দ. আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে অষ্টমবার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২১২/১০ (৪৯.৪ ওভারে)
অস্ট্রেলিয়া: ২১৫/৭ (৪৭.২ ওভারে)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: ত্রাভিস হেড (২ উইকেট ও ৬২ রান)।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথমবার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ভেঙে রেকর্ড অষ্টমবারের মতো ফাইনালে নাম লিখিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আজ বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেনে প্রোটিয়ারা আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হয় ২১২ রানে। জবাবে ৪৭.২ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে অজিরা। জশ ইংলিস আউট হওয়ার পর মিচেল স্টার্কের সঙ্গে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ২২ রানের জুটি অজিদের পৌঁছে দেয় জয়ের বন্দরে। কামিন্স ১৪ ও স্টার্ক ১৬ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
লড়াই জমিয়ে তুললো দক্ষিণ আফ্রিকা:
১৯৩ রানের মাথায় স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জশ ইংলিসকে ফিরিয়ে সপ্তম উইকেট তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাকে ফেরান কোয়েটজে। তাতে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে প্রোটিয়ারা। কিন্তু মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স ম্যাচটি ছিনিয়ে নিচ্ছেন প্রোটিয়াদের কাছ থেকে। জিততে মাত্র ১০ রান প্রয়োজন ৪২ বলে।
স্মিথকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফিরলো দক্ষিণ আফ্রিকা:
১৩৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর স্টিভেন স্মিথ ও জশ ইংলিস টেনে নিতে থাকেন দলকে। ষষ্ঠ উইকেটে তারা দুজন দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৩৭ রান। তাতে অস্ট্রেলিয়া ১৭৪ রান পর্যন্ত যায়। সেখানে গিয়ে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অজিরা। জেরাল্ড কোয়েটজের বল খেলতে গেলে বেশ উপরে উঠে যায়। সেটি লুফে নেন কুইন্টন ডি কক। ২ চারে ৩০ রান করে যান তিনি। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ইংলিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। জিততে এখনো প্রয়োজন ৮৮ বলে ৩২ রান।
স্মিথ-ইংলিসে এগোচ্ছে অস্ট্রেলিয়া:
স্পিন দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দারুণভাবে চেপে ধরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৩৭ রানেই তারা তুলে নিয়েছিল অজিদের ৫ উইকেট। তবে সেখান থেকে দেখে-শুনে ব্যাটিং করে এগোচ্ছেন স্টিভেন স্মিথ ও জশ ইংলিস। ৪৪ বলে তারা দুজন ২৮ রান যোগ করেছেন দলীয় সংগ্রহে। তাতে ৩১ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান দাঁড়িয়েছে ১৬৫তে। স্মিথ ২৪ ও ইংলিস ১৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। জিততে এখনও প্রয়োজন ৪৮ রান।
অস্ট্রেলিয়ার লাগাম টেনে ধরলো দক্ষিণ আফ্রিকা:
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করে অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার ও ত্রাভিস হেডের ব্যাটে ভর করে ৬ ওভারেই তুলে ফেলে ৬০ রান। অবশ্য এরপর তাদের ছন্দপতন ঘটে। ৬০ রানের সময় ওয়ার্নার ২৯ রানে, ৬১ রানের মাথায় মিচেল মার্শ শূন্যরানে ও দলীয় ১০৬ রানে ত্রাভিস হেড ফেরেন ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬২ রান করে। এরপর ১৩৩ রানের মাথায় মার্নস ল্যাবুশেন ফেরেন ১৮ রান করে। সেখান থেকে ১৩৭ রানে যেতে হারায় আরও এক উইকেট। ফিরে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অর্থাৎ ১৩৭ রান তুলতেই অস্ট্রেলিয়া হারিয়ে বসেছে ৫ উইকেট। জিততে এখনো প্রয়োজন ৭৬ রান।
স্টিভেন স্মিথের সাথে যোগ দিয়েছেন জশ ইংলিস। তারা দুজনের ব্যাটে ভর করে জিততে চাইবে অজিরা।
উড়ন্ত সূচনার পর ফিরলেন ওয়ার্নার:
দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেওয়া ২১৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে অস্ট্রেলিয়া। ৬ ওভারেই তুলে ফেলে ৬০ রান। কিন্তু পার্ট টাইম বোলার এইডেন মার্করাম এসে ভাঙেন এই জুটি। তার করা সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান ওয়ার্নার। ১৮ বলে ১টি চার ও ৪ ছক্কায় ২৯ রান করে যান তিনি।
২১৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে অস্ট্রেলিয়া:
দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেওয়া ২১৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে এসেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও ত্রাভিস হেড।
সেমিফাইনালে ছুটলো না দক্ষিণ আফ্রিকার রান ফোয়ারা:
বিশ্বকাপের এবারের আসরের শুরুটা কি দুর্দান্তই না করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রায় প্রত্যেক ম্যাচেই ছুটছিল তাদের রান ফোয়ারা। লিগপর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪২৮, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯৯, বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৮২, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫৭, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩১১ রান করে দাপুটে জয় পায়। নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল।
কিন্তু সেমিফাইনালে ছুটলো না তাদের রান ফোয়ারা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে চুপসে গেল চোকার্স খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হয়েছে মাত্র ২১২ রানে। ফাইনালে যেতে অস্ট্রেলিয়াকে করতে হবে ২১৩ রান।
