ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৪ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২০ ১৪৩১

মানসিক শক্তি বাড়াতে জোর

ক্রীড়া প্রতিবেদক, পুনে থেকে || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১১, ৮ নভেম্বর ২০২৩  
মানসিক শক্তি বাড়াতে জোর

ব্যর্থতার খতিয়ান খুঁজতে গিয়ে এই সমস্যা, ওই সমস্যা বের হয়। সেগুলো নিয়ে কাজও করা হয়। কিন্তু সেসবের বাইরেও যে সমস্যার ভুবন কতটা বিস্তৃত সেটা নিয়ে কথা হয় না।

এশিয়া কাপের ঘটনা। পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফের গতির বিষয়ে মোটামুটি সবারই ধারণা আছে। কিন্তু তার বল খেলতে হবে এমন ভাবনা মাথায় নিতে গিয়ে মাঠে নামার আগে দুয়েকজনের পা কাঁপাকাঁপি অবস্থা। অথচ হারিস রউফের চেয়েও বড়, ভালো, গতিময় বোলারদের বিরুদ্ধ কন্ডিশনে খেলে এসেছে। কিন্তু ওই জুঁজুঁতেই আটকে মাঠে নামার আগেই পরিস্থিতি ঘোলাটে! যার ফলাফল ২২ গজে অসহায় আত্মসমর্পণ। শেষ চার বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ ভালো ও ধারাবাহিক থাকায় বিশ্বাস জন্মেছিল, ২০২৩ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলতে পারবে। বিশ্বাসের বীজ বপণ করেছিলেন ক্রিকেটাররাই। কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসেই সব ওলটপালট। কারও পারফরম্যান্সের ঠিক নেই। ধারাবাহিকতা নেই। যে ভুলগুলোও আগে করছিলেন না সেগুলো ঘুরে ফিরে বারবার হচ্ছিল। সমস্যা কোথায় হচ্ছে ধরতে পারছিলেন না স্বয়ং কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহেও। তাতে যা হবার তা-ই হয়েছে। নিজেদের লক্ষ্য থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে থাকে বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে বিব্রতকর পরাজয়গুলোকে সঙ্গী করতে থাকে। একটু দেরিতে হলেও দল বুঝতে পেরেছে, স্কিলের ঘাটতি না থাকলেও মানসিকভাবে দৃঢ় না থাকায় ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে ছিল দল।

বড় মঞ্চে মাঠে নামার আগে কিংবা মাঠে নেমে, মানসিকভাবে যেভাবে চাঙ্গা থাকার দরকার ছিল সেটা পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাট-বলের লড়াই থেকে মনোযোগ হারানো, সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ, নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছা সবকিছু মিলিয়ে বাড়তি চাপে ডুবেছে লাল-সবুজের স্বপ্নসারথিরা।

দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার পুনেতে সেই কথাই বললেন, ‘বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে আসার আগে আমাদেরকে মানসিক শক্তি নিয়ে বেশি কাজ করা উচিত বলে মনে করছি। স্কিলের দিক থেকে আমরা আগে যা ছিলাম এখন তাই আছি। বিশ্বকাপে বাকি দলগুলো অনেক প্রস্তুতি নিয়ে আসে। আমরাও অনেক প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলাম। কিন্ত এখানে শক্ত মানসিকতার একটা ব্যাপার থাকে। এরপর এসকল টুর্নামেন্টে আসার আগে আমাদের মেন্টাল স্ট্রেন্থ নিয়ে কাজ করতে হবে।’

‘আমার মনে হয় যে স্কিলের দিক থেকে ওরা যা ছিল তাই আছে। এই খেলোয়াড়রাই কিন্তু ভালো খেলছিল। এই বোলার, এই ব্যাটসম্যানরাই ভালো খেলেছে। বিশ্বকাপে এসে আমরা ওই ফর্মটা ধরে রাখতে পারিনি। আমার মনে হয় স্কিলে কোনো সমস্যা নেই। মানসিকভাবে কিভাবে শক্তিশালী থাকা যায় এটা আমাদের শিখতে হবে।’ – যোগ করেন তিনি।

দলে নিয়মিত মনোবিদ রাখার পরামর্শও দিলেন হাবিবুল, ‘মনোবিদ আমাদের সঙ্গে আগেও ছিল। এটা আবার শুরু করা উচিত। বিশেষ করে আমাদের যারা তরুণ খেলোয়াড় তাদের নিয়েই বেশি কাজ করা উচিত। রাউন্ড দ্য ইয়ার যদি সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে ভালো।’

পুনেতে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দুই দলের এই লড়াইটা ভিন্ন। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা অস্ট্রেলিয়া নকআউট পর্বের আগে নিজেদেরকে আরেকবার ঝালাই করে নিতে চাইবে। বাংলাদেশ ২ পয়েন্ট নিয়ে নিশ্চিত করতে চাইবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিট। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে পুনেতে অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে চায় বাংলাদেশ।

কাজটা কঠিন। তবে হাবিবুলের মতে অসম্ভব নয়, ‘আমরা যতগুলো ম্যাচ খেলেছি সবগুলো ম্যাচেই প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী ছিল। বিশ্বকাপে দুর্বল প্রতিপক্ষ বলতে কেউ নেই। শুধু অস্ট্রেলিয়া নয়, সব দলেরই কোনো না কোনো গেম চেঞ্জার ছিল। ওভাবে চিন্তা করলে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কোনো ম্যাচ হারার কথা না। কিন্তু শুরুতে তারাও কিন্তু দুই ম্যাচ হেরেছে। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে নিশ্চিতভাবেই অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি। অস্ট্রেলিয়া ভালো ফর্মে আছে। তাদের কিছু গেম চেঞ্জার আছে, ডেভিড ওয়ার্নার, হেড, মার্শ; সবাই ভালো খেলোয়াড়। কিন্তু কোনো দলই আনবিটেবল নয়। নিশ্চিতভাবে আমাদের চেষ্টা থাকবে সেরা খেলাটা খেলার।’
 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়