ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

বিশ্বমানের হতে হাবিবুলের দুই বছরের ‘চ্যালেঞ্জ’

ক্রীড়া প্রতিবেদক, পুনে থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৩, ৮ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ২০:৩১, ৮ নভেম্বর ২০২৩
বিশ্বমানের হতে হাবিবুলের দুই বছরের ‘চ্যালেঞ্জ’

হাবিবুল বাশার সুমন

ব্যর্থতা ঝেড়ে সামনে তাকানো ছাড়া আর যে কোনো পথ খোলা নেই হাবিবুল বাশারের কণ্ঠে বোঝা যাচ্ছিল। এই বিশ্বকাপে যা হারানোর তা হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। সামনে কী হবে, কীভাবে নিজেদের বিশ্বমানের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে সেদিকেই নজর দেওয়ার কথা বললেন তিনি।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক ২০০৩ বিশ্বকাপের ভরাডুবিও দেখেছেন। কোনো ম্যাচ জিততে না পারা সেই বিশ্বকাপের হতাশা ছাড়িয়ে গেছে এবারের আসরে। বিশ বছর আগে নিজেদের খেলা বিশ্বকাপ দলের পারফরম্যান্সে কোনো ধারাবাহিকতা ছিল না। ছিল না ম্যাচের ফল পরিবর্তন করার গেম চেঞ্জার। কিন্তু ২০২৩ বিশ্বকাপে শুধু একজন নয়, একাধিক গেম চেঞ্জার রয়েছে। সঙ্গে সামগ্রিক বাস্তবতা, বিশ্বকাপের আগে চার বছরের পারফরম্যান্স ও আইসিসি সুপার লিগে পয়েন্ট তালিকার তিনে থাকা…সবকিছুই বাংলাদেশের পক্ষে ছিল। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত ফর্মও ছিল দারুণ। কিন্তু বিশ্বকাপ মঞ্চে এসেই তালগোল পাকানো পারফরম্যান্স।

হাবিবুল বাশার সুমনও পুনের আইটিডব্লিউ মেরিয়ট হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে একই কথা বলছিলেন, ‘আমরা সবাই দেখেছি বিশ্বকাপ কেমন কেটেছে আমাদের। নিশ্চিতভাবেই হতাশার অবশ্যই। আমরা অনেক আশা করে এসেছিলাম। প্রত্যাশাও অনেক বেশি ছিল। সেটা কোনোভাবেই আমরা পূরণ করতে পারিনি। এই বিশ্বকাপের আগে আমাদের দলটা যেরকম ফর্মে ছিল, সঙ্গে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে আমরা যেরকম ধারাবাহিক। খুব ভালো খেলছিলাম। সেজন্য প্রত্যাশা সবার থেকে একটু বেশি ছিল। আমরা প্রত্যাশা মেটাতে পারিনি। জানি আরও ভালো হওয়া উচিত ছিল। এটা হয়ে থাকে। অনেক সময় আপনি ফর্মে এসে টুর্নামেন্টে ফর্ম হারিয়ে ফেলতে পারেন। দূর্ভাগ্যবশত আমাদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে আসলে।’

বিশ্বকাপ জিততে কিংবা বড় দল হয়ে উঠতে একটা ধাক্কা পাওয়া লাগে। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে বিদায় হওয়ার পর ইংল্যান্ড সেই ধাক্কাটা খেয়েছিল। পরের চার বছরে তারা ওয়ানডে ক্রিকেটের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছিলেন। ঘরের মাঠে তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সেমিফাইনালের আশা নিয়ে আসলেও পূরণ করতে পারেনি নিজেদের লক্ষ্য। সঙ্গে মাঠের হতশ্রী পারফরম্যান্সে ফুটে উঠেছে বড় দলগুলোর সঙ্গে নিজেদের ব্যবধান। এই ধাক্কায় বাংলাদেশ কি পাল্টে যেতে পারে?

হাবিবুল বাশারের বিশ্বাস, আগামী বিশ্বকাপের আগে এই ব্যবধানও ঘুচে যাবে। বাংলাদেশ হয়ে উঠবে বড় দল। তার ভাষ্য, ‘আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট তো নিশ্চিতভাবে অনেক উন্নতি করেছে। প্রথম শ্রেণির উইকেট খুব ভালো থাকে। প্রিমিয়ার লিগের উইকেটও ভালো থাকে। সেটার ফল হয়তো আমরা এখন দেখতে পারছি না। আগামী বিশ্বকাপ চার বছর পর, এই সময়ে দলটা প্রস্তুত হয়ে যাবে। এক -দুই বছরের মধ্যেই প্রস্তুত হয়ে যাবে।’

নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় নয়, বাংলাদেশের সব বিভাগে কাজ করার কথা বললেন হাবিবুল। বিশেষ করে আধুনিক ক্রিকেটে ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোতে ম্যাচের ছন্দ পরিবর্তন হয় বলে সেই জায়গাগুলোতে জোর দেওয়ার কথা বললেন জাতীয় দলের নির্বাচক।

‘সত্যি কথা বলতে, আমাদের সব বিভাগে কাজ করতে হবে। টপ অর্ডার ব্যাটিং, ফিনিশিং, আমাদের বোলিং। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে আমাদের বোলারদের উইকেট নেওয়ার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এখনকার যে খেলা হয়, আপনি যদি মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট না নিতে পারে তাহলে বড় রান আটকাতে পারবেন না। আমরা এই বিশ্বকাপে সেটাতে বেশ ভুগেছি। প্লাস ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডার যদি রান করতে পারে তাহলে কঠিন হয়ে যায়। নির্দিষ্ট দিনে যদি উইকেট ভালো থাকে তাহলে আপনাকে তিন’শ রান করার মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে। আমাদের সব বিভাগ নিয়েই কাজ করতে হবে। শুধু একটা বিভাগ নয়। ব্যাটিং, বোলিং তো আছেই সঙ্গে নতুন বলের পাশাপাশি মিডল ওভারে উইকেট নেওয়ার মানসিকতা বাড়াতে হবে। তাহলে ভালো হবে।’

পুনে/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়