প্রোটিয়াদের ২১১ রানের মধ্যে ডেভিড মিলার একাই করেন ১০১ রান। ১১৬ বল খেলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় এই রান করেন তিনি। এছাড়া হেনরিক ক্লাসেন ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৪৭, জেরাল্ড কোয়েটজে ১৯, এইডেন মার্করাম ও কাগিসু রাবাদা ১০টি করে রান করেন।
বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৩৪ রান দিয়ে ৩টি এবং প্যাট কামিন্স ৯.৪ ওভারে ৫১ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট।
৮ ওভার বল করে ৩ মেডেনসহ মাত্র ১২ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন জশ হ্যাজলেউড। এছাড়া ত্রাভিস হেড ৫ ওভারে ২১ রান দিয়ে ত্রাভিস হেড নেন ২টি উইকেট।
এক প্রান্ত আগলে লড়ছেন মিলার:
২৪ রানের মাথায় চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে রাসি ফন ডের ডুসেন আউট হলে মাঠে নামেন ডেভিড মিলার। এরপর হেনরিক ক্লাসেনের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে তোলের ৯৫ রান। দলীয় ১১৯ রানের মাথায় দ্রুত ক্লাসেন ও মার্কো জানসেন ফেরার পর জুটি বাঁধেন জেরাল্ড কোয়েটজের সঙ্গে। অষ্টম উইকেটে তাকে নিয়ে ৭৬ বলে তোলেন ৫৩ রান। দলীয় ১৭২ রানের মাথায় ফেরেন কোয়েটজে। ১৯ রান করে যান তিনি।
সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকলেও মিলার আছেন অবিচল। ৭০ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করেন। ৪৪ ওভার শেষে ১০৫ বল খেলে ৬টি চার ও ৪ ছক্কায় তিনি অপরাজিত আছেন ৮১ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৭৪ রান।
জোড়া উইকেট তুলে হেড ভাঙলেন প্রতিরোধ:
পঞ্চম উইকেটে দারুণ প্রতিরোধ গড়েছিলেন ডেভিড মিলার ও হেনরিক ক্লাসেন। ১১৩ বল খেলে তারা দুজন তুলেছিলেন ৯৫ রান। কিন্তু ৩১তম ওভারে এসে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন ত্রাভিস হেড। তার চতুর্থ বলে বোল্ড হয়ে যান ক্লাসেন। ৪৮ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ রান করে যান। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান মার্কো জানসেনকে এলবিডব্লিউ করে সাজঘরে ফেরান। গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন তিনি।
৩৩ ওভার শেষে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১২৭।
মিলার-ক্লাসেন গড়লেন প্রতিরোধ:
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২৪ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে জুটি বাঁধেন ডেভিড মিলার ও হেনরিক ক্লাসেন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা দুজন প্রতিরোধ গড়েছেন। এই জুটি ইতোমধ্যে ৯৮ বলে ৭৭ রান সংগ্রহ করেছে। তাদের দুজনের ব্যাটে ভর করে প্রোটিয়ারা শতরান পেরিয়েছে। মিলার ৪১ ও ক্লাসেন ৩৬ রানে ব্যাট করছেন।
২৮ ওভার শেষে দ. আফ্রিকা: ১০০/৪
বৃষ্টির পরে আবার খেলা শুরু:
বৃষ্টি থামার পরে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সেমিফাইনাল ম্যাচটি আবার শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ৪০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে।
অস্ট্রেলিয়া-দ. আফ্রিকার সেমিফাইনালে বৃষ্টির বাগড়া:
এবারের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দক্ষিণ আফ্রিকা টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি। ১৪ ওভারে ৪৪ রান তুলতেই তারা হারিয়ে বসে ৪ উইকেট। এরপর অবশ্য বৃষ্টি এসে বাগড়া দেয়। বৃষ্টির কারণে খেলা আপাতত বন্ধ রয়েছে।
ডেভিড মিলার ১০ ও হেনরিক ক্লাসেন ১০ রানে অপরাজিত আছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলেউড।
অজিদের বোলিং তোপে প্রোটিয়াদের নাভিশ্বাস:
নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শুরুতেই অজিদের বোলিং তোপের মুখে পড়েছে টেম্বা বাভুনার দল। উইকেট হারানোর পাশাপাশি রান তুলতে গিয়ে হাঁসফাঁস করছে তারা।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান। প্যাভিলিয়নের ফিরে গেছেন দুই ওপেনার টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক। তাদের সঙ্গে একই পথ ধরেছেন অ্যাইডেন মার্করাম ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ফিরে যান অধিনায়ক বাভুমা। ইনিংসের প্রথম ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই মিচেল স্টার্কের বলে উইকেটের পেছনে জস ইংলিসকে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে আউট হন এ ওপেনার।
তার বিদায়ে কুইন্টন ডি কক ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ধৈর্য হারিয়ে জশ হ্যাজেলউডকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে প্যাট কামিন্সের তালুবন্দী হন চলতি আসরে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডি কক। আউটের আগে ১৪ বলে ৩ রান করেন তিনি।
ডি ককের বিদায়ে ক্রিজে আসেন অ্যাইডেন মার্করাম। তবে দুটি চার মেরেই বিদায় নিতে হলো তাকে। মার্করাম টিকলেন না। মিচেল স্টার্ককে সোজা ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন, বড়সড় আউটসাইড-এজে ক্যাচ গেছে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। ডেভিড ওয়ার্নারের এমন সুযোগ হাতছাড়ার করার কথা নয়।
মার্করামের বিদায়ের কিছুক্ষন পরই বিদায় নেন ডুসেনও। লেংথ বলে ড্রাইভের চেষ্টা করে হ্যাজলউডের শিকারে পরিণত হন ডুসেন। দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নেন স্টিভেন স্মিথ।২৪ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা! ম্যাচের প্রথম ১২ ওভারেই স্বপ্নের ফাইনাল দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে প্রোটিয়াদের জন্য।
ঢাকা/আমিনুল