিজে গেল বছরের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই তাদেরককে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল লাল-সবুজের দল। এবার বিশ্বমঞ্চেও এটা পুনরাবৃত্তির পালা। তার উপর অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকছে নেদারল্যান্ডসও। এবার শুধু একটা মোমেন্টাম পাবার পালা।

ঢাকা/বিজয়

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়