ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

সমস্যাই ধরতে পারছেন না হাথুরুসিংহে!

ক্রীড়া প্রতিবেদক, দিল্লি থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ৫ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ২১:৩৪, ৫ নভেম্বর ২০২৩
সমস্যাই ধরতে পারছেন না হাথুরুসিংহে!

সহজেই আত্মসমর্পণ করলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে! শেষ ছয় মাসে যে ব্যাটসম্যান দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ছিলেন, তাকেই বিশ্বকাপে হারিয়ে ফেললো বাংলাদেশ! তাকে ফিরে পাবার উপায় কি? কোচ বললেন, ‘সমস্যাই তো ধরতে পারছি না।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখন যেভাবে চলছে তাতে বলতে দ্বিধা নেই, হাথুরুসিংহের নাগালের বাইরেই সবকিছু। কোচ শিষ্যদের ‘রোগই’ ধরতে পারছেন না। তাই রোগ সারানোর উপায় জানা নেই।

প্রশ্ন করা হয়েছিল, নাজমুল হোসেন শান্তর কী হলো? চলতি বছর দারুণ ছন্দে থাকা শান্ত বিশ্বকাপে যেন রান করতেই ভুলে গেছেন। ১৪ ইনিংসে দুই সেঞ্চুরির সঙ্গে পাঁচটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ৪৯.৮৫ গড়ে তিনি করেন ৬৯৮ রান। এই ছন্দ ধরে রাখেন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেন ৫৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। এরপর যাচ্ছেতাই অবস্থা। দুটি গোল্ডেন ডাকের পাশাপাশি চারটিতে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছুতে পারেননি। ব্যাটিংয়ে তার ইনিংস গুলোর চিত্র এরকম, ৫৯*, ০, ৭, ৮, ০, ৯ ও ৪।

শান্ত বর্তমানে যে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তা ক্যারিয়ারের শুরুতেও ছিল। দ্রুত আউট হওয়া, ধারাবাহিকতার অভাব, প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দিয়ে আসা, পরিস্থিতি অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারা সবই ছিল তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের ইনিংসে। ষোলোতম ইনিংসে প্রথম ফিফটি পেয়েছিলেন। মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিলেন ৫৮ রান। ততদিনে নানা উত্থান-পতন দেখে ফেলেছেন তিনি। দল থেকে বাদ পড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া সমালোচনাসহ আরও কতো কিছু।

শিষ্যকে ফিরে পেতে হাথুরুসিংহে কী করছেন জানতে চাওয়া হয়েছিল। উত্তরে যা বলেছেন, ‘হ্যাঁ। ওর (শান্ত) সঙ্গে সার্বক্ষণিক কথা হচ্ছে। আমরা (সমস্যার) কিছুই পাইনি। টেকনিক্যাল কিছু নেই এখানে। শুধুই দুর্ভাগ্য। যে কোনো ব্যাটসম্যান প্রথম ৫-১০ বলের মধ্যে আউট হতে পারে। বিশেষ করে টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা কারণ, তখন বলের মুভমেন্ট থাকে এবং আপনি সবে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন। আমার মনে হয় না, (শান্তর) টেকনিক নিয়ে কিছু করার আছে। দুর্ভাগ্যবশত এটিই ক্রিকেট, এটিই খেলার সৌন্দর্য।’

শুধু শান্তই নন তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ঝলক দেখাতে পারছেন না। আড়ালে রয়েছেন সাকিব আল হাসানও। প্রত্যেকের আউটের ধরণ প্রায় এক। উইকেট বিলিয়ে আসছেন। তাদের নিয়ে হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘তারা (ব্যাটসম্যানরা) একইভাবে আউট হয়েছে। এটিই তাদের ভুল হয়েছে। এমন না যে চেষ্টার কমতি বা অন্য কিছু। আউট হওয়ার ধরনগুলো একই। বিশেষ করে শান্তর ক্ষেত্রে... যদি খেলাটা খেলে থাকেন, আপনি জানেন যে কোনো ভালো ব্যাটসম্যান প্রথম ৫-১০ বলের মধ্যে আউট হয়ে যেতে পারে। শান্ত দুইবার প্রথম বলে আউট হয়েছে। এটি খুবই দূর্ভাগ্যজনক। লেগ সাইডের বা হাফ ভলিতে সে আউট হয়েছে, অন্য কোন দিন সে সহজেই বলগুলো বাউন্ডারিতে পাঠাতো।’

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে খুব একটা টানাপোড়ন থাকে না। অথচ বিশ্বকাপ মঞ্চে এলেই তারা পথ হারিয়ে ফেলে। কোথায় সমস্যা কিংবা ঘাটতির জায়গা কোথায়? কোচ জানালেন, প্রত্যাশা পূরণের চাপ নিতে পারছে না ক্রিকেটাররা।

‘সত্যি বললে, আমি জানি না। এক্ষেত্রে একটা জিনিসই মনে হতে পারে, সবার উচ্চাশা। কারণ, ক্রিকেটাররা, আমরা সবাই বড় মঞ্চে পারফর্ম করতে চাই। এটি এক রকমের প্রত্যাশা। এটি চাপ হতে পারে। একটু বেশি চেষ্টার করার বিষয় থাকতে পারে।’

ব্যর্থতার জন্য শিষ্যদের কাঠগড়ায় দাঁড় না করিয়ে ভাগ্যকেও দুষলেন হাথুরুসিংহে। সামনে দুয়েকজন দলের দায়িত্ব নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা তার, ‘জিনিসগুলো নির্দিষ্টভাবে আমাদের পক্ষে আসেনি। আমি আগেও যেমনটা বলেছি, একজন বা দুজনকে উঠে দাঁড়াতে হবে এবং খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরের দুই ম্যাচে আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে।’

দিল্লি/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়